আন্তর্জাতিক ডেস্ক :: ভারতের অযোধ্যায় ১৯৯২ সালে বাবরি মসজিদ ভাঙার ঘটনায় প্রথম ব্যক্তি হিসেবে হাতে হাতুড়ি নিয়ে মসজিদের গম্বুজের চূড়ায় উঠেছিলেন বলবীর সিং। মুসলিমদের প্রতি তার এতটাই ঘৃণা আর বিদ্বেষ ছিল যে মসজিদটি ভেঙে ফেলার পর একটি ইট তিনি স্মারক হিসেবে রেখে দিয়েছিলেন, নিজেকে শান্ত করার জন্য।
এই ধ্বংসযজ্ঞের পরপরই গভীরভাবে অনুতপ্ত হন বলবীর সিং। ছয় মাস পরে আরেক কর সেবক (হিন্দু স্বেচ্ছাসেবী যারা মসজিদ ভাঙায় অংশ নিয়েছিলেন) যোগেন্দ্র পালকে সঙ্গে নিয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন তিনি। বলবীর সিং নিজের নাম বদলে রাখেন মোহাম্মদ আমির।
ধ্বংসযজ্ঞে অংশগ্রহণের ঘটনায় তিনি এতটাই অনুতপ্ত হয়েছিলেন যে ১০০টি মসজিদ নির্মাণ করবেন বলে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হন বলবীর। তুরস্কের সংবাদ সংস্থা আনাদোলু জানায়, বাবরি মসজিদ ভাঙার দীর্ঘ ২৮ বছর পর দেখা যাচ্ছে মোহাম্মদ আমির ইতিমধ্যে ৯০টি মসজিদ নির্মাণ করেছেন।
আনাদোলুকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মোহাম্মদ আমির জানান, শিব সেনার দলে যোগ দেওয়ার পর তিনি উগ্রবাদী হয়ে উঠেছিলেন।
তিনি ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘দিল্লির কাছে হরিয়ানায় রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) প্রশিক্ষণ শিবিরে ও পানিপথের কার্যক্রমে নিয়মিত অংশগ্রহণ করতাম।’
আমির বলেন, ‘মসজিদ ভেঙে ফেরার পথে সবাই আমাদের নায়কের চোখে দেখছিল, কিন্তু আমার পরিবারের প্রতিক্রিয়া ছিল পুরোপুরি ভিন্ন যা আমাকে মর্মাহত করে।’
‘আমার পরিবারের লোকজনের হতাশায় মসজিদ ভাঙার উল্লাস নিমিষেই দূর হয়ে যায়। আমি বুঝতে পারলাম অনেক খারাপ কিছু করে ফেলেছি। এরপর সিদ্ধান্ত নিলাম এর মাশুল আমায় দিতে হবে।’
এরপর তিনি আলেম মাওলানা কালেম সিদ্দিকীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং এক পর্যায়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। সে সময় মোহাম্মদ আমির পণ করেন ১০০টি মসজিদ নতুন করে নির্মাণ ও সংস্কার করবেন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে এখন পর্যন্ত ৯০টি মসজিদ নির্মাণ করেছেন।
পাঠকের মতামত: