ঢাকা,সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪

পেকুয়ায় থানা পুলিশের নামে চাঁদা আদায়

নিজস্ব প্রতিবেদক ::

কক্সবাজারের পেকুয়ায় সড়কের চলাচলকারী যানবাহন ও বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে থানা পুলিশের নাম ভাঙ্গিয়ে প্রতি মাসে অর্ধকোটি টাকা চাঁদা আদায় করছে একটি চক্র। পেকুয়া থানার কথিত ক্যাশিয়ার নেজাম উদ্দিনের নেতৃত্বে এ চক্রটি উপজেলার বেশ কয়েকটি স্থানে পেতেছে চাঁদা আদায়ের স্পট।

স্থানীয়রা জানান,প্রতিদিন পেকুয়া উপজেলার উজানটিয়া, মগনামা ও রাজাখালী ইউনিয়ন থেকে সড়কপথে পরিবহনকৃত লবণ ও চিংড়ী, সাগর থেকে আহরিত মাছ, কৃষিতে উৎপাদিত বিভিন্ন মালামাল এবং ব্যবসায়ীদের আনা ফলমূল, তরকারী ও লাকড়ীর গাড়ী থেকে আদায় করা হয় নির্ধারিত হারে চাঁদা। চৌমুহনীতে চাঁদা আদায়ের জন্য নিয়োগ করা হয়েছে দুইজন ব্যক্তি। তারা ক্যাশিয়ার ও থানা পুলিশের কথা বলে এ সড়কে প্রতিদিন চলাচল করা প্রায় শতাধিক গাড়ি থেকে ৩শ টাকা হারে চাঁদা আদায় করেন। তাদের দাবীকৃত চাঁদা না দিলে গাড়ীর চালক ও ব্যবসায়ীদের পুলিশ দিয়ে হয়রানীর ভয় দেখানো হয়। এছাড়াও উপজেলার কাঠ ব্যবসায়ী, মাছ ব্যবসায়ী, পাহাড়ী ছড়া থেকে উত্তোলনকৃত বালু ব্যবসায়ী, সংরক্ষিত বনের গাছ পাচারকারী ও পাহাড় খেকোসহ আরো বিভিন্ন উৎস থেকে পুলিশের নামে প্রতিমাসে সংগ্রহ করা হয় নির্দিষ্ট হারের চাঁদা।

এব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক ভুক্তভোগীরা চকরিয়া নিউজকে  জানায়, নেজাম উদ্দিন নামের ওই ব্যক্তি পেকুয়া থানার মেচ চালানোর দায়িত্বের কথা বলে তাদের কাছ থেকে এসব চাঁদা আদায় করেন। প্রকাশ্যে দিবালোকে সে পেকুয়ার সর্বত্র থেকে পুলিশের নাম ভাঙিয়ে লাখ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করলেও তাঁর বিরুদ্ধে দৃশ্যত কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না সংশ্লিষ্ট কর্র্তৃপক্ষ। তাই এতে কার্যত ওইসব চাঁদাবাজ ব্যক্তিদের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে পেকুয়া উপজেলার ব্যবসায়ী ও গাড়ীর চালকরা।

স্থানীয় লবণ ব্যবসায়ীরা জানায়, চাঁদা দিতে অসম্মতি জানালে বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হয় তাদের। তাই নিরুপায় হয়ে পুলিশি হয়রানির ভয়ে ওই কথিত ক্যাশিয়ারকে চাঁদা দিতে বাধ্য হয় তারা। লবণের গাড়ি সড়ক পথে যাওয়ার সময় পেকুয়ার চৌমুহনী স্টেশনে দাঁড় করিয়ে গাড়ী প্রতি ২-৫শ টাকা আদায় করে ক্যাশিয়ার নেজাম ও তার লোকজন।

এব্যাপারে জানতে চাইলে পেকুয়া থানার কথিত ক্যাশিয়ার নেজাম উদ্দিন চকরিয়া নিউজকে বলেন, প্রতিমাসে থানার পুলিশ সদস্যদের খাবার মেচ চালাতে প্রায় এক লক্ষ টাকা লাগে। পুলিশের নির্দেশনায় এ প্রক্রিয়ায় মেচের টাকা সংগ্রহ করা হয়।

তিনি আরো বলেন, টাকা উত্তোলনের জন্য আমাকে নিয়োগ দিয়েছে পেকুয়া থানার ওসির বডিগার্ড ও পুলিশ কনস্টেবল মো. নুরুল ইসলাম প্রকাশ ডালিম। আমি নির্দিষ্ট বেতনে এসব কাজে নিয়োজিত রয়েছি। এর ভালমন্দ কিছু জানি না। তারা যদি নিষেধ করে এখনি টাকা তোলা বন্ধ করে দেব।

এব্যাপারে পেকুয়া থানার অফিসার ইনর্চাজ (ওসি) জাকির হোসেন চকরিয়া নিউজকে  বলেন, লবণবাহী গাড়ি বা অন্যান্য গাড়ি চাঁদা আদায়ের বিষয়টি আমার জানা নেই। নেজাম উদ্দিন নামের কোন ব্যক্তিকে আমি চিনি না। পেকুয়া থানায় আমি যোগদানের পর থেকে এমন কাউকে আমি দেখিনি। হয়তো আমি যোগদানের আগে ছিল। তারপরেও আমি বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিবো।

পাঠকের মতামত: