ঢাকা,রোববার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪

বয়স কমিয়ে নয়, বাল্যবিয়ের কারণ দূরীকরণে পদক্ষেপ নিন

বিশিষ্টজনদের বিবৃতি-bb

অনলাইন ডেস্ক :::

জাতীয় স্বার্থে ‘বিশেষ বিধান’ না রেখে মেয়েদের বিয়ের বয়স শর্তহীনভাবে ১৮ বছর বহাল রেখে ‘বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন, ২০১৬’ পাশের দাবিতে দেশের বিশিষ্টজনরা বিবৃতি দিয়েছেন। শনিবার জাতীয় কন্যাশিশু এডভোকেসি ফোরাম থেকে প্রেরিত বিবৃতিতে প্রফেসর সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, সিনিয়র আইনজীবী শাহদীন মালিক, প্রাবন্ধিক সৈয়দ আবুল মকসুদ, সাহিত্যিক সেলিনা হোসেন, অভিনেত্রী রোকেয়া প্রাচী, ড. বদিউল আলম মজুমদার, এম হাফিজ উদ্দিন খান, রাশেদা কে চৌধুরী সহ ২৫জন বিশিষ্ট নাগরিক বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন।
এতে তারা বলেন, বিয়ের বয়স কমিয়ে নয়, বরং যেসব কারণে (অসেচতনতা, দরিদ্রতা ও সামাজিক নিরাপত্তা ইত্যাদি) বাল্যবিবাহ সংঘটিত হয় তা দূরীকরণের পদক্ষেপ নেয়া জরুরি। বিবৃতিতে তারা বলেন, ১৮বছরের কম বয়সে মেয়েদের বিয়ে দেয়ার ‘বিশেষ বিধান’রেখে আইনটি সংসদে পাশ করা হলে তা হবে টেকসই উন্নয়ন, নারীর ক্ষমতায়ন ও অধিকার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে বিরাট প্রতিবন্ধক।
বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশ সরকারের অনুসমর্থনকৃত জাতিসংঘ ঘোষিত শিশু অধিকার সনদ অনুযায়ী ১৮ বছরের নিচে সবাই শিশু। এমনকি বাংলাদেশের শিশু আইন ২০১৩ ও জাতীয় শিশু নীতি-২০১১ তে-ও ১৮ বছরের কম বয়সীদের শিশু বলা হয়েছে। তাই ১৮ বছরের নিচে মেয়েদের বিয়ে দেয়ার ‘বিশেষ বিধান’ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ও জাতীয় নীতির সঙ্গেও সাংঘর্ষিক এবং শিশুদের চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন বলে তারা মনে করেন। ১৯২৯ সালের আইনে যেখানে মেয়েদের বিয়ের বয়স ১৮ বছর করা হয়েছে, সেখানে ২০১৬ সালে এসে আইনে ‘বিশেষ বিধান’ রাখা হবে নারীর ক্ষমতায়নে বিশ্বাসী বর্তমান সরকারের একটি পশ্চাৎপদ সিদ্ধান্ত। তা ছাড়া ‘তবে’ বা ‘বিশেষ বিধান’ রেখে কোনো আইন প্রণয়ন করা হলে তা আইনি ভিত্তিকে দুর্বল করে দেয় বলেও তারা মনে করেন। বিশিষ্টজনরা আরো বলেন, আইনে ১৮ বছরের নিচে মেয়েদের বিয়ে দেয়ার ‘বিশেষ বিধান’ রাখা হলে শিক্ষার ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়বে বাংলাদেশ। একইসঙ্গে অপরিণত বয়সে সন্তান ধারণের কারণে বাড়বে মাতৃমৃত্যু হার এবং বাড়বে নারী নির্যাতন। সর্বোপরি, বাধাগ্রস্ত হবে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্র(এসডিজি) অর্জন করা। উল্লেখ্য, মেয়েদের বিয়ের বয়সের ক্ষেত্রে ‘বিশেষ বিধান’ রেখে গত ২৪শে নভেম্বর মন্ত্রিসভায়‘ বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন,২০১৬’ পাশ করা হয়।

পাঠকের মতামত: