অনলা্ইন ডেস্ক ::
আজ বাড়ি ফিরে গেছে ৯ দফা দাবিতে শাহবাগে অবস্থানরত শিক্ষার্থীরা। ফলে শাহবাগ ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় যান চলাচল স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। তবে আজ ফিরে গেলেও কাল রবিবার আবারও শাহবাগে অবস্থান নেবে বলে জানিয়েছে আন্দোলনকারীরা।
শনিবার রাজধানীর বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা শাহবাগে অবস্থান নিয়ে ট্রফিক নিয়ন্ত্রণ শুরু করে। এসময় সড়কে যান চলাচলে বাধাপ্রাপ্ত হওয়ায় রাজধানীরজুড়ে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। সকাল ১০টা থেকে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত তাদের এ অবস্থান কর্মসূচি চলে।
শাহবাগে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ এবং চালকের লাইসেন্স ও গাড়ির কাগজপত্র দেখে গাড়ি ছাড়ে তারা। যার কাগজপত্র পাওয়া যায়নি তাকে আটকে রাখা হয়। বিকেলে শিক্ষার্থীরা বাড়ি ফিরে যাওয়া শুরু করলে এই এলাকার যান চলাচল স্বাভাবিক হতে শুরু করে।
শিক্ষার্থীরা সাংবাদিকদের বলেন, সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত আন্দোলন করে আজ বাড়ি ফিরে যাচ্ছি, কাল (রবিবার) আবারও বেলা ১১টায় শাহবাগে এসে আন্দোলনে যোগ দেব। সরকারের শুধু আশ্বাসে আমরা বাড়ি ফিরে যাব না। দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।
তারা বলেন, ৯ দফা দাবিতে আমরা শান্তিপূর্ণ আবস্থান কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছি, কিন্তু ছাত্রলীগ আমাদেরকে হুমকি দিচ্ছে ও আমাদের ওপর হামলা করছে। আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে কেউ বাধা দিলে আমরা চুপ করে থাকবো না। আমাদের কয়জনকে বাধা দেবে? আমরা তো অসংখ্য, তাই আমাদের বাধা দিয়ে রাখতে পারবে না।
অন্যদিকে, আন্দোলন ছেড়ে বাড়ি ফিরে যেতে ছাত্রলীগ কর্মীদের লিফলেট বিলি করতে দেখা গেছে। লিফলেটে শিক্ষার্থীদের ৯ দাবির বিপরীতে সরকারের পক্ষ থেকে ১১টি দাবি বাস্তবায়ন করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।
রবিবার (২৯ জুলাই ২০১৮) দুপুরে ক্যান্টনমেন্ট-ফ্লাইওভার থেকে বিমান বন্দরের দিকের সড়কে নামার মুখে কুর্মিটোলা এলাকায় এমইএস বাসস্ট্যান্ডে ১৫-২০ জন শিক্ষার্থী দাঁড়িয়ে ছিল। জাবালে নূর পরিবহনের একটি বাস ফ্লাইওভার থেকে নামার সময় মুখেই দাঁড়িয়ে যায়। তখন পেছন থেকে জাবালে নূরেরই আরেকটি দ্রুতগতি সম্পন্ন বাস বাম দিক দিয়ে সেটিকে ওভারটেক করে সামনে আসতেই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। নিমিষেই বাসটি ওঠে পড়ে দাঁড়িয়ে থাকা শিক্ষার্থীদের ওপর। চাকায় পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায় দুইজন। এ ছাড়া আহত হয় আরও ১৩ জন শিক্ষার্থী।
নিহত দুজন হলো- শহীদ রমিজউদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী দিয়া খানম মিম ও বিজ্ঞান বিভাগের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র আব্দুল করিম রাজিব।
ওই ঘটনায় গত রবিবার রাতেই নিহত মিমের বাবা জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে ক্যান্টনমেন্ট থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ৩৩। এ ঘটনায় জাবালে নূরের তিনটি বাসের তিন চালক ও দুই হেলপারকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
আন্দোলনে নেমে নৌমন্ত্রীর পদত্যাগসহ ৯টি দাবি করে শিক্ষার্থীরা। দাবিগুলো হলো- দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় দায়ী বেপরোয়া ড্রাইভারকে ফাঁসি দিতে হবে, নৌ-পরিবহনমন্ত্রীকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে, শিক্ষার্থীদের চলাচলে এমইএস ফুটওভার ব্রিজ বা বিকল্প নিরাপদ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে, প্রত্যেক সড়কের দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকায় স্প্রিড ব্রেকার দিতে হবে, সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ছাত্র-ছাত্রীদের দায়ভর সরকারকে নিতে হবে, শিক্ষার্থীরা বাস থামানোর সিগন্যাল দিলে- থামিয়ে তাদের নিতে হবে, শুধু ঢাকা নয়, সারা বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য হাফ ভাড়ার ব্যবস্থা করতে হবে, ফিটনেসবিহীন গাড়ি রাস্তায় চলাচল বন্ধ ও লাইসেন্স ছাড়া চালকরা গাড়ি চালাতে পারবেন না এবং বাসে অতিরিক্ত যাত্রী নেয়া যাবে না।
পাঠকের মতামত: