ঢাকা,মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

সুন্দরবনে পথ হারানোর ১৮ ঘণ্টা পর উদ্ধার ছয় কিশোর

নিজস্ব প্রতিবেদক ::  ছয় বন্ধু মিলে ঠিক করল সুন্দরবন ভ্রমণে যাবে। করোনার কারণে সুন্দরবনে এ সময়ে কোন পর্যটক নেই। তাই মজা করে ঘোরা যাবে। সাথে নেওয়া হল চিপস আর পানি। হাটতে হাটতে ছয় কিলোমিটার ভেতরে ঢুকে যায়। যাওয়ার পথে রাখা হয়নি কোন চিহ্ন। তারপর সুন্দরবনে পথ হারিয়ে পেরিয়ে গেল ১৮ ঘণ্টা।

একসময় শুরু হয় বৃষ্টি আর বাতাস। সেইসাথে বাঘের গর্জন। ভয়ে ছয়জন আশ্রয় নেয় গাছের ওপর। হাতে নেই খাবার। ক্ষুধার্ত ছয় জনের মধ্যে একজনের মনে পড়ল পুলিশের হটলাইন ৯৯৯ এর কথা। কান্না জড়িত কন্ঠে অবশেষে কল দিয়ে উদ্ধারের সহযোগিতা চাওয়া হয়।

ফোন পেয়ে সাথে সাথেই শরণখোলা থানা পুলিশকে সুন্দরবনে হারিয়ে যাওয়া ছয় কিশোরকে উদ্ধার করতে বলা হয়। এরপর রাতেই শুরু হয় পুলিশের উদ্ধার অভিযান। পরে বৃহস্পতিবার (২৮ মে) ভোর ৪টার দিকে তাদের খুঁজে পেয়ে উদ্ধার করে নিয়ে আসা হয় লোকালয়ে।

তাদের বাড়ি বাগেরহাটের শরণখোলার উপজেলার দক্ষিণ আমড়াগাছিয়া গ্রামে। সুন্দরবন দেখতে বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশন রাজাপুর এলাকা থেকে বনবিভাগের চোখ ফাকি দিয়ে বনে ঢুকে পড়ে বলে জানিয়েছে তারা।

উদ্ধার হওয়া কিশোররা হল, দক্ষিণ আমড়াগাছিয়া গ্রামের ইসাহাক খলিফার ছেলে জয় খলিফা (১৬), ফারুক খলিফার ছেলে সাইমুন (১৬), শহিদুল খলিফার ছেলে জুবায়ের (১৭) ও মাইনুল ইসলাম (১৯), জাহাঙ্গীর তালুকদারের ছেলে আ. রহিম (১৭) ও রায়েন্দা বাজারের জাহাঙ্গীর হাওলাদারের ছেলে ইমরান (১৯)।

শরণখোলা থানা পুলিশ জানায়, বুধবার সকাল ১০টায় ওই ছয় কিশোর রাজাপুর এলাকা থেকে সুন্দরবনে প্রবেশ করে। কিছুক্ষণ পর তারা দিক হারিয়ে বনের গহীনে চলে যায়। ৯৯৯ এ কলের তথ্য পেয়ে শরণখোলা থানা ও ধানসাগর নৌ-পুলিশ বনরক্ষী ও স্থানীয়দের নিয়ে সুন্দরবনে তল্লাশি চালায়।
তারা মাইকিং করে কিশোরদের সন্ধান পাওয়ার চেষ্টা করে। এরপর মোবাইলে যোগাযোগের মাধ্যমে ভোর ৪ টায় সময় তাদের উদ্ধারে সক্ষম হয় পুলিশ। এই ছয় কিশোর লোকালয় থেকে প্রায় ৬ কিলোমিটার সুন্দরবনের গহীনে ঢুকে পড়েছিল বলে পুলিশ জানায়।
শরণখোলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসকে আব্দুল্লাহ আল সাইদ জানান, প্রায় ১৮ ঘণ্টা পর তাদেরকে সুন্দরবন থেকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসি আমরা। সময় মতো উদ্ধার করতে না পারলে বড় ধরণের ক্ষতির আশঙ্কা ছিল। দুপুরে সবাইকে তাদের পরিবারের কাছে তুলে দেয়া হয়েছে।

পাঠকের মতামত: