ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ৯ মে ২০২৪

চকরিয়াতে জিয়াউর রহমানের শাহাদাত বার্ষিকীর অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের হামলায় আহত ৪০

এইচ এম রুহুল কাদের, চকরিয়া ::: বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪২তম শাহাদত বার্ষিকীর অনুষ্ঠানে চকরিয়া উপজেলার বিভিন্ন স্থানে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালিয়েছে। হামলায় অন্তত ৪০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছে। হামলার পরপরই অন্যান্য ইউনিয়ন গুলোতে তড়িগড়ি করে কর্মসূচী শেষ করা হয়। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ও কাকারা ইউনিয়নে এ হামলা চালানো হয়।

ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জসিম উদ্দিন অভিযোগ করেন, ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন বিএনপি’র উদ্যোগে জিয়াফত অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সকাল ৭ টায় পবিত্র কোরআনখানি ও দোয়া মাহফিল শেষ হয়ে সাড়ে ১০টার দিকে লোকজন মেজবানি খাবারে বসে স্থানীয় হক স্কয়ার কমিনিউটি সেন্টারে। ওইসময় আওয়ামী লীগের ২০-৩০ জন নেতাকর্মী অতর্কিতভাবে খাবার টেবিলে বসা লোজনের উপর হামলা করে। তার আগে ফাঁকা গুলিবর্ষণ করে ভীতিকর পরিবেশ তৈরী করে। তারা লাঠিসোটা ও হকিস্টিক দিয়ে আঘাত করে নেতাকর্মীদের উপর। এতে অন্তত ৪০ নেতাকর্মী কমবেশি আহত হয়। আহতরা বেশিরভাগই স্থানীয় চকরিয়া সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে। গুরুতর জখম দু’জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে।

আহতরা হলেন স্থানীয় বিএনপি নেতা জসিম উদ্দিন দানু (৪৬), ইউনিয়ন যুবদল নেতা মাহমুদুল হাসান (২৮), শ্রমিকদল নেতা মোস্তাক আহমদ, যুবদল নেতা সাহাদাৎ হোছাইন সামীর (৩৮), যুবদল নেতা মোক্তার আহমদ (৩৮), সাহাবউদ্দিন (২৮), সাকিল (২৪), নুরহান উদ্দিন (২৫), জসিম উদ্দিন (২৭), আবুল হাসেম (৩০), জালাল উদ্দিন (২৬), জাকের হোছাইন (২৪), আবু ছালাম (২৬), বিএনপি নেতা মোক্তার আহমদ (৪৫), আবদুল কাদের (৪০), শ্রমিক নেতা নাজেম উদ্দিন (৩৮), ছাত্রদল নেতা আবু হায়দার বাবু (২৫) সহ ৪০ জন আহত হয়েছে। আরও অনেকর নাম পাওয়া যায়নি। দু’জনের অবস্থা আশঙ্কা জনক হওয়ায় তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

চকরিয়া উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব ফখরুউদ্দিন ফরায়েজী জানান, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৪২তম শাহাদত বার্ষিকী উপলক্ষে ইউনিয়ন গুলোতে বিভিন্ন কর্মসূচী হাতে নেওয়া হয়। এরমধ্যে দোয়া মাহফিল ও খাবারের আয়োজন করে স্থানীয় বিএনপি। ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ভেন্ডিবাজারস্থ হক স্কয়ার কমিউনিটি সেন্টার ও কাকারা ইউনিয়নে শাহওমরাবাদ এলাকায় বিএনপির উদ্যোগে দোয়া মাহফিল ও খাবারের আয়োজন করে। সকাল সাড়ে ১০টার লাঠিসোটা নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা হামলা করেছে। উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক নিজেই উপস্থিত থেকে হামলার নেতৃত্ব দিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, খাবার গুলো মাটিতে ফেলা দেয়া হয়েছে। চেয়ার টেবিলও ভাঙচুর করা হয়েছে। হামলায় ৩০ জন নেতাকর্মী গুরুতর আহত হয়েছে। নির্ধারিত কর্মসূচীতে পরিকল্পিতভাবে হামলা করে তারা চকরিয়ার শান্ত পরিবেশকে অশান্ত করার চেষ্ঠা করছেন। হামলায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনার দাবী জানাচ্ছি।

অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু মুছা বলেন, বিএনপির কর্মসূচীতে কোন ধরণের হামলা করা হয়নি। তারা আমাকে নিয়ে মিথ্যাচার করছে এবং দলের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছেন। লক্ষ্যারচর বিএনপির নেতাকর্মীদের শান্তিপূর্নভাবে কর্মসূচী পালনের জন্য বলেছি বলে জানান তিনি।

চকরিয়া উপজেলা বিএনপির আহবায়ক ও কক্সবাজার জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি এনামুল হক অভিযোগ করেন, শহীদ জিয়াউর রহমানের শাহাদাৎ বার্ষিকী সচরাচর কর্মসূচি। প্রতিবছরই আমরা দিনটি শান্তিপূর্নভাবে উদযাপন করা হয়। এ রকম সাধারণ কর্মসূচিতে হামলা করে আওয়ামী লীগ তাদের নগ্ন চরিত্র উন্মোচন করেছে। আমি সংশ্লিষ্টদের অনতি বিলম্বে আইনের আওতায় আনতে প্রশাসনের নিকট দাবী জানাচ্ছি।

চকরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ চন্দন কুমার চক্রবর্তী জানান, বিএনপির কর্মসূচীতে কোন ধরেণের হামলা হয়নি। বিএনপি কর্মসূচি পালন করার বিষয়ে আমাদের জানায়ওনি।

পাঠকের মতামত: