ঢাকা,শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

বনবিভাগ ও পরিবেশ অধিদপ্তরের ভুমিকা নিয়ে প্রশ্ন

চকরিয়ায় সংরক্ষিত বনের ভেতরে পাহাড় কেটে হচ্ছে মাছের ঘের 

নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া :: কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের চকরিয়া উপজেলার ফাসিয়াখালী রেঞ্জের অধীন ডুলাহাজারা বনবিটের মৌলভীকাটা এলাকায় সংরক্ষিত বনের ভেতরে পাহাড় কেটে মাছের ঘের তৈরী করছেন জাহেদুল ইসলাম নামের দাপটশালী একব্যক্তি। তিনি চকরিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতির ছোট ভাই । গেল এক সপ্তাহ যাবত বনবিভাগের ফাসিয়াখালী রেঞ্জের বনবিট এলাকার ভেতরে স্কেভেটর গাড়ি দিয়ে এভাবে পাহাড় কাটা অব্যাহত থাকলেও স্থানীয় বনবিভাগ ও পরিবেশ অধিদপ্তরের ভুমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয় পরিবেশ সচেতন মহল। অবশ্য সরকারি এই দুটি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা পাহাড় কাটার এ ঘটনায় আইনী পদক্ষেপ নেবেন বলে নিশ্চিত করেছেন।

জানা গেছে, চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের মালুমঘাট চা-বাগান সড়ক দিয়ে একটু ভেতরে গেলে মৌলভীকাটা। ওই এলাকার বেশিরভাগ পাহাড় কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের ফাসিয়াখালী রেঞ্জের ডুলাহাজারা বনবিটের অধীনে পড়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, মৌলভীকাটা এলাকায় ফাসিয়াখালী রেঞ্জের সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ভেতরে শক্তিশালী স্কেভেটর গাড়ি দিয়ে পাহাড় কেটে মাছের পুকুর তৈরী করা হচ্ছে। পাশাপাশি বনাঞ্চলের ভেতরের বেশকিছু ধানী জমিও কেটে পুকুরের অংশের সঙ্গে মিলিত করা হচ্ছে। ঘটনাস্থলে পাহাড় কেটে মাছের ঘের বানানো কাজে জড়িত বিএনপি নেতার ভাইকে পাওয়া যায়নি।

তবে তাঁর কেয়ারকেটার দাবি করেন, যে জায়গায় পাহাড় আর ধানী জমি কাটা হচ্ছে, ওই জায়গাটি অভিযুক্ত জাহেদুল ইসলামের পৈত্রিক খতিয়ানের সম্পত্তি। কী ভাবে বনের ভেতরে খতিয়ানী জায়গা আসলো জানতে চাইলে তিনি এব্যাপারে অভিযুক্ত জাহেদুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন। কিন্তু গেল সাতদিন চেষ্ঠা করে মুঠোফোনের সংযোগ বন্ধ থাকায় জাহেদুল ইসলামের সঙ্গে কথা সম্ভব হয়নি।

বিষয়টি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের চকরিয়া উপজেলার ফাসিয়াখালী রেঞ্জ কর্মকর্তা (চলতি দায়িত্ব) মিজানুর রহমান বলেন, আমাদের বনাঞ্চলের ভেতরে পাহাড় কেটে মাছের পুকুর তৈরীর ঘটনার খবর পেয়ে সরেজমিনে মৌলভীকাটা এলাকার অনুকুলস্থলে যাই। কিন্তু সেখানে অভিযুক্ত জাহেদুল ইসলামকে পাওয়া যায়নি। তাঁর কেয়ারটেকারকে বলে এসেছি, জায়গার কাগজপত্র নিয়ে জাহেদুল ইসলামকে ফাসিয়াখালী রেঞ্জ কার্যালয়ে উপস্থিত হতে। এই নির্দেশনা দেওয়ার পরও তিনি গেল সাতদিনে রেঞ্জ কার্যালয়ে আসেননি। এখন বিভাগীয় বনকর্মকর্তার নির্দেশে পরবর্তী আইনী পদক্ষেপ নেব আমরা।

এব্যাপারে কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক শেখ মো.নাজমুল হুদা বলেন, পাহাড় কাটা হোক, ধানী জমি কেটে শ্রেণী পরিবর্তন করা, কোনটাই বৈধ না। পরিবেশ আইনে এগুলো সম্পুর্ণভাবে নিষিদ্ধ। ফাসিয়াখালী রেঞ্জের মৌলভীকাটা এলাকাটি বনবিভাগের অধীনে হলে আগে তাদেরকে আইনী ব্যবস্থা নিতে হবে। তারপরও আমরা ঘটনাস্থলে পরিবেশ অধিদপ্তরের টিম পাঠাবো। তদন্তে পাহাড় কাটার প্রমাণ পাওয়া গেলে পরিবেশ অধিদপ্তরও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে জড়িতদের বিরুদ্ধে।

 

পাঠকের মতামত: