এক সপ্তাহে এল ৩ হাজার ৩৭৩ গরু-মহিষ
টেকনাফ প্রতিনিধি :: কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে টেকনাফের শাহপরীরদ্বীপ করিডোর দিয়ে মিয়ানমার থেকে আসছে গবাদিপশু। তবে এবার করোনা ভাইরাস জনিত সংকটের কারণে পশুর ব্যবসা নিয়ে চিন্তায় রয়েছে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। গত এক সপ্তাহে শাহপরীরদ্বীপ করিডোরে মিয়ানমার থেকে ৩ হাজার ৩৭৩টি গরু-মহিষ এসেছে।
টেকনাফ শুল্ক বিভাগের শুল্ক কর্মকর্তা মো. আবসার উদ্দিন বলেন, সদ্য সমাপ্ত জুন মাসে ৫ হাজার ২১৩ টি গরু ও ৩ হাজার ৩১২টি মহিষসহ ৮ হাজার ৫২৫টি গবাদি পশু এসেছে। এসবের বিপরীতে ৪২ লাখ ৬২ হাজার ৫০০ টাকা রাজস্ব আদায় করা হয়েছে। এরমধ্যে আসন্ন কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে মিয়ানমার থেকে গবাদি পশু আনার জন্য স্থানীয় ব্যবসায়ীদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মিয়ানমার থেকে স্থানীয় ব্যবসায়ী মো. শরিফ মেম্বার, শহিদুল ইসলাম শহীদ, আবু ছৈয়দ মেম্বার, মোহাম্মদ সোহেল, আব্দুল শুক্কুর ও মো. আলমগীরের কাছে চলতি জুলাই মাসে এ পর্যন্ত ৩ হাজারের অধিক গরু-মহিষ এসেছে। এসব ট্রলার থেকে খালাসের পর করিডোরে খোলা জায়গায় রাখা হচ্ছে।
শুল্ক বিভাগ সূত্র জানায়, দেশে মাংসের চাহিদা পূরণ করতে সরকার ২০০৩ সালে ২৫ মে এই করিডোরটি চালু করে। তবে এখনো বৈধ চ্যানেল মিয়ানমার স্থাপন না করায় বিভিন্ন উপায়ে মিয়ানমার থেকে পশু আনা হয়। ক্ষতিপূরণ বাবদ প্রতি গরু ও মহিষ বাবদ ৫০০ টাকা ও ছাগল বাবদ ২০০ টাকা আদায় করে বাংলাদেশে বৈধতা দেওয়া হয়ে থাকে। তবে মিয়ানমারের সাথে বাংলাদেশের এটি গবাদিপশুর একমাত্র করিডোর। সারাবছর এ করিডোর দিয়ে গরু-মহিষ আসলেও এখন কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে শাহপরীরদ্বীপ করিডোর দিয়ে মিয়ানমার থেকে গবাদিপশু আসতে শুরু হয়েছে। এ করিডোর দিয়ে আসা পশু দ্রুত কিনে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, ফেনী, কুমিল্লা ও ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করে থাকেন।
শাহপরীরদ্বীপ করিডোরের ব্যবসায়ী ও সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মো. শরীফ মেম্বার বলেন, করোনা ভাইরাসের কারণে ব্যবসা নিয়ে চিন্তায় স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। এরমধ্যে কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে প্রচুর পরিমাণের গরু-মহিষ আসার কথা রয়েছে। এবার কোরবানিতে ২০ থেকে ২৫ হাজারের বেশি পশু আসার সম্ভাবনা রয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে কোনো ধরনের বাধা ছাড়া গবাদিপশু আসতে পারবে। এতে স্থানীয় লোকজন কম দামে গরু-মহিষ কিনতে পারবে।
বিজিবি টেকনাফ ২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. ফয়সাল হাসান খান জানান, মিয়ানমার থেকে আসা গবাদিপশু গুলো গণনা করার পরে বিজিবির হেফাজতে রাখা হয়। প্রতিটি গরু-মহিষের বিপরীতে ৫০০ টাকার রাজস্ব আদায়ের পরে পশু গুলো ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে গবাদি পশুর সঙ্গে যাতে মিয়ানমার থেকে কোনো ধরনের মাদকসহ অবৈধ কোনো কিছু আনা হলে জড়িত ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে সরাসরি আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে সর্তক রয়েছে বিজিবির সদস্যরা।
পাঠকের মতামত: