একইসঙ্গে অবসরপ্রাপ্ত জেলা জজরা আর নিম্ন আদালতে আইন পেশায় যুক্ত হতে পারবেন না। তবে উচ্চ আদালতে তারা ওকালতি করতে পারবেন।
বেসরকারি দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধে হাই কোর্টের দেওয়া রায় বহাল রেখে বুধবার এ রায় আসে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ থেকে।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। দারুল ইহসানের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার রোকনউদ্দিন মাহমুদ। এছাড়া বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার এম আমীর উল ইসলাম ও জহিরুল হক। ইউজিসির পক্ষে শুনানি করেন এবিএম বায়েজীদ।
অ্যাটর্নি জেনারেল সাংবাদিকদের বলেন, “আমি ৩৫ বছর বয়সসীমা প্রস্তাব করেছিলাম। কিন্তু আদালত বিদেশ থেকে ডিগ্রি নিয়ে আসাদের বিষয় বিবেচনা করে ৪০ বছর করেছেন।”
বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সনদ ছাড়া কেউ দেশে আইন পেশায় যুক্ত হতে পারেন না। এই রায়ের ফলে ৪০ বছরের বেশি বয়সে এসে আইনজীবী হিসেবে কাজ শুরু করা আটকে যেতে পারে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ পেলে এই বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে।
দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়ের মালিকানা নিয়ে দ্বন্দ্বের মামলায় আপিল বিভাগের রায় আসে। ফলে বেসরকারি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম বন্ধে হাই কোর্টের রায়ই বহাল থাকল।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, “আজকের রায় অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্যও একটা বার্তা। শিক্ষাকে পণ্য হিসেবে আর কেউ ব্যবহার করতে পারবে না।”
মালিকানার দ্বন্দ্ব, বার কাউন্সিলে পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ বন্ধসহ বিভিন্ন বিষয়ে দারুল ইহসানের পক্ষে ১২ রিট আবেদন হয়েছিল। এসব আবেদনের শুনানি শেষে ২০১৬ সালের ১৩ এপ্রিল হাই কোর্ট দারুল ইহসান বন্ধের রায় দেয়।
রায়ে বলা হয়, “আইনের দৃষ্টিতে এটা (দারুল ইহসান) কোনো বিশ্ববিদ্যালয় নয়। সুতরাং এটা ডেমোলিশ (বন্ধ) করতে হবে।”
আদালত বিশ্ববিদ্যালয়টির ট্রাস্ট্রিদের ১০ লাখ টাকা করে জরিমানাও করেছিল।
এছাড়া জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই বছরের এলএলবি ডিগ্রি চার বছর করার এবং বার কাউন্সিলের ছাড়পত্র নিয়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিষয়ে ভর্তির আদেশ দিয়েছিল।
ওই রায়ের বিরুদ্ধে দারুল ইহসান, ইস্টওয়েস্ট, প্রাইম, ব্র্যাকসহ বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আপিলের আবেদন করেছিল।
বুধবার দারুল ইহসানের আপিলের আবেদন খারিজ করে অন্যদের আবেদন নিষ্পত্তি করে দেয় আপিল বিভাগ।
হাই কোর্টের রায়ের পর গত বছরের ২৬ জুলাই শিক্ষা মন্ত্রণালয় বিশ্ববিদ্যালয়টির ১৩৫টি ক্যাম্পাসের কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করে।
পরদিন এক অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে ওই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়ার জন্য পাঁচ লাখ টাকা দাবি করতে পারবে। এজন্য সরকারের পক্ষে সহযোগিতা করা হবে।
নাহিদ বলেন, দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয় ‘সার্টিফিকেট ব্যবসা’ করছিল। এগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আর কেউ চালু করতে পারবে না।
পাঠকের মতামত: