ঢাকা,শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪

আজ মঙ্গলবার মুসলমানদের পবিত্র হজ

‘লাব্বাইক’ ধ্বনিতে মুখরিত আরাফাত ময়দান

অনলাইন ডেস্ক: সৌদি আরবে দুদিন আগেই শুরু হয়েছে মুসলমানদের পবিত্র হজ। বিশ্বের নানা প্রান্তের লাখ লাখ মুসলমান আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়ে হাজির হয়েছেন মক্কায়। আজ মঙ্গলবার সৌদি আরবের মক্কা নগরীর ঐতিহাসিক আরাফাত ময়দান ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’ ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠেছে।

আজ আরাফাত দিবসে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মসজিদ নামিরা থেকে হজের খুতবা ও নামাজ আদায়ের মধ্যদিয়ে পালিত হবে হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা। আরাফাতে এ দিনের আনুষ্ঠানিকতাকে মূল হজ বলা হয়।

গত রোববার মিনা থেকেই মূলত হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। হজের অংশ হিসেবে মুসল্লিরা মিনা, আরাফাত ময়দান, মুজদালিফা, মক্কায় পাঁচদিন অবস্থান করবেন।

করোনাভাইরাস মহামারির ধাক্কা কাটিয়ে বিভিন্ন দেশ থেকে এ বছর রেকর্ড সংখ্যক মুসল্লি পবিত্র হজ পালনে সৌদি আরবে জড়ো হয়েছেন। এ বছর ২৫ লাখ মুসল্লির সমাগম ঘটবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, ‘এ বছর আমরা ইতিহাসের সবচেয়ে বড় হজযাত্রার সাক্ষী হব। নেওয়া হয়েছে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা।’

আজ দুপুরে আরাফাতের ময়দানের মসজিদে নামিরা থেকে হাজিদের উদ্দেশে হজের খুতবা দেবেন সৌদি আরবের সর্বোচ্চ উলামা পরিষদের সদস্য শায়খ ড. ইউসুফ বিন মুহাম্মদ বিন সায়িদ। বাংলাসহ বিশ্বের বহুল প্রচলিত ২০ ভাষায় সরাসরি এই খুতবার অনুবাদও প্রচার করার কথা জানিয়েছে দুই পবিত্র মসজিদের প্রেসিডেন্সি বিভাগ।

সূর্যাস্তের আগ পর্যন্ত হাজিরা আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করবেন। এ সময় তাঁরা তালবিয়া, জিকির, ইবাদত ও দোয়া-মোনাজাতে মশগুল থাকবেন। গতকাল সোমবার সারা দিন তাঁরা মিনায় থেকে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করেছেন।

আরাফাতের ময়দান তিন দিক পাহাড়বেষ্টিত। মাঝে দুই মাইল দৈর্ঘ্য ও দুই মাইল প্রস্থের সমতল ভূমি। আরাফাতে রয়েছে জাবালে রহমত বা রহমতের পাহাড়। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) জাবালে রহমতের কাছে দাঁড়িয়ে বিদায় হজের ভাষণ দিয়েছিলেন। পৃথিবীতে এসে হজরত আদম (আ.) ও হজরত হাওয়া (আ.) এর পুনর্মিলনও হয়েছিল এই ময়দানে।

ফজরের নামাজের পর মিনা থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে আরাফাতের ময়দানের উদ্দেশে রওনা হন হাজিরা। সূর্যাস্তের পরে এই ময়দান থেকে প্রায় আট কিলোমিটার দূরে মুজদালিফায় গিয়ে মাগরিব ও এশার নামাজ একত্রে আদায় করবেন। রাতে মুজদালিফায় অবস্থান করবেন।

শয়তানের উদ্দেশে নিক্ষেপের জন্য প্রয়োজনীয় পাথর সংগ্রহ করবেন মুজদালিফার ময়দান থেকেই। আগামীকাল বুধবার ফজরের নামাজ আদায় করে হাজিরা মুজদালিফা থেকে আবার মিনায় ফিরবেন। মিনায় এসে বড় শয়তানের উদ্দেশে সাতটি পাথর মারবেন, দমে শোকর বা কোরবানি ও মাথা মুণ্ডনের পর গোসল করবেন। সেই সঙ্গে সেলাইবিহীন দুই টুকরা কাপড় তথা ইহরামও বদল করবেন। এরপর স্বাভাবিক পোশাক পরে মিনা থেকে মসজিদুল হারামে গিয়ে কাবা শরিফ সাতবার তাওয়াফ করবেন।

এ ছাড়া সাফা-মারওয়া সায়ি (সাতবার দৌড়াবেন) করবেন। তাওয়াফ ও সায়ি শেষে তাঁরা আবার মিনায় যাবেন। মিনায় যত দিন থাকবেন, তত দিন তিনটি (বড়, মধ্যম, ছোট) শয়তানের উদ্দেশে ২১টি পাথর নিক্ষেপ করবেন। এভাবেই শেষ হবে হজের আনুষ্ঠানিকতা।

পাঠকের মতামত: