ঢাকা,সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪

এবার নড়েচড়ে বসেছে পেকুয়া বাজারের সেই কথিত দন্ত চিকিৎসক!

ুুপেকুয়া প্রতিনিধি:

 বিভিন্ন পত্রিকায় বস্তুনিষ্ট ও তথ্য নির্ভর সংবাদ প্রকাশের পর এবার চিকিৎসার নামে নিজের প্রতারণা বানিজ্য ধামাচাপা দিতে নড়েছড়ে বসেছে পেকুয়া আলহাজ্ব কবির আহমদ চৌধুরী বাজারের সেই কথিত দন্ত চিকিৎসক! গত কয়েক দিন ধরে চিকিৎসার নামে প্রতারণা বানিজ্য অব্যাহতভাবে চালিয়ে যেতে নানান ধরনের কৌশল গ্রহণ করেছেন। এদিকে গত ২৩ আগষ্ট  বিভিন্ন পত্রিকায় পেকুয়া বাজারের কথিত দন্ত চিকিৎসক মূসার চিকিৎসার নামে প্রতারনা বানিজ্যে নিয়ে একটি সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে পুরো উপজেলা তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়রা জানান, দন্ত চিকিৎসা নিয়ে সরকারী অনুমোদনের কোন ধরনের সনদপত্র না থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে পেকুয়া বাজারে দন্দ চিকিৎসার নামে পেকুয়ার সাত ইউনিয়নের অসংখ্য রোগীর সাথে প্রতারণা করে আসছিল। মূসার প্রতারণা বানিজ্য আড়াল করতে অখ্যাত কিছু পত্রিকায় কতিপয় চিহ্নিত পেশাদার দালালদের মাধ্যমে ‘চাক্যচিক্যময় বিজ্ঞাপন’ প্রচার করে রোগীদের আকৃষ্ট করছিল কথিত দন্ত চিকিৎসক মূসা। চিকিৎসক নামধারী এ ভূঁয়া দন্ত চিকিৎসক মূসার প্রতারনা বানিজ্য বন্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পেকুয়ার সচেতন নাগরিকরা পেকুয়ার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ সংম্লিষ্ট প্রশাসনের সহায়তা কামনা করেছেন।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, পেকুয়া উপজেলার সাত ইউনিয়নের অসংখ্য রোগী কথিত দন্ত চিকিৎসক মূসার কাছ থেকে দাতের চিকিৎসা নিয়েও নিস্তার পায়নি। অনেকেই কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন নামকরা হাসপাতালের দন্ত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছ থেকে চিকিৎসা নিয়ে নিস্তার পেয়েছেন। দন্ত চিকিৎসা নিয়ে মূসার কোন ধরনের সরকারী অনুমোদন প্রাপ্ত সনদপত্র না থাকলেও নিজেকে বেশ বড় মাপের চিকিৎসক পরিচয়ে বীরদর্পে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। আর স্থানীয় প্রশাসনও রহস্যজনক কারণে এ ভূঁয়া চিকিৎসকের বিরুদ্ধে কোন ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করছেনা।

পেকুয়া উপজেলার মগনামা ইউনিয়নের এক নারী জানিয়েছেন, তিনি কয়েকমাস পূর্বে পেকুয়া বাজারের দন্ত চিকিৎসক মূসার কাছে দাতের সমম্যা নিয়ে তার চেম্বারে যান। এসময় তার ওয়াশ করে তাকে একগাদা ঔষধ লিখে দেওয়া হয়। সেই ঔষধগুলো খেয়ে তার দাতের সমস্যা আরো বেড়ে যায়। পরে চট্টগ্রাম মেডিকেলের এক দন্ত চিকিৎসকের কাছ থেকে সুচিকিৎসা পেয়ে নিস্তার পান। ওই নারীর মতো অসংখ্য রোগী প্রতিনিয়তই কথিত দন্ত চিকিৎসক মূসার চেম্বারে এসে প্রতারণা শিকার হচ্ছেন।

সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, পেকুয়া বাজারের পশ্চিম পার্শ্বে গাউছিয়া মার্কেটের ২য় তলায় একটি দোকান ভাড়া নিয়ে শিলখালী ইউনিয়নের বাসিন্দা কথিত দন্ত চিকিৎসক নামধারী মো. মূসা বিগত ৭-৮ বছর ধরে দাতের চিকিৎসার নামে উপজেলার সাত ইউনিয়নের রোগীদের সাথে রমরমা প্রতারণা বানিজ্য চালাচ্ছেন। বিগত কয়েক মাস পূর্বে এক নারীকে অপচিকিৎসা দেওয়ার অভিযোগে পেকুয়ার ইউএনও ও নির্বাহী ম্যাজিষ্টেট মারুফুর রশিদ খান পেকুয়া বাজারের ওই কথিত ভূঁয়া দন্ত চিকিৎসক ছৈয়দ এম এ মূসাকে আটক করে পুলিশ দিয়েছিল। পরে ইউএনওর কার্যালয়ে ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে কথিত দন্ত চিকিৎসক ছৈয়দ এম এ মূসাকে অর্থদন্ডসহ বিশেষভাবে সতর্ক করেছিল। পেকুয়ার নির্বাহী ম্যাজিস্টেট আদালত সূত্রে জানা গেছে, পেকুয়া বাজারের ওই দন্ত চিকিৎসককে একজন মহিলা রোগীকে অপচিকিৎসা দেওয়ার অভিযোগ জরিমানা করা হয়েছিল এবং তাকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাগজপত্র ছাড়া দন্ত চিকিৎসা কার্যক্রম বন্ধ রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।

স্থানীয় এলাকাবাসী ও পেকুয়া বাজারের একাধিক সচেতন ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেছেন, কথিত দন্ত চিকিৎক মূসা আদালতের আদেশ অমান্য করে প্রতিনিয়তই চিকিৎসার নামে সাধারান রোগীদের সাথে প্রতারণা বানিজ্য চালিয়ে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। নিয়মিত কিছু অখ্যাত পত্র-পত্রিকায় বিজ্ঞাপন প্রচার সাধারন রোগীদের আকৃষ্ট করা হচ্ছে। এসব বিজ্ঞাপনে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের দাঁত ও মুখ রোগ বিশেষজ্ঞ ও সার্জন ডা: মুহাম্মদ ফরিদুল ইসলাম নিয়মিত রোগী দেখছেন ছৈয়দ এম এ মুসার ‘কেয়া ডেন্টাল কেয়ারে’ এসব লিখে অপপ্রচারে নেমেছেন। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, কথিত চিকিৎসক ছৈয়দ এম এ মুসার চেম্বারে ডা: ফরিদুল ইসলামকে পাওয়া যায়নি। ডা: ফরিদুল ইসলাম পরিচয়ে মূলত কথিত দন্ত চিকিৎসক নামধারী প্রতারক ছৈয়দ এম এ মূসাই রোগীদের ধন্ত চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।

এসব অভিযোগের ব্যাপারে জানতে পেকুয়া বাজারের কথিত দন্ত চিকিৎসক ছৈয়দ এম এ মূসার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ভাই আমি তো আপনার কোন ক্ষতি করিনাই। এসব আপনি আমার বিরুদ্ধে কি লিখছেন। আসুন আমরা বসে বিবয়টি সমাধান করে ফেলি! ইত্যাদি ইত্যাদি প্রস্তাব এ প্রতিনিধিকে দেওয়া হয়।

পাঠকের মতামত: