ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪

রামুতে খামারে সশস্ত্র ডাকাতি, ৬ লাখ টাকার গরু লুট

সোয়েব সাঈদ, রামু ::
কক্সবাজারের রামুতে একটি গরুর খামারে লুটপাট চালিয়েছে অস্ত্রধারি ডাকাতদল। খামারের দেয়াল ও দরজা ভেঙ্গে নিয়ে গেছে উন্নত প্রজাতির ৪টি গরু। লুট হওয়া গরুর মূল্য ৬ লাখ টাকা। রামুর কাউয়ারখোপ ইউনিয়নের লট উখিয়ারঘোনা এলাকায় শুক্রবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাত ২ টায় এ ডাকাতির ঘটনা ঘটে।
খামার মালিক আবদুল গফুর জানান- ১০/১২ জনেরও অধিক ডাকাত পরিকল্পিতভাবে খামারের আশপাশে অবস্থান নেয়। এদের কয়েকজন অস্ত্রধারি ছিলো। তাদের গাড়িও পাশ^র্বর্তী পার্কে রাখা হয়। ডাকাতদল খামার ঘরের লোহার দরজা ও দেয়াল ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে। এসময় খামারে থাকা উন্নত প্রজাতির (পাকিস্তানী) ৪টি গরু নিয়ে অন্যত্র রাখা গাড়িতে তুলে ফেলে। এসময় দরজা ও দেয়াল ভাঙ্গার শব্দে খামারের পাশে শোবার ঘর থেকে কর্মচারিরা জেগে উঠে দেখে খামারে বড় আকারে গরুগুলো উধাও। তাৎক্ষণিক এসব কর্মচারিরা খামারের এসে সড়কের উপর দাঁড়িয়ে থাকা কয়েকজন অস্ত্রধারি ব্যক্তিকে দেখতে পায়। অস্ত্রধারি ব্যক্তিরা নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে খামারের গরুগুলো দক্ষিণ দিকে নিয়ে যাচ্ছে বলে জানায়। এমন তথ্যে কর্মচারীরাও ওইদিকে ছুটে যায়। মূলত এরই ফাঁকে অস্ত্রধারি ডাকাতরা বিপরীত দিকে পার্কিং করা গাড়িতে গরুগুলো তুলে সটকে পড়ে।
ঘটনার খবর পেয়ে রামু থানার এএসআই শামশুদ্দিন ডাকাতিস্থলে যান। তিনি জানিয়েছেন-এ ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রামুতে দীর্ঘদিন গরুর খামার করে আসছেন আদর্শ কৃষক মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর আহমদ। তিনি জানান, ৮/৯ মাসপূর্বে তাঁর খামারের কর্মচারীদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ৫টি গরু লুট করেছিলো ডাকাতদল। থানায় এনিয়ে অভিযোগও করেন তিনি। কিন্তু এ ঘটনার কোন প্রতিকার তিনি পাননি।
রামুর জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়নের ঘোনারপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সৈয়দ নজরুল ইসলাম জানিয়েছেন-বিগত একমাসে জোয়ারিয়ানালা ৭টি বাড়িতে গরু চুরির ঘটনা ঘটেছে। এখানে অস্ত্রধারি ডাকাতরা প্রতিরাতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে গরু লুট করছে। গত ১ মাসে এ ইউনিয়নের পূর্ব জোয়ারিয়ানালার মুফিদুল আলম ও রেজাউল করিম, পূর্ব পাড়ার আনোয়ারুল হক ও রমজান আলী, ফরেষ্ট অফিসপাড়ার গোল হোছন, মালাপাড়ার আবদুল গফুর, টেকপাড়ার উম্মত আলীর বাড়িতে ডাকাতদল হানা দিয়ে প্রতিটি বাড়ি থেকে ১টি করে মোট ৭টি গরু নিয়ে গেছে। গরু চুরির পলে অনেক হতদরিদ্র পরিবার নিঃস্ব হয়ে পড়েছে।
এলাকাবাসী জানিয়েছেন-জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়নের ফরেষ্ট অফিসপাড়ার বসবাসকারি হত্যা, অপহরণসহ একাধিক মামলার আসামী নুরুল ইসলাম প্রকাশ ডাকাত নুরুল ইসলাম ও আবুল কাশেম এর নেতৃত্বে এলাকার একটি শক্তিশালী সশস্ত্র ডাকাতদল এসব গরু চুরি সহ নানা অপকর্ম সংগঠিত করে আসছে।
এছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে ফতেঁখারকুল ইউনিয়নের সাতগরিয়া পাড়ায় ৫টি, ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নের সিপাহীরপাড়া এলাকার জাফর আলমের বাড়ি থেকে ৩টি, জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়নের নূর পাড়ার হতদরিদ্র দিল আরা এবং জাফর আলমের ৫ টি গরু লুট করে সশস্ত্র ডাকাতদল।
গরুর খামার এবং দরিদ্র চাষিদের বাড়িতে একের পর দূর্ধর্ষ পশু ডাকাতির ঘটনায় খামারী ও সাধারণ কৃষকদের মাঝে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। ডাকাতির ঘটনায় লুট হওয়া এসব গরু উদ্ধার এবং জড়িত ডাকাত চক্রের সদস্যদের অবিলম্বে গ্রেফতারের জন্য জোর দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

পাঠকের মতামত: