ঢাকা,শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

চকরিয়ার গরুচোর সিন্ডিকেটের সদস্যরা আটক হলেও : ধরা ছোঁয়ার বাইরে মূলহোতা

কক্সবাজার প্রতিনিধি ::

চকরিয়ার বহুল আলোচিত প্রভাবশালী গরুচোর সিন্ডিকেটের চার সদস্য ৬০ হাজার টাকা মূল্যের একটি গরুসহ লামায় গ্রেফতার হয়েছে। সোমবার রাত ৮টার দিকে বান্দরবান উপজেলার লামা ইয়াংছা বাজারের চেকপোস্টে তল্লাশি চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে লামা থানা পুলিশ। এসময় গরু ভর্তি নাম্বার বিহীন একটি মাইক্রোবাস জব্দ করা হয়। তবে ঘটনার মূলহোতা গরুচোর সিন্ডিকেটের প্রধান এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে বলে জানা গেছে।

লামা থানা পুলিশের হাতে আটককৃতরা হলো তৌহিদুল ইসলাম (২৮), নুরুল আলম নুরু (২২), সাইদুল ইসলাম (২২) ও মাইক্রোবাস চালক মো.সেনাম (৩২)। এরা সবাই চকরিয়া উপজেলার সাহারবিল ইউনিয়নের বাসিন্দা। আটকৃতদের মধ্যে তৌহিদুল ইসলাম নবী হোসেনের নিকট আত্মীয় বলে জানা গেছে।
লামা থানা পুলিশ জানায়, সোমবার রাতে গরু ভর্তি একটি মাইক্রোবাস লামার ইয়াংছা বাজারে পুলিশ ক্যাম্পের কাছে পৌছলে গাড়িটি সন্দেহজনক হওয়ায় গাড়িটি থামিয়ে তল্লাশি করে দায়িত্বে থাকা পুলিশ। এসময় গাড়ির ভেতরে একটি গরু ও চালকসহ চারজন লোক দেখা যায়। পরপরই পেছন থেকে গরুর মালিক ঘটনাস্থলে পৌছে পুলিশকে অবহিত করলে পুলিশ ওই গরুচোর চারজনকে আটক করে।
গরুচোরদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা সাহারবিল ইউনিয়নের গরুচোর সিন্ডিকেটের প্রধান নবী হোসেন ওরফে নবী চৌধুরী সিন্ডিকেটের সদস্য।
লামা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মিজানুর রহমান বলেন, গরুর মালিক লামা বধুঝিরির বাসিন্দা নুর মোহাম্মদ বাদী হয়ে চার গরুচোরের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। তাদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। আটককৃতরা নবী হোসেন জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।

এদিকে ইতোমধ্যে চকরিয়াসহ আশপাশের উপজেলায় গরুচোরি আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। চকরিয়ার গরুচোর সিন্ডিকেটের প্রধান খ্যাত নবী হোসেনের বিরুদ্ধে গত ২২ মার্চ চকরিয়া উপজেলা প্রশাসনের মাসিক আইনশৃঙ্খলা সভায় চকরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান ফজলুল করিম সাঈদী, ভাইস চেয়ারম্যান মকছুদুল হক ছুট্টো ও উপজেলার ১৮ ইউপি এলাকার গরু চুরি বন্ধ করতে গরুচোর সিন্ডিকেটের প্রধান নবী হোসেনকে গ্রেফতারের দাবী জানিয়ে আসছেন। কিন্তু রহস্যজনক কারণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাকে গ্রেফতার করছে না। ফলে জনমনে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।
ইতোমধ্যে ঘটে যাওয়া একাধিক গরু চুরির ঘটনায় থানায় রুজু হওয়া বেশির ভাগ মামলায় ১৬৪ ও ১৬১ ধারায় ধৃত গরুচোরদের স্বীকারোক্তিতে নবী হোসনের নাম প্রকাশ পেয়েছে। কিন্তু অদৃশ্য শক্তির কারণে বারবার পার পেয়ে যাচ্ছে প্রভাবশালী সিন্ডিকেট প্রধান নবী হোসেন। লামায় গত সোমবার আটককৃত চোরেরাও লামা থানা পুলিশের কাছে নবী হোসেন ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে বলে জানিয়ে লামা থানার ওসি মিজানুর রহমান।
স্থানীয় লোকজন জানান, নবী হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগের ফলে একাধিকবার থানা পুলিশ ও র‌্যাব আটক করলেও আইনের ফাক-ফোকরে স্বল্প সময়ে বেরিয়ে এসে ফের শুরু করে একই কাজ। তাকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হলে এলাকায় গরুচুরি অনেকাংশে কমে আসবে বলে ধারণা স্থানীয়দের।

পাঠকের মতামত: