ঢাকা,সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪

ইসি সচিব বদল নিয়ে বিএনপির প্রশ্ন

BNP-Rizvi-01নির্বাচন কমিশনের নতুন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদকে ‘আওয়ামী ঘরানার’ হিসেবে বর্ণনা করে সরকারের উদ্দেশ্য নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে বিএনপি।

শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, “তার ব্যাকগ্রাউন্ড হচ্ছে আওয়ামী লীগ।… আমাদের ভয় তো এখান থেকে যে, এ সমস্ত ব্যক্তিরা যখন দলীয় আচরণ করে প্রশাসনের থাকার পর, তখনতো স্বাভাবিকভাবে জনগণের মধ্যে এক ধরনের আশঙ্কা তৈরি হয়।”

ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার হেলালুদ্দীন আহমদকে বৃহস্পতিবার ভারপ্রাপ্ত সচিব পদমর্যাদায় নির্বাচন কমিশনের সচিব নিয়োগ দেয় সরকার। আর নির্বাচন কমিশনের সচিব মোহাম্মদ আবদুল্লাহকে পাঠানো হয় শিল্প মন্ত্রণালয়ে।

মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের বদলি নিয়ে নির্বাচন কমিশনার ও সচিবালয়ের এখতিয়ার নিয়ে সমালোচনার মধ্যে ইসি সচিববের বদলির এই আদেশ হয়।

নয়া পল্টনে বিএনপির সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে এসে রিজভী বলেন, “আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, ইসি ও সরকারের প্রযোজনায় এক তরফা নির্বাচনের দিকে তারা এগোচ্ছে কিনা- এ নিয়ে একটা বড় প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।”

বিএনপিই নির্বাচন কমিশনকে বির্তকিত করছে- আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরর এমন অভিযোগের জবাবে রিজভী বলেন, “বিনয়ের সাথে বলতে চাই, সিইসি জনগণের নিকট এমনিতেই বিতর্কিত ব্যাক্তি হিসেবে পরিচিত হয়ে আছেন। সেটা বিএনপির অভিযোগের কারণে নয় বা সমালোচনার কারণে নয়। তিনি (সিইসি) তার কর্মকাণ্ড দিয়ে সেই সমালোচনাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।”

প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদাকে নিয়ে বিএনপির অভিযোগ, অতীতে প্রশাসনে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকার সময় তিনি ‘দলীয় আচরণ করেন এবং ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের আন্দোলনের সময় ঢাকায় গঠিত জনতার মঞ্চে ‘যোগ দিয়ে’ তখনকার প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ‘ছবি ভাংচুর করেন’।

নূরুল হুদা গত সংসদ নির্বাচনে পটুয়াখালীর বাউফলে আওয়ামী লীগের ‘প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট হিসেবে’ কাজ করেন বলেও মন্তব্য করেন রিজভী।

তিনি অভিযোগ করেন, সিইসি এখন অন্য নির্বাচন কমিশনারদের সঙ্গে ‘আলোচনা না করে একতরফাভাবে’ মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের বদলি করছেন।

“আওয়ামী লীগ যে তার এজেন্ডা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কে এম নূরুল হুদা সাহেবকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে, তা জনগণের কাছে স্পষ্ট।”

সংবাদ সম্মেলনে রিজভী বলেন, ক্ষমতাসীনরা তাদের ‘ক্ষমতা কাজে লাগিয়ে’ একতরফা নির্বাচনী প্রচার চালালেও বিএনপিকে ‘ঘরোয়া সভাও করতে দিচ্ছে না’ পুলিশ।

“দেশের ভোটারদের ভোটাধিকার যেহেতু থাকবে না, সেজন্য নির্বাচনী নিয়ম-কানুন মেনে চলা তাদের ধর্তব্যে পড়ে না। ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে তারা নির্বাচনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা চালাচ্ছে।”

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদককে উদ্দেশ করে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, “মানুষের স্বাধীনতা হরণ করে, রাজনৈতিক দলগুলোর সাংবিধানিক অধিকার হরণ করে আপনারাই অর্বাচীন, স্ববিরোধী ও কাণ্ডজ্ঞানহীনের মতো কাজ করছেন, কথা বলছেন। গণতন্ত্রের দেহে যেভাবে ছুরি চালাচ্ছেন, তাতে সকল নাগরিক অধিকার প্যারালাইজড হয়ে গেছে।”

অন্যদের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবুল খায়ের ভুঁইয়া, তৈমুর আলম খন্দকার, কেন্দ্রীয় নেতা শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, সানাউল্লাহ মিয়া, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, মীর সরফত আলী সপু সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

পাঠকের মতামত: