ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪

৩৫ হাজার টাকার জন্য কিশোরীকে আটকে রেখে ২৫ দিন ধর্ষণ!

কক্সবাজার প্রতিনধি :: কক্সবাজার সদর উপজেলার পিএমখালীর টমটম চালকের কিশোরী কন্যাকে দেড় মাস যাবৎ আটকে রেখে ধর্ষণ ও নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ৩৫ হাজার টাকা ধার দেওয়ার পর যথাসময়ে ফেরত না পাওয়ায় টাকার পরিবর্তে টমটম চালকের মেয়েকে জোর পূর্বক আটকে রেখে ধর্ষণ, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালানোর অভিযোগ করেছেন অসহায় কিশোরীর মা।
ভুক্তভোগী কিশোরী কণ্যার মা সরকারি সহায়তা নম্বর ট্রিপল নাইনে কল দেওয়ার পর বিষয়টি পুলিশের নজরে আসে। কক্সবাজার সদর মডেল থানা পুলিশ গতকাল দুপুরে কিশোরীকে উদ্ধারের জন্য অভিযান চালিয়েছে।
জানা যায়, কক্সবাজার সদর উপজেলার পিএমখালী পশ্চিম জুমছড়ির টমটম চালক মাহবুব আলমের সাথে খরুলিয়া চেয়ারম্যান পাড়ার আব্দুল গনির পুত্র শাহাবুদ্দিনের টমটম চালাতে গিয়ে সম্পর্ক হয়। সেই সুবাদে শাহাবুদ্দিন মাহবুব আলমের বাড়িতে নিয়মিত আসা-যাওয়া করত। ইত্যবসরে মাহবুব আলমের টাকার প্রয়োজন পড়ায় টমটম চালক শাহাবুদ্দিনের কাছ থেকে ৪৫ হাজার টাকা ধার নেয়। টানাপোড়নের সংসারে মাহবুব আলম মাত্র ১০হাজার টাকা পরিশোধ করতে পারলেও বাকি ৩৫ হাজার টাকা পরিশোধ করতে পারেনি। এই সুযোগে শাহাবুদ্দিন টমটম চালক মাহবুব আলমের কিশোরী কন্যা তাহিয়া আক্তারকে জোরপূর্বক লোকজন নিয়ে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যায়।

উক্ত টমটম চালক শাহাবুদ্দিন টাকা ফেরত না দিলে মেয়েকে আর ফেরত দেবে না বলে সাফ জানিয়ে দেয়। মাহবুব আলমের স্ত্রী শামসুন্নাহার মেয়েকে উদ্ধারের জন্য স্থানীয় মেম্বার ও খরুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার আবদুর রশীদের কাছে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করেন। তাতেও মেয়েকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
গতকাল মেয়েকে উদ্ধারের জন্য সরকারি সহায়তা নম্বর ট্রিপল নাইনে ফোন করে মেয়েকে উদ্ধারের আকুতি জানায় মা শামসুন্নাহার। বিষয়টি কক্সবাজার মডেল থানাকে অবগত করা হলে কক্সবাজার মডেল থানা এস আই মনসুরের নেতৃত্বে একদল পুলিশ খরুলিয়া চেয়ারম্যান পাড়ায় টমটম চালক শাহাবুদ্দিনের বাড়িতে কিশোরীকে উদ্ধারের জন্য অভিযান চালায়। অভিযানের খবর আগে থেকে জেনে যাওয়ায় শাহাবুদ্দিন ও তার পরিবারের লোকজন উক্ত মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে যায়। ফলে পুলিশ জিম্মিদশা থেকে কিশোরীকে উদ্ধার করতে পারেনি।
অভিযান পরিচালনাকারী কক্সবাজার মডেল থানার এসআই মোহাম্মদ মনসুর জানান, কিশোরীকে উদ্ধারের জন্য আমরা দুপুরে খরুলিয়া চেয়ারম্যান পাড়ায় মেয়ের মা সহ অভিযানে যাই কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত আগে থেকে খবর পেয়ে শাহাবুদ্দিন কিশোরীকে নিয়ে পালিয়ে যায় । তবে আমরা আশা করছি আজকালের মধ্যে শাহাব উদ্দিনকে আটক করে জিম্মিদশা থেকে ওই মেয়েকে উদ্ধার করে বাবা-মার কাছে ফিরিয়ে দিতে পারবো।
খরুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার আব্দুর রশিদ জানান, টমটম চালক শাহাবুদ্দিন ইতিপূর্বেও নারী সংক্রান্ত ঘটনা ঘটিয়েছে। আমি কিশোরীকে উদ্ধারের জন্য প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে সার্বিক চেষ্টা চালাচ্ছি, আশা করছি শাহাবুদ্দিন শীঘ্রই পুলিশের জালে আটক হবে অসহায় কিশোরীকে উদ্ধার করা যাবে।
কিশোরীর মা শামসুন্নাহার জানান, টমটম চালক তার মেয়েকে আটকে রেখে অনেকটা স্বামী-স্ত্রীর মতো ব্যবহার করছে। মেয়েকে উদ্ধার করা না হলে আমার আত্মহত্যা করা ছাড়া আর কোন পথ থাকবেনা।
অসহায় পরিবারের দাবি তাদের কিশোরী কণ্যাকে উদ্ধার করে ধর্ষক টমটম চালক শাহাবুদ্দিনের যথাযথ শাস্তি নিশ্চিত করা হোক।দৈনিক কক্সবাজার।

পাঠকের মতামত: