এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া :: কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার কাকারা ইউনিয়নে বনবিট অফিসে কর্মকর্তার সঙ্গে সাক্ষাত করতে গিয়ে লাশ হয়ে ঘরে ফিরেছেন আবদুর রশিদ (৮২) নামের এক বৃদ্ধা। মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে স্থানীয় লোকজন সড়কের পাশে র্মুর্মুষ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে চকরিয়া সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত্যু ঘোষনা করেন।
পরে খবর পেয়ে সকাল সাড়ে দশটার দিকে চকরিয়া থানা পুলিশ হাসপাতালে পৌঁছে প্রাথমিক সুরতহাল রির্পোট তৈরী শেষে ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছে। বৃদ্ধা আবদুর রশিদ উপজেলার সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের ফাইতং সেতু লাগোয়া কাশেম হুজুরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা বলে নিশ্চিত স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিমুল হক আজিম।
মুঠোফোনে মাওয়া যাওয়া আবদুর রশিদের ছেলে মোহাম্মদ মিরাজ বলেন, আমাদের জায়গায় গরুর গোয়ালঘর নির্মাণ করছিলাম। কিন্তু কিছুদিন আগে কাকারা বনবিটের লোকজন সেখানে গিয়ে কাজে বাঁধা দেন। পরে বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে আমার বাবাকে কাকারা বিট অফিসে যেতে বলেন।
কথা মতো আজ মঙ্গলবার (২৮ জুন) সকালে আমার বাবা আবদুর রশিদ মানিকপুর বাড়ি থেকে সিএনজি গাড়িতে করে গিয়ে কাকারা বিট অফিসের সামনে নামে। এরপর সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে জানতে পারি কাকারা বিট অফিসের সামনে রাস্তার পাশে তাকে অজ্ঞান অবস্থায় আমার বাবা পড়ে আছে। ওইসময় স্থানীয় লোকজন তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার থাকে মৃত্যু ঘোষনা করেন।
নিহতের ছেলে মোহাম্মদ মিরাজের অভিযোগ, আমাদের ভোগদখলীয় সরকারি খাস জমিতে গরুর গোয়ালঘর নির্মাণ করা নিয়ে ইতোপুর্বে কাকারা বনবিটের লোকজনের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়েছে। তারপরও আজ তাদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে আমার বাবা লাশ হয়ে বাড়ি ফিরেছে। আমাদের ধারণা, তাকে শাররীকভাবে হেনস্থা করা হয়েছে। তাঁর মাথায় আঘাতের চিহৃ ও নাক দিয়ে রক্ত বের হচ্ছিল।
অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের চকরিয়া উপজেলার কাকারা বনবিট কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম বলেন, আজ সকাল আনুমানিক ৯টার দিকে আমি অফিস থেকে মোটর সাইকেল নিয়ে বের হই। ওইসময় অফিসের সামনে পৌঁছে আবদুর রশিদ নামের ওই মুরব্বীর সঙ্গে দেখা হয়, তাঁর ভাতিজার (আমাদের বনবিভাগের কর্মকর্তা) পরিচয় দিলে তাকে সালাম দিয়ে কথা বলি।
তিনি বলেন, মাত্র এক মিনিট কথা বলে আমি মোটর সাইকেল চালিয়ে মানিকপুর বাগানে চলে যাই। আর মুরব্বীকে বলি আপনি চলে যান, আপনার বিষয়টি বিস্তারিত জেনে পরে জানাবো। তাঁর সঙ্গে আমার পরিচয় ও কথা বলা একটুকু। পরে শুনেছি, তিনি রাস্তায় পড়ে ছিলেন, সেখান থেকে হাসপাতালে নিলে মারা যান।
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) চন্দন কুমার চক্রবর্তী বলেন, রাস্তার পাশে একজন বৃদ্ধা লোক পড়ে আছে দেখে স্থানীয় জনতা উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে সেখানে তিনি মারা যান। খবর পেয়ে চকরিয়া থানা পুলিশের একটি টিমকে পাঠাই।
ওসি বলেন, মৃত্যুর বিষয়টি যেহেতু রাস্তায় হয়েছে, তাই রহস্যজনক মনে হওয়ায় লাশের ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। এখন রির্পোট হাতে আসলে মৃত্যুর বিষয়টি পরিস্কার হওয়া যাবে। অবশ্য এব্যাপারে পরিবার থেকে আজ রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত থানায় কোন অভিযোগও দেয়া হয়নি।
পাঠকের মতামত: