হারুনর রশিদ, মহেশখালী:
মহেশখালী উপজেলার হিন্দু সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী শ্রী শ্রী আদিনাথ মন্দিরে শিবচতুর্দশী পূজা ও মেলা শুরু হয়েছে। শুক্ররবার দিন ২৪শে ফেব্রুয়ারি মেলা শুরু এবং সপ্তাহ ব্যাপি এই মেলা চলবে। ২৪শে ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ৯টার সময় শিবচতুর্দশী পূজা শুরু হয়ে ২৫ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ৯টার সময় পূজা শেষ হবে বলে জানান আদিনাথ মন্দির’ পরিচালনাকারী দায়িত্বশীল সুত্র।
প্রতিবছরের মতো এবারও আদিনাথ মন্দিরের শিবদর্শন করার জন্য ভারত, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, মিয়ানমারসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে হাজারো তীর্থযাত্রীর সমাগম ঘটেছে।
আদিনাথ মন্দির এর দায়িত্বে থাকা তশীলদার সুনীল বাবু জানান, দূর-–দূরান্ত থেকে আসা তীর্থযাত্রীদের সেবা দেওয়ার জন্য পূঁজা ও মেলা প্রাঙ্গণে কাজ করছেন শতাধীক স্বেচ্ছাসেবক।
অদিনাথের পাদদেশে অবস্থান নেওয়া; পূজা দিতে আসা দর্শনার্থী শিমূল কান্তি দে জানান ,দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং আবহাওয়া অনূকুলে থাকায় তারা স্বপরিবারে শিবদর্শনের এসেছেন।
মেলার আয়োজকেরা জানান, আদিনাথ মন্দিরে শিবদর্শনের জন্য তীর্থযাত্রীরা সরাসরি গাড়িযোগে চকরিয়ার বদরখালী হয়ে মহেশখালীর আদিনাথে আসে। আগে সমুদ্রপথে কক্সবাজার-মহেশখালী পারাপারের সময়ে দুই জেটিতে তীর্থযাত্রীরা ভোগান্তির শিকার হতেন। বর্তমানে চকরিয়া উপজেলার বদরখালী-ও মহেশখালী উপজেলার কালামারছড়া ইউনিয়নের-চালিয়াতলি ব্রিজহয়ে জনতাবাজার-শাপলাপুর দিয়ে ছোট মহেশখালী ইউনিয়নের শেষ প্রান্তে এসে আদিনাথ মন্দির এলাকায় গাড়িযোগে পৌছানো যায়।
মহেশখালী উপজেলার নিবার্হী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবুল কালাম আদিনাথ মন্দির এলাকা পরিদর্শন করেছেন এবং মেলা পরিচালনার জন্য ১০১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি করে ;শান্তিপূর্ণ ভাবে পূঁজা ও মেলা পরিচালিত হচ্ছে। এসময় স্থানীয় ইউপির চেয়ারম্যান জিহাদ বিন আলী ও আদিনাথ মন্দির কমিটির নেতৃবৃন্দরা ও স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের শীর্ষ নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন। দূরদূরান্ত থেকে আগত দর্শনার্থীদের পদচারনায় মূখরিত আদিনাথ।
নেত্রকোনা থেকে আসা অনিলঘোষ জানান, দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ভাল থাকায় এই বছর প্রচুর দর্শনার্থীর মিলন মেলা ঘটেছে।
মহেশকালীর ঐতিহ্য এই আদিনাথ মেলা। এখানে মুসলিম ,হিন্দু, বৌদ্ধ- সকল সম্প্রদায়ের লোকজন একে অপরের সাথে মিলেমিশে শান্তি পূর্ণ ভাবে বসবাস করেন এবং উৎসব মূখর পরিবেশে মেলা উপভোগ করেন। মেলায় প্রসিদ্ধ খাবার হিসেবে- মিটার জিলাপি সবার কাছে প্রিয়। মেলার জিলাপী না আনলে বাড়ীর বৌ-জিয়েরা বেজায় নাখুশ। তাই হরেক রকমের খাবারের মধ্যে মিটার জিলাপি সকলের কাছে প্রিয়। মেলা থেকে মিটার জিলাপী আনতেই হবে; এমন অবস্থা সকলের ঘরে ঘরে।
মহেশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ পিপিএম বার জানান,উপমহাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী তীর্থস্থান মহেশখালীর আদিনাথ মন্দির। শিবচতুর্দশী পূঁজা ও মেলা সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভাবে সম্পন্ন করতে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করে পূঁজা ও মেলা চলছে। এখানে পুলিশ, আনসার এবং গ্রাম পুলিশ সদস্য মোতায়েন রয়েছে। নিরাপত্তা বেষ্টনীতে ঢাকা পুরো পূঁজা ও মেলা প্রাঙ্গন।
শুক্ররবার সকাল হতে আদিনাথ মন্দির এলাকায় দর্শনার্থীরা আসতে শুরু করেছে। শান্তিপূর্ণ পরিবেশের মধ্যেদিয়ে পূঁজা ও মেলা সম্পন্ন হবে বলে জানান তিনি।
পাঠকের মতামত: