পেকুয়ায় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে ২১টি ভোট কেন্দ্রকে অধিক ঝুঁকিপুর্ন বলে অবিহিত করা হয়েছে। উপজেলায় ৭টি ইউনিয়নের মোট ৬৩টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহন করা হবে। আগামি ৩১ মার্চ পেকুয়ার সবক’টি ইউনিয়নে এক যোগে নির্বাচন অনুষ্টিত হবে। এসবের মধ্যে সবচেয়ে ঝুঁকিপুর্ন কেন্দ্রগুলোর পরিসংখ্যান ইতিমধ্যে স্থানীয় সুত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে। ইউপি নির্বাচনে ভোট গ্রহনের সময় যেসব কেন্দ্রে প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থীরা নিজেদের বিজয়ী ছিনিয়ে আনতে নির্বাচনে প্রভাবিত করার সুযোগ রয়েছে এসব ঝুঁকিপুর্ন কেন্দ্রগুলোর অবস্থান নির্নয় করেছেন ইউপি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধি চেয়ারম্যান ও সদস্য প্রার্থীরা। নির্বাচনের দিন এসব কেন্দ্রে গোলযোগ ও সহিংসতার পুর্বাভাস দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট এলাকার ভোটাররা। এসব ঝুঁকিপুর্ন ভোট কেন্দ্রগুলো সিংহভাগ বিএনপি-জামাত নিয়ন্ত্রিত প্রার্থী ও সমর্থকদের। পেকুয়া জামাত-বিএনপি অধ্যাসিত এলাকা। এখানে অতীতের সব পরিসংখ্যানে নির্বাচনকে প্রভাবিত করেছে বিএনপি-জামাত। ভোট কেন্দ্র দখল ও ভোট কারচুপিও হয়েছে বিএনপি-জামাত সমর্থকদের অনুকুলে। এর ফলে সুষ্টু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন শংকিত হয়ে পড়েছে সাধারন ভোটাররা। গতকাল শনিবার সরেজমিনে পেকুয়ার সাত ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় অবস্থিত ভোট কেন্দ্র পরিদর্শন করে স্থানীয়দের সাথে আলাপ করে ২১টি ভোট কেন্দ্র ঝুঁকির বিষয়টি উঠে এসেছে। পেকুয়ায় আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে যেসব ইউনিয়নে ঝুঁকিপুর্ন কেন্দ্র রয়েছে এসবের মধ্যে পেকুয়া সদর ইউনিয়নে ৪টি ভোট কেন্দ্র। এগুলোর মধ্যে এ ইউনিয়নের ছালেহা কবির সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আনোয়ারুল উলুম আলিম মাদ্রাসা ও উত্তর মেহেরনামা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। সবজীবনপাড়া, মৌলভী বাজার ফারুখীয়া মাদ্রাসা ও বারাইয়াকাটা ফাযিল মাদ্রাসাকে বারবাকিয়া ইউনিয়নের ঝুঁিকপুর্ন ভোট কেন্দ্র বলে উঠে এসেছে। টইটং ইউনিয়নে চারটি কেন্দ্র অধিক ঝুঁকিপুর্ন বলে মত দিয়েছেন ভোটাররা। এসব কেন্দ্রগুলো হল বনকানন মাদ্রাসা কেন্দ্র, জালিয়ারচাং মাদ্রাসা কেন্দ্র, নাপিতখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও শেয়ার আলী মাষ্টার পাড়া ভোট কেন্দ্র। এছাড়া রাজাখালী ইউনিয়নের বিইউআই মাদ্রাসা কেন্দ্র, বদিউদ্দিন পাড়া এবতেদায়ী মাদ্রাসা কেন্দ্র, লালজানপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মাতবরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রকে অধিক ঝুঁকি নির্নয় করা হয়েছে। মগনামা ইউনিয়নে সাতঘরপাড়া কমিউনিটি সেন্টার ও দক্ষিন মগনামা কাশেমুল উলুম মাদ্রাসা ভোট কেন্দ্রও ঝুঁকিপুর্ন। শিলখালীতে পেঠানমাতবরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও হাজ্বিরঘোনা ভোটকেন্দ্রসহ ২টি কেন্দ্রকে চরম ঝুঁকিপুর্ন বলে ধারনা পোষন করা হয়েছে। উজানটিয়া ইউনিয়নে তিনটি কেন্দ্রকে ঝুঁকিপুর্ন বলে স্থানীয় লোকজন ও ভোটাররা নিশ্চিত করেছেন। এসব কেন্দ্রগুলো হলো পশ্চিম উজানটিয়া জুনিয়র হাইস্কুল, জালিয়াপাড়া ইফাত শেল্টার কেন্দ্র ও মধ্যম উজানটিয়া ভেলুয়ারপাড়া কারিতাস শেল্টার ভোট কেন্দ্র। স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকদের মাঝে সংঘাত তৈরি হয়েছে। নির্বাচনের দিন ঘনিয়ে আসায় উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে চিহ্নিত অপরাধী ও বিভিন্ন মামলার আসামীরা এলাকায় জড়ো হচ্ছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে পেকুয়া উপজেলার সাত ইউনিয়নের সর্বমোট ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা হচ্ছে ৬৩টি। এর মধ্যে মোট ভোট কক্ষের সংখ্যা ৩৫৫টি। নির্বাচন কমিশনের সর্বশেষ হালনাগাদ তথ্যমতে পেকুয়া উপজেলার সাত ইউনিয়নে মোট ভোটার রয়েছে ১লাখ একশত ১১ভোট। ভোটারদের সূত্রে জানা গেছে এ কেন্দ্রের আশেপাশেও চিহ্নিত অপরাধীদের দৌড়ঝাপ রয়েছে। ভোটের দিন অপরাধীরা বিভিন্ন প্রার্থীদের পক্ষে গিয়ে অনাকাঙ্খিত ঘটনার সুত্রপাত করতে পারে এই আশংকা করছেন স্থানীয়রা।
পাঠকের মতামত: