অনলাইন ডেস্ক :::
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোন কোন শিক্ষক প্রাইভেট কোচিং করান এবং কোচিং সেন্টারে পড়ান, দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমন শিক্ষকদের তালিকা তৈরির জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে স্থায়ী কোচিং সেন্টারের ঠিকানা, মালিক এবং পরিচালকের তথ্য সংগ্রহ করে মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়ার জন্যও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রাইভেট কোচিং বন্ধে নীতিমালা জারির পর এ নীতিমালা তোয়াক্কা না করে প্রাইভেট টিউশনিতে জড়িত রয়েছেন এমন সুনির্দিষ্ট তথ্য রয়েছে শিক্ষামন্ত্রীর কাছে।
শিক্ষা প্রশাসনের নানা বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে সম্প্রতি শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের অনানুষ্ঠানিক নোটে এমন নির্দেশনা দেওয়া হয়। মন্ত্রীর এ নোট প্রকাশের পর মাঠ পর্যায়ের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে।
মন্ত্রী শিক্ষকদের নানা সমস্যা তুলে ধরে বলেন, কিছু শিক্ষক তাদের নিজেদের শিক্ষক হিসেবে পরিচয় দেওয়ার যোগ্যতা হারিয়ে ফেলেছেন। দুর্নীতি, প্রশ্ন ফাঁস, টাকার বিনিময়ে পরীক্ষার হলে শিক্ষার্থীদের প্রশ্নের উত্তর বলে দেওয়া, ক্লাসে না পড়িয়ে প্রাইভেট কোচিংয়ে বাধ্য করা, প্রাইভেট না পড়লে শিক্ষার্থীদের ক্ষতি করা প্রভৃতি হীন অসত্ পথে চলেছেন। এর ফলে শিক্ষার আসল শক্তি শিক্ষকদের মর্যাদা হেয় প্রতিপন্ন হয়েছে। শিক্ষকদের মর্যাদা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে।
শিক্ষার প্রকল্পগুলোর বিষয়ে বলা হয়, ২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রকল্প বাস্তবায়নে ৩ থেকে ৪টি প্রকল্প নির্ধারিত অর্থ ব্যয় করতে বড় ধরনের ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। এমনকি নির্ধারিত সময়ে টাকা ব্যয় করা সম্ভব নয় এ তথ্যটিও কর্তৃপক্ষকে যথাসময়ে জানায়নি। যারা গত অর্থবছরের কাজ বাস্তবায়নে ব্যর্থ হয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। মাঠ পর্যায়ের পরিদর্শন কার্যক্রম জোরদার করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জবাবদিহিতার মধ্যে আনার নির্দেশ দেন তিনি।
শিক্ষা মন্ত্রী তাঁর নোটে মাঠ পর্যায়ে কর্মকর্তাদের বিস্তারিত তথ্য জানতে চান। আঞ্চলিক পরিচালক, উপ পরিচালক, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের মূল কাজ জানতে চেয়েছেন। কাদের গাড়ি আছে, তারা কী কী সুবিধা পান, এদের পদায়ন হয়েছে কিভাবে এবং কোন পদ থেকে তারা পদোন্নতি পেয়েছেন তা জানতে চেয়েছেন মন্ত্রী। এসব কর্মকর্তার দায়িত্ব, কাজ এবং পদমর্যাদা কী, নিয়োগ পদ্ধতি কী, কোনো নীতিমালা আছে কিনা তা নোটে জানতে চাওয়া হয়েছে।
মন্ত্রীর নোটে বলা হয়েছে, শিক্ষা সংশ্লিষ্ট ১৫টি দপ্তরকে কার্যকর ও পরিবর্তন করতে হবে। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) পুনর্গঠন ও কার্যকর করা জরুরি। জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমিকে (নায়েম) নতুন পরিস্থিতির দাবি পূরণের উপযোগী করে গড়ে তুলতে হবে। বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষকে (এনটিআরসিএ) কার্যকর করতে হবে। পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরে (ডিআইএ) পরিবর্তন আনা জরুরি। মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের উন্নয়ন প্রয়োজন। ১০ শিক্ষা বোর্ডের সার্বিক পর্যালোচনা করে কার্যক্রম উন্নত করতে হবে। তবে নোটে শুধু শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের (ইইডি) প্রধান প্রকৌশলী দেওয়ান মোহাম্মদ হানজালা ও তাঁর টিমকে অভিনন্দন জানানো হয়েছে। কারণ ইইডি তাদের প্রকল্প বাস্তবায়নে নির্ধারিত অর্থ ব্যয়ের পর বিশেষ উদ্যোগে আরো ১০০ কোটি টাকার বাড়তি কাজ করেছেন। ইত্তেফাক
পাঠকের মতামত: