ঢাকা,রোববার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪

আলীকদমে নিয়োগ নিয়ে তুঘলকি কান্ড ॥ ক্ষুব্ধ কর্মচারীর রীট

মমতাজ উদ্দিন আহমদ, আলীকদম ::
শূন্যপদে জনবল নিয়োগ দেওয়ার ৯ মাসের মাথায় পুনরায় একইপদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বিতর্কের সৃষ্টি করেছে আলীকদম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি। নিয়োগ নিয়ে এ তুঘলকি কান্ডে সংক্ষুব্ধ নিরাপত্তাকর্মী আদালতের শরাপন্ন হয়েছেন। অপরদিকে, একইপদে পুনরায় নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে অনড় সংশ্লিষ্টরা।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, আলীকদম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতির স্বাক্ষরে ২০২২ খ্রিস্টাব্দের ১২ আগস্ট একটি জাতীয় দৈনিক একটি আঞ্চলিক পত্রিকায় সংশোধিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এতে ১ জন প্রধান শিক্ষক, ১জন সহকারি শিক্ষক এবং ১ জন করে অফিস সহায়ক দপ্তরী, নিরাপত্তাকর্মী ও পরিচ্ছন্নতাকর্মী নিয়োগ দেওয়ার কথা বলা হয়।

নিয়োগ পরীক্ষা শেষে বিদ্যালয়টির ১১তম সভার কার্যবিবরণীনতে শূন্যপদের শিক্ষক-কর্মচারীদের নিয়োগ প্রদান করা হয়েছিল।

এদিকে, নিয়োগ পাওয়া শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিওভূক্তি করার জন্য যথারীতি ফাইল পাঠানো হয় মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম অঞ্চলের উপ-পরিচালকের কার্যালয়ে। লিখিত পরীক্ষা না নিয়ে শুধুমাত্র মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে কর্মচারী নিয়োগের অজুহাত তুলে চট্টগ্রাম অঞ্চলের উপ-পরিচালকের কার্যালয় থেকে এমপিওভূক্তির ফাইলটি ফেরত পাঠানো হয়। এর জের ধরে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি পূর্বে নিয়োগকৃত কর্মচারীদের বাদ দিয়ে পুনরায় একই পদে নিয়োগ প্রকাশ করেন গত ৩১ অক্টোবর।

পূর্বে নিয়োগ পাওয়ার নিরাপত্তাকর্মী এমডি জিয়াবুল বলেন, আমাদেরকে ২০২৩ সালের ৩০ জানুয়ারী নিয়োগপত্র দেয়া হয়। যথারীতি চাকুরী করছি। ভুল হয়ে থাকলে কমিটি ও মাউশির প্রতিনিধরা ভুল করেছেন। এখন ভোগান্তিতে পড়েছি আমরা। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সিদ্ধান্তে গত ৫ জুন এমপিওভূক্তির জন্য প্রধান শিক্ষক অনলাইনের আবেদন করেন। উপজেলা এমপিওভূক্তি কমিটি সুপারিশ দিয়ে জেলা কমিটিতে অগ্রগামী করেন। জেলা কমিটি যাচাই-বাছাই করে আমাদের এমপিওভূক্তির ফাইলটি চট্টগ্রাম অঞ্চলের উপ-পরিচালক বরাবর পাঠালেও ফাইলটি গত ২ জুলাই ফেরত আসে।

নিরাপত্তকর্মী জিয়াবুলের অভিযোগ, ‘বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পূর্বের নিয়োগ বাতিল না করে এবং আমার কাছ থেকে পদত্যাগপত্র না নিয়েই’ একইপদে গত ৩১ অক্টোবর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এ সিদ্ধান্ত অবৈধ। তাই আমি হাইকোর্টে রিট করার উদ্যোগ নিয়েছি। এটি শুনানীর অপেক্ষায় আছে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার গোলাম ফারুক বলেন, ‘নিয়োগ দেওয়ার সময় কমিটির লোকজনকে লিখিত পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়টি বলা হয়েছিল। কিন্তু তারা বলেছিল, পার্বত্য এলাকায় এসব লাগে না। বিধি লঙ্ঘিত হওয়ায় এমপিও’র ফাইলটি ফেরত এসেছে।’

আলীকদম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি ও বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য দুংড়িমং মার্মা বলেন, কর্মচারী নিয়োগে সময় ভুলক্রমে লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হয়নি। শুধুমাত্র মৌখিক পরীক্ষা নিয়ে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। পরে সংশ্লিষ্ট বিধি-বিধান অনুসারে পুনরায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। এতে আমাদের কোন ধরণের গাফেলতি ছিল না।

 

পাঠকের মতামত: