ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪

‘মিয়ানমারকে দোষী প্রমাণে তথ্য-উপাত্ত আছে’

‘মিয়ানমারকে দোষী প্রমাণে যথেষ্ট তথ্য-উপাত্ত আছে’
‘মিয়ানমারকে দোষী প্রমাণে যথেষ্ট তথ্য-উপাত্ত আছে’

অনলাইন ডেস্ক ::

রোহিঙ্গাদের ওপর চলমান নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞের বিষয়টি অনেক পুরনো হলেও এর পক্ষে তেমন তথ্য-উপাত্ত ছিল না। এসব হত্যাযজ্ঞ ও নির্যাতনের স্থানগুলোতে মিয়ানমার সবাইকে প্রবেশ করতেও দেয়নি। রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমার আন্তর্জাতিক দায়মুক্তি পেয়েছে। তবে এখন আন্তর্জাতিক আদালতে মিয়ানমারকে দোষী প্রমাণের জন্য যথেষ্ট তথ্য-উপাত্ত রয়েছে।সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত এবং রোহিঙ্গা সংকট’শীর্ষক এক আন্তর্জাতিক সেমিনারে বিশেষজ্ঞরা এ মত দেন। ‘অ্যাকশন এইড বাংলাদেশ, সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজ এবং সেন্টার ফর পিস অ্যান্ড জাস্টিস এই সেমিনারের আয়োজন করে।অনুষ্ঠানের সূচনা বক্তব্যে সেন্টার ফর পিস অ্যান্ড জাস্টিসের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মনজুর হাসান বলেন, ‘জাতিসংঘ রোহিঙ্গাদের উপর চলমান হত্যাকাণ্ডকে জাতিনিধনের দৃষ্টান্ত হিসেবে উল্লেখ করেছে। কিন্তু সে বিষয়ে আন্তর্জাতিক প্রধান শক্তিগুলো তেমন তৎপরতা দেখায়নি। এই সমস্যার সমাধানে আমাদেরকেই সব থেকে বেশি সক্রিয় হতে হবে এবং সঠিকভাবে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের জন্য যাবতীয় শান্তিপূর্ণ পথগুলোতে চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।’ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে সবাই কথা বললেও এতদিনে কেউ কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। এ ধরনের মানবিক বিপর্যয়মূলক পরিস্থিতিতে কেউ তেমন কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেনি। ৭০, ৮০ এবং ৯০ এর দশকে রোহিঙ্গারা এ দেশে আসতে বাধ্য হয়েছিলো। কিন্তু তখন এসব কর্মকাণ্ডের তেমন কোনো তথ্য-উপাত্ত ছিল না। এখন তথ্যপ্রযুক্তির যুগ। মিয়ানমারকে দোষী সাব্যস্ত করার মতো যথেষ্ট তথ্য-উপাত্ত সবার হাতে রয়েছে।’রোহিঙ্গা ইস্যুতে ভারতের কূটনৈতিক সিদ্ধান্তের বিষয়ে তিনি বলেন, ভারত ভেবেছিলো এই ইস্যুতে নীরব থেকে মিয়ানমারকে হাত করবে। মূল প্রতিযোগিতা ছিল চীনের সঙ্গে। কিন্তু তাদের মনে রাখা উচিত ছিলো মিয়ানমারের সঙ্গে চীনের সম্পর্ক খুবই ভালো ও গভীর। তবে এখন ভারত মুখ খুলতে শুরু করেছে।সমাপনী বক্তব্যে অ্যাকশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ্ কবির বলেন, ‘মিয়ানমারকে যতক্ষণ পর্যন্ত আইনি বাধ্যবাধকতায় আওতায় আনা না যায়, ততক্ষণ তারা বিতাড়িত রোহিঙ্গাদের ফেরত নেবে না। সেকারণে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত ও জাতিসংঘকে উদ্যোগী হয়ে মিয়ারমারকে বিচারের আওতায় আনতে হবে। বাংলাদেশ যেহেতু আইসিসি-এর সদস্য, সেক্ষেত্রে তদন্ত ও বিচার কাজে আমরা বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারি।’অনুষ্ঠানে বিচারপতি সাঈদ রিফাত আহমেদ এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ আইন বিশেষজ্ঞ কেট ভিগনেসওয়ারেন রোম চুক্তির বিভিন্ন ধারায় মিয়ানমারকে দোষী প্রমাণের বিষয়গুলো তুলে ধরেন।সেমিনারে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে সবার করণীয় নিয়ে ১১ দফা ঢাকা ঘোষণা করা হয়।উল্লেখ্য, গত ৯ এপ্রিল রোহিঙ্গা সংকট বিষয়ে আন্তর্জাতিক আদালত তার ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারে কি না এ বিষয়ে আদেশ জারি করা হয়। যদিও মিয়ানমার চুক্তিতে সই করেনি, তারপরেও তারা জোরপূর্বক নিজ দেশের নাগরিককে অন্য দেশের সীমানায় তাড়িয়ে দিয়েছে, এটি আন্তর্জাতিক আইনে বিচারযোগ্য। বাংলাদেশ রোম চুক্তিতে সই করা অন্যতম দেশ। এরপর ১১ এপ্রিল এ যুক্তির পক্ষে সিদ্ধান্ত দেয়া হয়। আগামী ১১ জুনের মধ্যে বাংলাদেশকে লিখিত মতামত জমা দিতে বলা হয় এবং এই বিষয়ে আগামী ২০ জুন শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।পি

পাঠকের মতামত: