ঢাকা,রোববার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪

দেশে শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে : মির্জা ফখরুল

অনলাইন ডেস্ক :::fakrul..

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিভক্তির রাজনীতি দেশে ‘শ্বাসরুদ্ধকর’ পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ করা না গেলে জাতি যে অন্ধকারের মধ্যে ঢুকে পড়েছে, তা থেকে বেরুতে পারবে না বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। এমতাবস্থায় আবারো জাতীয় ঐক্য গড়তে আজ বুধবার সন্ধ্যায় এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ আহবান জানান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব।

তিনি বলেন, আজকে বিভক্তি সর্ব পর্যায়ে। রাজনীতির অঙ্গনে তো আছেই, ক্রীড়াঙ্গনে, সংস্কৃতির অঙ্গনে সামাজিক জীবনে পর্যন্ত বিভক্তি এসে গেছে। শুনলে অবাক লাগে যে বিয়ের অনুষ্ঠানেও পর্যন্ত রাজনৈতিক বিভক্তি এসে পড়েছে। স্বীকার করি আর না করি, দেশে একটা শ্বাসরুদ্ধকর পরিবেশ বিরাজ করছে। আমাদেরকে একেবারে অন্ধাকার গহ্বরের দিকে টেনে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, এই বিভক্তির সংস্কৃতি আমাদের বেশি সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে না, এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে না। আমাদেরকে অবশ্য সামগ্রিকভাবে দেশের উন্নয়নের জন্য ঐক্যে পৌঁছাতে হবে। আমরা বার বার এই জাতীয় ঐক্যের কথা বলছি, এখনো বলছি। তা না হলে আমরা যে অন্ধকারের মধ্যে ঢুকে পড়েছি, তা থেকে বেরুতে পারবো না বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন ফখরুল।

রাজধানীতে সেগুন বাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে ক্রিকেট সংগঠক ও প্রাক্তন খেলোয়াড়দের সমন্বয়ের গঠিত ‘ক্রিকেট অঙ্গন’ নামক এক সংগঠন ২০০১-২০০৪ সালে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) উপদেষ্টা ও গেইম ডেভেলপমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান মরহুম আরাফাত রহমান কোকোর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে। আলোচনা শেষে কোকোর রুহের মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মুনাজাত করা হয়।

আলোচনা সভায় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সাবেক সদস্য খন্দকার জামিল উদ্দিন, কাজী ইউসা মিশু, শাহ নুরুল কবির শাহীন, রফিকুল ইসলাম বাবু, কাইয়ুম চৌধুরী, সাবেক ক্রিকেট খেলোয়াড় তানজীব আহমেদ সাদ, আদনান রহমান দীপন, সেলিম শাহেদ, জাতীয় ফুটবল দলে সাবেক অধিনায়ক আমিনুল হক, বাংলাদেশ ক্রিকেটার্স অ্যাসোসিয়েশনে সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত পাল ছাড়াও অন্যান্য ক্রীড়া সংগঠকরা বক্তব্য রাখেন।

উল্লেখ্য, গত বছরের ২৪ জানুয়ারি কোকো মালয়েশিয়ায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। যিনি বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে।

মির্জা ফখরুল বলেন, কোকো সাহেব বাংলাদেশ পেশাজীবী ক্রিকেটের সূচনা করেছিলেন। এটা দুঃখজনক যিনি শেষের ক্রিকেটের জন্য অবদান রেখেছেন, আজকে তার স্ত্রী ও সন্তানের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড তার মৃত্যুতে যদি একটা শোক বাণী দিতে কিংবা একটা স্মরণসভা করতো তাতে বিসিসিবি ছোট হয়ে যেতো না। আমরা এতো বেশি সঙ্কীর্ণ হয়ে পড়েছি যে, মানুষকে তার অবদানের জন্য স্মরণ করে পর্যন্ত চাই না।

আমাদেরকে আজ বিভাজন থেকে মুক্ত হয়ে সত্যিকার অর্থেই সেই সূর্যকে ছিনিয়েছে আনতে হবে। আমরা যদি রাজনীতির ঊর্ধেব উঠে, সংকীর্ণতার ঊর্ধেব উঠে দায়িত্ব পালন করতে পারি তাহলে এদেশকে দারিদ্র্যমুক্ত, আধুনিক সমৃদ্ধময় বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে পারবো।

জিয়া পরিবারকে পাকিস্তানপন্থী হিসেবে চিহ্নিত করার ক্ষমতাসীন দলের অপচেষ্টার সমালোচনা করে তিনি বলেন, এখনো অনেকে বলেছেন, কোকো সাহেব ক্রিকেট উন্নয়ন কমিটির দায়িত্ব পালনকালে দেশে তিনি ক্রিকেট স্টেডিয়ামের নামকরণ করেছিলেন মুক্তিযোদ্ধাদের নামে। কি দুর্ভাগ্য আমাদের আজ সেই পরিবারকে আজ পাকিস্তানপন্থী পরিবার হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে। লজ্জার কথা। সেই পরিবারকে চিহ্নিত করা হচ্ছে যার পিতা মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা দিয়েছিলেন। কোকো সাহেবের মা যিনি ৯ বছর গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছেন, যিনি মুক্তিযুদ্ধের সময় বন্দি ছিলেন, নির্যাতিত হয়েছিলেন, তাকেও আজকে কথা শুনতে হয়।

কোকোর স্মরণে একটি স্মরণিকা প্রকাশ এবং তার নামে একজন ভালো ক্রীড়া সংগঠক ও খেলোয়াড়কে পুরস্কার প্রদানের উদ্যোগ নিতে আয়োজকদের পরামর্শ দেন মির্জা ফখরুল।

পাঠকের মতামত: