ঢাকা,বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪

নাইক্ষ্যংছড়িতে ২দিনে প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকার ইয়াবা উদ্ধার

নিজস্ব প্রতিবেদক ::
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা ও রামুর কচ্ছপিয়া ইউনিয়নে কোন ভাবে থামানো যাচ্ছেনা মরণ নেশা ইয়াবা ব্যবসা। প্রতিদিন পুলিশ কিংবা বিজিবির সদস্যরা প্রতিযোগীতা মূলক ভাবে কোন না কোন স্থান থেকে ধারাবাহিক অভিযানে উদ্ধার করেছে বিশাল বিশাল ইয়াবার চালান। সম্প্রতি নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা ও রামুর গর্জনিয়া-কচ্ছপিয়া এলাকাটি টেকনাফের পরে ইয়াবার স্বর্গরাজ্যে হিসাবে পরিণত হয়েছে। গত ৯ ও ১০ জুন দুই দিনে পুলিশ ও বিজিবির পৃথক অভিযানে ১ লক্ষ ৭ হাজার ৮৮৯ পিচ ইয়াবা উদ্ধার ও ৪ জনকে আটক করা হয়েছে। এসময় আরো একজন পালিয়ে যায়। উদ্ধার হওয়া এসব ইয়াবার মূল্য আনুমানিক ৩ কোটি ২৩ লক্ষ ৬৬ হাজার ৭ শত টাকা।

বিজিবি ও পুলিশের পৃথক পৃথক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানা যায়, নাইক্ষ্যংছড়ি থানার অভিজ্ঞ চৌকস অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ আলমগীর হোসেন এর নেতৃত্বে এসআই অরুণ কুমার চাকমা,গোলাম মোস্তফা, মফিজুল ইসলাম, এএসআই মোজাম্মেল হকসহ পুলিশের একটি বিশেষ টিম নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ভাল্লুক খাইয়া গ্রাম থেকে ৪৯ হাজার পিচ ইয়াবাসহ দুই মাদক কারবারিকে আটক করেন। বৃহস্পতিবার (১০ জুন) ভোর সাড়ে ৫ টায় নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের ভাল্লুক খাইয়া এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়। তারা হলেন- নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউপির ভাল্লুক খাইয়া এলাকার নুরুল আলম এর ছেলে আমির হোসেন প্রকাশ সোনা মিয়া (২৫) এবং দৌছড়ি ইউনিয়নের হাজীর মাঠ এলাকার মোঃ নুরুল হক এর ছেলে করিমুল মুস্তফা প্রকাশ আইতুয়া( ২২)। তাদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইনে থানায় মামলা রুজু করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। এর পর একইদিন সন্ধায় ফের পুলিশের ঐ টিম ফুলতলী গ্রামে অভিযান চালিয়ে আরো ৪৮৭০০ পিচ ইয়াবাসহ আজিজুল মোস্তফা মনিয়া (২৫) কে আটক করেন। এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে ও মামলার কার্যক্রম চলছে। উল্লেখ্য, ওসি মুহাম্মদ আলমগীর হোসেন নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় যোগদানের পর হইতে ওনার তত্বাবধানে নাইক্ষ্যংছড়ি সদর,ঘুমধুম সীমান্ত থেকে ধারাবাহিক অভিযানে ঘন ঘন ইয়াবাসহ মাদক কারবারি আটক ও বিশাল বিশাল ইয়াবার চালান ও স্বর্ণের বার উদ্ধার করেন পুলিশের এই অভিজ্ঞ কর্মকর্তা। এই জন্য তিনি সুনামের সহিত দায়িত্ব পালন করে পর পর ৬ বার জেলার শ্রেষ্ঠ অফিসার ইনচার্জ মনোনীত হয়ে এলাকায় সর্বমহলে প্রশংসিত হন।
অপরদিকে বুধবার (৯ জুন) বিকাল ৪টা ৩০ মিনিটের সময় ফাক্রিকাটা মোরাপাড়া গ্রামের ইয়াবার বরপুত্র নব্য কোটিপতি আলোচিত আব্দুর রহমানকে গর্জনিয়া ইউনিয়নের রাজঘাট নামক স্থান থেকে প্রথমে ১৪৯ পিচ ইয়াবাসহ হাতেনাতে আটক করেন। এসময় একই এলাকার যুবলীগ নেতা এম সেলিম নামের লোকটি পালিয়ে যায়। এর পর আব্দুর রহমানের স্বীকারোক্তি মতে তার বাড়ীর রান্নাঘর থেকে পলথিনে মোড়ানো অবস্থায় ১০ হাজার পিচ ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করতে সক্ষম হন ১১ বিজিবির জোয়ানরা। বিজিবি জানান,এসব ইয়াবা ব্যবসার সাথে জড়িত রয়েছে যুবলীগ নেতা সেলিম। এছাড়াও বিজিবি কচ্ছপিয়ার ডাক্তার কাটা,ইয়াবা পাড়া নামে খ্যাত হাজির পাড়া,ঘুমধুমসহ ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সীমান্ত এলাকা থেকে অর্ধশতাধিক মাদক ব্যবসায়ীকে আটকসহ দফায় দফায় ইয়াবার চালান ও বেশ ক’টি অস্ত্র উদ্ধার করে ১১ বিজিবির অধিনায়ক ও জোন কমান্ডার লেঃ কর্ণেল শাহ আব্দুল আজিজ আহমেদ। এজন্য তিনিও সর্বমহলে প্রশংসিত হয়ে সুনাম অর্জন করে চলছেন। তবে বিজিবি ও পুলিশের এ দুই কর্মকর্তার এত অভিযানের পরেও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় ঘুমধুম,সদর ইউনিয়ন ও রামুর কচ্ছপিয়া-গর্জনিয়া এলাকায় থামানো যাচ্ছে না মরণ নেশা এ ইয়াবা ব্যবসা। তাই এলাকাবাসী পুলিশ ও বিজিবির পাশাপাশি মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও র ্যাব সংশ্লিষ্ট বাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

পাঠকের মতামত: