ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪

লামায় জিম্মি দশা থেকে শিশু উদ্ধার , বাবা আটক

লামা প্রতিনিধি :  বান্দরবান জেলার লামা উপজেলায় এক পাষন্ড বাবার জিম্মি দশা থেকে দুই দিন পর মো. শাকিল নামের এক শিশুকে অবশেষে উদ্ধার করতে পেরেছে পুলিশ এবং ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সদস্যরা। এর আগে স্ত্রীর সাথে মতের অমিল ও পারিবারিক অশান্তির জেরে তিন বছরের শিশু মো. সাকিলকে গলায় দা ঠেকিয়ে জিম্মি করে বাবা হাফিজুল ইসলাম। হাফিজুল ইসলাম উপজেলার গজালিয়া ইউনিয়নের প্রংগ ঝিরি পাড়ার ইসহাক গাজীর ছেলে, পেশায় ভাড়ায় চালিত মোটর সাইকেল চালক। লামা-সুয়ালক সড়কের গজালিয়া রাস্তার মাথায় একটি চা দোকান রয়েছে হাফিজুল ইসলামের। এ ঘটনায় শিশুর অভিযুক্ত বাবা হাফিজুল ইসলামকে আটকও করেছে পুলিশ।

শিশু শাকিলের মা কুলছুমা আক্তার জানায়, গত দুইদিন আগে স্বামী হাফিজুল ইসলাম নিজের শিশু সন্তান মো. শাকিলকে দা ঠেকিয়ে জিম্মি করে একটি তামাক চুল্লীর ছাঁদে উঠে। কেউ তার কাছে গেলে দা, ছুরি, কোদাল ও রড দিয়ে কোপানোর চেষ্টা করে। রবিবার সকালে এলাকার দুই ব্যক্তি শিশুটিকে উদ্ধার করতে গেলে তাদেরকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে ও বিকেলে দুই জনের ঘর কেটে ফেলেন হাফিজুল ইসলাম। জিম্মি করার পর বাবা হাফিজুল ইসলাম গত দুইদিন ধরে শিশু শাকিলকে কিছু খেতে দেয়নি বরং দা দিয়ে কুপিয়ে জখম করে।

এদিকে পাষন্ড হাফিজুল ইসলামের ছোট ভাই শফিকুল ইসলাম বলেন, শনিবার রাতে আমার ভাবী ও ভাতিজাদের মারধরের প্রতিবাদ করলে আমার ঘর কুপিয়ে কেটে ফেলে বড় ভাই হাফিজুল ইসলাম। তিনি সব সময় হাতে দা নিয়ে ঘোরাফেরা করেন। তার কাছে এলাকার কেউ নিরাপদ না। এমনকি আমার বাবা ইসহাক গাজীকেও মারধর করেছেন।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের লামা স্টেশনের দলনেতা মো. আব্দুল্লাহ বলেন, এমন পাষন্ড বাবা আর কখনো দেখিনি। নিজের সন্তানকে কুপিয়ে আহত করে আবার জিম্মিও করেছে। দীর্ঘ প্রায় ৪ ঘন্টা আপ্রাণ চেষ্টার পর বাচ্চাটিতে উদ্ধার করতে সক্ষম হই।

এ বিষযে গজালিয়া পুলিশ ক্যাম্প ইনচার্জ মো. মফিজ উদ্দিন জানান, রবিবার দিনের বেলায় মুন্নী রাণী সাহা (২৫) ও সুমন সাহা (৩৮) নামে দুইজনকে দা দিয়ে কুপিয়ে আহত এবং রথিচন্দ্র ত্রিপুরা ও শফিকুল ইসলামের ঘর কুপিয়ে কেটে ফেলার বিষয় জানতে পেরে আমরা সন্ধ্যায় প্রংগ ঝিরিতে যাই। স্থানীয় জনতা ও পুলিশ আসতে দেখে হাফিজুল ইসলাম তার তিন বছরের শিশু সাকিলের গলায় দা ঠেকিয়ে জিম্মি করে ঘরের ছাদে উঠে যায়। স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ আমরা অনেক চেষ্টা করে রক্তাক্ত শিশুটিকে উদ্ধার করতে না পেরে লামা ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেই। রাত সাড়ে ১০টায় ফায়ার সার্ভিস, স্থানীয় জনতা ও আমরা যৌথ চেষ্টা চালিয়ে ৪ ঘণ্টা পরে জিম্মিদশা থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করি। পাশাপাশি পাষন্ড হাফিজুল ইসলামকে আটক করে গজালিয়া পুলিশ ক্যাম্পে নিয়ে যাই। পরে এ ঘটনায় হাফিজুল ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে বলেও জানান ক্যাম্প ইনচার্জ মফিজ উদ্দিন।

পাঠকের মতামত: