ঢাকা,শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪

ঈদগাঁওতে গড়ে উঠছে অপরিকল্পিত আবাসিক ও বানিজ্যিক ভবন

এম আবুহেনা সাগর, নিজস্ব প্রতিনিধি, ঈদগাঁও ::

জেলা সদর তথা দক্ষিনাঞলের বৃহৎ বাণিজ্যিক কেন্দ্র হয়ে উঠেছে ঈদগাঁও বাজারটি। লবণশিল্প,চিংড়ী শিল্প, কাঠ ও আসবাবপত্র শিল্প, বহুমুখী কৃষিজ উৎপাদন ব্যবস্থা ও বিপুল সংখ্যক প্রবাসীর পাঠানো ডলার সব মিলিয়ে ঈদগাঁও এবং তৎসংলগ্ন এলাকার জনমানুষের অর্থনৈতিক কর্মকান্ড ঈদগাঁও বাজারকে কেন্দ্র করে আবর্তিত। জেলার অন্যান্য এলাকার সাথে তুলনা মূলক অর্থনৈতিক বিচারে ঈদগাঁওর জন সাধারণের অর্থনৈতিক অবস্থা সচ্ছল এবং সমৃদ্ধ। ফলে ঈদগাঁও বাজার নির্ভর মানুষের ব্যবসা-বিনিয়োগ-আবাসন এর চাহিদা মেটাতে প্রতিনিয়ত গড়ে উঠছে অপরিকল্পিত আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবন। বাজার ও তৎসংলগ্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, অব্যবস্থাপনা ও অপরিকল্পিত নগরায়নের খন্ড খন্ড চিত্র। ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে নতুন নতুন ভবন যেমন নির্মিত হচ্ছে তেমনি বহুবছরের পুরানো জরাজীর্ণ ভবনগুলোও হয়ে পড়ছে  ঝুঁকিপূর্ণ। অপরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠা আবাসিক এবং বাণিজ্যিক ভবণগুলোতে নেই কোন নাগরিক সুযোগ সুবিধা, পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা, অগ্নি প্রতিরোধ ব্যবস্থাসহ অন্যান্য সুবিধাদি। জানা যায়,নগর পরিকল্পনার অংশ হিসেবে কোন সুদুর প্রসারী পরিকল্পিত নকশা কিংবা যথাযথ তদারকি কর্তৃপক্ষ বা স্থানীয় প্রশাসনের নজরদারী না থাকার ফলে জলাশয় ও নিচু জমি ভরাট করে গড়ে তোলা হচ্ছে নতুন ভবন। তাছাড়া ভবনের নকশা নির্মাণ প্রকৌশলীর পরামর্শ না নিয়ে স্থানীয় মিস্ত্রীদের নকশা, পরামর্শ ও ব্যবস্থাপনায় ঐ সকল ভবণ নির্মিত হচ্ছে। আবার অনেকে প্রকৌশলীর সাথে পরার্মশ নিয়ে বাড়ীঘর নির্মান করছে। এ ব্যাপারে নগর পরিকল্পনাবিদ ইঞ্জিনিয়ার বদিউল আলমের মতে, প্রকৌশলীর পরামর্শ বিহীন ভবন নিমার্ন করলে নানাবিদ ঝুকি থাকে। মিস্ত্রীদের কাজের মান অক্ষুন্ন রাখতে হবে। দেখা যায়, ঈদগাঁও বাজারের বিভিন্ন পয়েন্টে ভবন নির্মাণের একই চিত্র । আবার অনেকে মালিকের নির্দেশনা মোতাবেক কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। পরিকল্পিত ভাবে আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবন নির্মিত না হওয়ার কারণে একদিকে যেমন বাড়ছে ভূমিধস, জলাবদ্ধতা ও বন্যাসহ নানা পরিবেশ বিপর্যয়, তেমনি বাড়ছে নাগরিক দূর্ভোগ। ঈদগাঁও বাজার এলাকার প্রধান সড়ক থেকে শুরু করে প্রতিটি উপসড়ক অলিগলি ঐসব ভবন নির্মাণের ফলে সংকুচিত হয়ে প্রতিনিয়ত সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। শিশুদের খেলার মাঠ, বিনোদন পার্ক, গাড়ি পার্কিং না থাকার ফলে বাজার এলাকায় বসবাসরত ও ব্যবসায়ীসহ গণমানুষের প্রাত্যাহিক জীবন দূর্ভোগ ও সংকটে নিমজ্জিত।
সুনির্দিষ্ট ও দীর্ঘমেয়াদী নগর পরিকল্পনা না থাকায় ঈদগাঁও বাজার পরিণত হচ্ছে অপরিকল্পিত এক নগরে। একদিকে যেমন ঐসব ভবন নির্মাণের বিল্ডিং কোড মানা হচ্ছে না, অন্যদিকে তেমনি জরাজীর্ণ ফাটলযুক্ত অর্ধশতাব্দীর পুরানো ভবনের পরিমাণও কম নয়। অপরিকল্পিত নগরায়নের ফলে আগামী বেশ কয়েক বছর পর ঈদগাঁও বাজার হয়ে উঠতে পারে পরিত্যক্ত এক ভুতুড়ে নগরে, এমনটাই মন্তব্য করেন ঈদগাঁও বাজারের কয়েক ব্যবসায়ী। তাই অবিলম্বে ঈদগাঁও বাজার উন্নয়নে সমস্ত অবকাঠামোগত পরিকল্পনা গ্রহণ করা এখনো সময়ের দাবী বলে জানান সচেতন ব্যবসায়ীরা।

পাঠকের মতামত: