ঢাকা,শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

ঈদগাঁওয়ের প্রতিবন্ধী আরিফের স্বপ্ন বড় অফিসার হবে

mail-google-comসেলিম উদ্দিন, ঈদগাঁও (কক্সবাজার) প্রতিনিধি :::

দুই হাতের একটি আঙ্গুলও বাইরে নেই। সর্বাঙ্গে কঠিন চর্মরোগ। পায়েরও একই অবস্থা। তাই পা চালানোর শক্তিও নেই। তবুও বাবা-মায়ের উৎসাহে নিজেকে শিক্ষিত করার সংগ্রাম চালাচ্ছে শিশু মো. আরিফুল ইসলাম (১২)। এবারের প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় কক্সবাজারের ঈদগাঁও আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে অংশ নিয়ে দুই হাতের কব্জি দিয়েই লিখছে শারিরীক প্রতিবন্ধী আরিফ। তার রোল-২০৯১। আরিফ সদর উপজেলার জালালাবাদ ইউনিয়নের দক্ষিণ লরাবাগ জমিরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। মা দিলদার বেগমের কোলে চড়েই পরীক্ষা কেন্দ্রে আসছে আরিফুল।

পিইসির কক্সবাজার সদর-৬ কেন্দ্র প্রধান মো. শাহ আলম বলেন, বৃহত্তর ঈদগাঁওয়ের দুটি ইবতেদায়ী মাদ্রাসাসহ ১৩টি প্রতিষ্ঠানের ৫৮৮ জন শিক্ষার্থী এই কেন্দ্রে পিইসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। এই কেন্দ্রে একমাত্র প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থী হিসেবে আরিফের জন্য সব ধরনের সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে।

আরিফ জানায়, আঙ্গুলবিহীন হাতে লিখতে প্রথম প্রথম কষ্ট হতো। এখন নিজের মতো করে লিখতে পারে। তবে অন্য শিক্ষার্থীদের মতো দ্রুত লেখা তার সম্ভব হয়ে উঠে না। এরপরও নিজেকে একজন বড় অফিসার হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার স্বপ্ন তার।

আরিফের মা দিলদার বেগম বলেন, আজ থেকে ১২ বছর আগে সুস্থ, সবল অন্য দশজন শিশুর মতোই স্বাভাবিক হাত-পা নিয়ে আরিফের জন্ম হয়। পাঁচ বছর তার জীবনধারা স্বাভাবিকই ছিল। কিন্তু হঠাৎ তার শরীরে চর্মরোগ দেখা দেয়। চিকিৎসা করানোর পরও ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে হাত-পায়ের চামড়া। একসময় সেটা হাত-পায়ের আঙ্গুল ঢেকে আরিফকে প্রতিবন্ধী করে ফেলে। বন্ধ হয়ে যায় তার স্বাভাবিক পথ চলা।

তিনি আরও জানান, পাড়ালিয়াদের পরামর্শে আরিফকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক অভয় দিয়ে বলেছিলেন, এটি বড় কোনো রোগ নয়। একটি অপারেশন করে বর্ধিত চামড়াগুলো নিয়ে ফেললে আরিফ আবারো স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে পারে। আনুমানিক খরচ পড়বে দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা। কিন্তু দজির্ কাজ করে সংসার চালানো দলিলুর রহমানের পক্ষে ছেলে আরিফের জন্য একসঙ্গে এতো টাকা খরচ করার মতো সামর্থ্য নেই। তাই আর আরিফের চিকিৎসা করানো হয়ে উঠেনি।

পাঠকের মতামত: