ঢাকা,শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪

দুইশ বছর পর এবারের হজ নিয়ে অনিশ্চয়তা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক ::
ইসলাম ধর্মের পাঁচটি স্তম্ভের একটি হলো পবিত্র হজ। বিশ্ব মুসলিমের সবচেয়ে বড় বার্ষিক ধর্মীয় জমায়েত হজ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা আগামী জুলাই মাসের শেষ দিকে।

তবে করোনা পরিস্থিতিকে কেন্দ্র করে সৌদি আরবের পক্ষ থেকে হজ নিয়ে এখনই কাউকে চুক্তি না করার আহ্বান জানানো হয়েছে। সৌদি কর্মকর্তাদের দেওয়া ইঙ্গিত পর্যালোচনা করে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান বলছে, বাতিল হতে পারে এ বছরের হজ।

করোনাভাইরাস পরিস্থিতিকে মাথায় রেখে গত মাসের শুরুর দিকে ওমরাহ স্থগিত করা হয়। অভূতপূর্ব এই পদক্ষেপের সময়ই এ বছরের হজ নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল। ১৯১৮ সালের ফ্লু মহামারির পর এবার প্রথমবারের মতো বন্ধ করে দেওয়া হয় মুসলমানদের সবচেয়ে পবিত্র দুই শহর মক্কা ও মদিনা।

গত দুইশ’ বছরের মধ্যে কখনোই বার্ষিক হজ বাতিল করা হয়নি। তবে এবার করোনাজনিত সামগ্রিক পরিস্থিতিতে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে এই মহামারি নিয়ন্ত্রণে আসতে আরও কয়েক মাস সময় লাগতে পারে।

সৌদি আরবে এখন পর্যন্ত এই ভাইরাসে দেড় হাজার মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। মারা গেছে ১০ জন। মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৭২ হাজার। বুধবার এক টেলিভিশন ভাষণে সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহ বিষয়ক মন্ত্রী মোহাম্মদ সালেহ বিন তাহের বেনতেন বলেছেন, ‘সৌদি আরব সব মুসলমান ও নাগরিকদের নিরাপত্তার জন্য প্রস্তুত। সেকারণে পরিস্থিতি স্পষ্ট হওয়া পর্যন্ত হজের বিষয়ে কোনও চুক্তিতে না যেতে আমরা সব দেশের মুসলিম ভাইদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’

সর্বশেষ ১৭৯৮ সালে বাতিল হয়েছিল হজের আনুষ্ঠানিকতা। এছাড়া মহামারি ও যুদ্ধের কারণে আরও প্রায় ৪০ বার এই বার্ষিক জমায়েত বাতিল হয়েছে। লন্ডনের কিংস কলেজের ওয়ার স্টাডিজের লেকচারার সিরাজ মাহের গার্ডিয়ানকে বলেন, সৌদি কর্তৃপক্ষ মানুষকে মানসিকভাবে প্রস্তুত করছে যে এবারের হজ বাতিল হতে পারে।

সিরাজ মাহের বলেন, ‘তারা অতীতের ঐতিহাসিক উদাহরণ উল্লেখ করছে যেখানে বিপর্যয় বা সংঘাতসহ বিভিন্ন কারণে হজ বাতিল করা হয়েছিল। আমার মনে হয় এটি সেই বৃহত্তর প্রচেষ্টা যাতে মানুষকে আশ্বস্ত করা হচ্ছে যে, হজ যদি বাতিল করা হয়েই থাকে তাহলে তা একেবারেই কোনও অভূতপূর্ব ঘটনা নয়’।

সিরাজ মাহের জানান, ইসলামে কেয়ামতের ইঙ্গিতের যে ভবিষ্যদ্বাণী রয়েছে সেখানে বলা হয়েছে হজ বাতিল হয়ে যাবে। কেউ কেউ বলছেন করোনাভাইরাসের কারণে হজ বাতিল হলে তা কেয়ামত নিকটে আসার ইঙ্গিত বহন করবে। আবার কেউ কেউ বলছেন, তা যথাযথ নয়। কারণ কেয়ামতের ইঙ্গিত দিতে গিয়ে হজের ব্যাপারে মানুষের আগ্রহ হারিয়ে ফেলার কথা বলা হয়েছে, মহামারীর কারণে হজ বাতিলতো আলাদা ব্যাপার।

পাঠকের মতামত: