রামুতে হত্যাকান্ডের শিকার ৪ মাস বয়সী শিশুর মৃতদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। গত শুক্রবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সকালে ওই শিশুকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। হত্যার অভিযোগে পরদিন রামু থানায় মামলা করেন শিশুটির মা সোনিয়া আকতার।
এরই প্রেক্ষিতে বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশে গতকাল সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বিকাল চারটা দশ মিনিটে খুনিয়াপালং ইউনিয়নের থোয়াইঙ্গাকাটা এলাকায় মৃত্যুর ৩দিন পর শিশুটির মৃতদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়। রামু উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো. নিকারুজ্জামান, রামু থানার ওসি প্রভাষ চন্দ্র ধর এর উপস্থিতিতে শিশুটির মৃতদেহ তোলার সময় এলাকার লোকজন সেখানে ভীড় জমান।
রামু উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো. নিকারুজ্জামান জানিয়েছেন, কবর থেকে উত্তোলনের পর শিশুটির মৃতদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়। পরে মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
তিনি আরো জানান, সুরতহাল রিপোর্টে শিশুটির বাম কানের পাশে কালো জখমের চিহ্ন রয়েছে। আর কোন আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। মৃতদেহ উত্তোলনের সময় উপস্থিত শতশত জনতা শিশু হত্যার ঘটনা সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
জানা গেছে, শিশুটিকে হত্যার অভিযোগে গত ১১ ফেব্রুয়ারি রামু থানায় মামলা (নং ১০/১১) করেন শিশুটির মা সোনিয়া আকতার। মামলায় থোয়াইকাটাঙ্গা দারিয়ারদিঘী এলাকার বাসিন্দা শফির ছেলে নিহত শিশু পিতা মোস্তাক আহমদ, দিদার, শাহজাহান, আনোয়ার, মোস্তফা, মোস্তাক আহমদের প্রথম স্ত্রী তছলিমা আকতার, আনোয়ারের স্ত্রী সেলিনা আকতার, দিদার আহমদের স্ত্রী রাজিয়া আকতারকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
জানা গেছে, দুই বছর পূর্বে কক্সবাজার শহরের দক্ষিণ পাহাড়তলী এলাকার জহির আহমদের মেয়ে সোনিয়া আকতারকে (দ্বিতীয় স্ত্রী) বিয়ে করেন মামলার প্রধান অভিযুক্ত মোস্তাক আহমদ।
মামলার বাদি সোনিয়া আকতার জানিয়েছেন, স্বামী মোস্তাক সহ অভিযুক্ত ব্যক্তিরা তাকে এবং তার চারমাস বয়সী শিশুটিকে হত্যার উদ্দেশ্যে মারধরসহ নানাভাবে নির্যাতন চালিয়েছে। নির্যাতনের ফলে তার একমাত্র সন্তানটি প্রাণ হারায়। এঘটনায় তিনিও গুরত্বর আহত হয়েছেন। এছাড়া মামলা প্রত্যাহারের জন্য আসামীরা তাকে নানাভাবে হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন।
খুনিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মাবুদ জানিয়েছেন, কবর থেকে শিশুটির মৃতদেহ উত্তোলন করা হয়েছে। এ ঘটনায় যেন কোন নিরাপরাধ ব্যক্তিকে হয়রানি করা না হয। এ জন্য প্রশাসনের প্রতি আহবান জানান তিনি।
রামু থানার ওসি (তদন্ত) প্রভাষ চন্দ্র ধর জানিয়েছেন, এ ঘটনায় পুলিশ আনোয়ারের স্ত্রী সেলিনা আকতার ও দিদার আহমদের স্ত্রী রাজিয়া আকতারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যান্যদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
পাঠকের মতামত: