ঢাকা,রোববার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪

বিএনপি নেতা তরিকুল ইসলামের ইন্তেকাল

সি এন ডেস্ক :: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলাম আর নেই। রোববার বিকাল ৫টা ৫ মিনিটে রাজধানীর অ্যাপলো হাসপাতালে তিনি ইন্তেকাল করেন।ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজিউন।

তরিকুল ইসলাম দীর্ঘদিন ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপসহ নানা রোগে ভুগছিলেন। প্রবীণ এ বিএনপি নেতার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এর আগে, তরিকুল ইসলামের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে গত ১০ অক্টোবর পুরান ঢাকার আজগর আলী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তার অবস্থার আরও অবনতি ঘটলে ১২ অক্টোবর অ্যাপোলো হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) ভর্তি করা হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। সেখানে তার ডায়ালাইসিস করা হয়।

‌এরপর তাকে নীবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউতে) রাখা হয়েছিল। সেখানে অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় পরদিন শনিবার তাকে অ্যাপোলো হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

তরিকুল ইসলাম ১৯৪৬ সালের ১৬ নভেম্বর যশোরে জন্মগ্রহণ করেন। রাজনীতিতে হাতেখড়ি ছাত্রজীবনেই। পারিবারিক ব্যবস্থাপনায় তরিকুল ইসলামের বাল্যশিক্ষা শুরু হয়। অতঃপর ১৯৫৩ সালে তিনি যশোর জিলা স্কুলে তৃতীয় শ্রেণীতে ভর্তি হন। একটানা আট বছর শিক্ষা গ্রহণের পর ১৯৬১ সালে তিনি এই স্কুল থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।

১৯৬৩ সালে তিনি যশোর মাইকেল মধুসূদন মহাবিদ্যালয় থেকে আইএ এবং ১৯৬৮ সালে একই কলেজ থেকে তিনি অর্থনীতিতে বিএ (অনার্স) ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৬৯ সালে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে অর্থনীতিতে এমএ ডিগ্রি লাভ করেন।

কলেজের শহীদ মিনার জরাজীর্ণ হওয়ায় ১৯৬২ সালে সহপাঠীদের শহীদ মিনার তৈরি করে পাকিস্তান সামরিক সরকারের রোষানলে পড়েন, গ্রেফতারও হন।

কারাগারে কমিউনিস্ট পার্টির নেতাদের সঙ্গে পরিচয়। সেই সূত্রে দীক্ষা বাম রাজনীতিতে। ১৯৬৩-৬৪ শিক্ষাবর্ষে ছাত্র ইউনিয়নের প্রার্থী হিসেবে যশোর এমএম কলেজ ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।

১৯৬৮ সালে আইয়ুববিরোধী আন্দোলনের জন্য রাজবন্দি হিসেবে যশোর ও রাজশাহীতে কারাভোগ করেন দীর্ঘ ৯ মাস। ১৯৬৯ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে গণআন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়ায় গ্রেফতার হন।

১৯৭০ সালে মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টিতে যোগ দেন তরিকুল। মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। ন্যাপ থেকে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক দল (জাগদল) হয়ে পরে বিএনপিতে যোগ দেন বরেণ্য এ রাজনীতিক।

জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে বিএনপির ৭৬ সদস্যের প্রথম আহ্বায়ক কমিটির অন্যতম সদস্য তরিকুল ইসলাম। সেই সঙ্গে বিএনপির যশোর জেলা আহ্বায়কের দায়িত্ব পান। ১৯৮০ সালে জাতীয়তাবাদী দলের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

পরে পর্যায়ক্রমে তিনি দলের যুগ্ম মহাসচিব, ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব, ভাইস চেয়ারম্যান ও ২০০৯ সালে অনুষ্ঠিত দলের পঞ্চম জাতীয় কাউন্সিলে স্থায়ী কমিটির সদস্য পদ পান।

তরিকুল ইসলাম বিএনপির প্রতিষ্ঠাকালীন আহ্বায়ক কমিটির অন্যতম সদস্য। দলের বিভিন্ন পর্যায়ে কাজ করেছেন তিনি। চারদলীয় জোট সরকারের সময় তিনি তথ্য এবং পরিবেশ ও বনমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।

তিনি দুই পুত্র সন্তানের জনক। স্ত্রী নারর্গিস ইসলাম তার অন্যতম রাজনৈতিক সহযোদ্ধা।

পাঠকের মতামত: