ঢাকা,শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪

রোহিঙ্গাদের জন্য সেফ জোন প্রতিষ্ঠার প্রস্তাবে চীনের সম্মতি

নিউজ ডেস্ক ::
মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গাদের নিরাপদে রাখার জন্য একটি সেফ জোন (নিরাপদ বলয়) প্রতিষ্ঠার প্রস্তাবে রাজি হয়েছে চীন। সেখানে সেফ জোন প্রতিষ্ঠার জন্য বাংলাদেশ ইতোমধ্যেই চীন, ভারত ও আসিয়ানের সদস্য দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে। বিভিন্ন দেশের পক্ষ থেকে মিলেছে ইতিবাচক সাড়াও। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র এ তথ্য জানায়।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বাংলানিউজকে নিশ্চিত করেছেন, রাখাইনে সেফ জোন প্রতিষ্ঠার বিষয়ে চীনের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। চীন সেখানে সেফ জোন প্রতিষ্ঠায় সম্মতি দিয়েছে। চীনের সম্মতি পাওয়ায় সেফ জোন প্রতিষ্ঠা সম্ভব হবে বলে তিনি জানান।

রোহিঙ্গাদের রাখাইনে নিরাপদে রাখার জন্য একটি সেফ জোন প্রতিষ্ঠার বিষয়ে এক বছর আগেই প্রস্তাব দিয়েছিল বাংলাদেশ। তবে মিয়ানমারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের ওই প্রস্তাব নাকচ করে দেওয়া হয়। মিয়ানমারের পক্ষ থেকে বলা হয়, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সেফ জোন প্রতিষ্ঠা হলে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সেখানে কর্তৃত্ব করবে। এই যুক্তি তুলে ধরে সেফ জোন থেকে সরে আসে মিয়ানমার।

এদিকে গত বছরের ১৫ নভেম্বর রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেয় বাংলাদেশ ও মিয়ানমার। সবকিছু চূড়ান্ত হলেও শেষ পর্যন্ত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ভেস্তে যায়। রোহিঙ্গারা সে সময় যুক্তি দেয়, রাখাইনে ফেরার মতো নিরাপদ পরিবেশ তৈরি হয়নি। তাই সেদেশে ফিরে যেতে চায় না তারা। একই সঙ্গে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার পক্ষ থেকেও দাবি করা হয়, রাখাইনে রোহিঙ্গাদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ তৈরি হয়নি।

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন স্থগিত হওয়ার পরে সেফ জোন প্রতিষ্ঠার বিষয়ে আবারো জোর দিয়েছে বাংলাদেশ। কেননা মিয়ানমারে নিরাপদ পরিবেশ তৈরি না হলে, রোহিঙ্গাদের ফেরানো সম্ভব নয় বলেও মনে করছেন সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। সে কারণে সেফ জোন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে মিয়ানমারের ওপর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে, এমন দেশ হিসেবে চীনের সঙ্গে আলোচনা করেছে বাংলাদেশ। চীন বাংলাদেশের এই প্রস্তাবে সম্মতিও দিয়েছে।

সেফ জোন প্রতিষ্ঠার বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছেও নতুন করে আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে মিয়ানমার নিয়ে অনুষ্ঠিত এক বিশেষ সভায় পররাষ্ট্র সচিব এম শহীদুল হক যে তিন দফা প্রস্তাব দিয়েছেন, তার মধ্যে অন্যতম হলো সেফ জোন প্রতিষ্ঠা। এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘ অধিবেশনেও সেফ জোন প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়েছিলেন।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয়ের পর নতুন সরকার আবারো সেফ জোন প্রতিষ্ঠার বিষয়ে জোর দিয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন সেফ জোন প্রতিষ্ঠার বিষয়ে জানিয়েছেন, রাখাইনে সেফ জোন প্রতিষ্ঠার বিষয়ে ভারত, চীন ও আসিয়ান দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনা চলছে। আমরা এ নিয়ে কাজ করছি।

পাঠকের মতামত: