ঢাকা,রোববার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪

চকরিয়ায় ইয়াবা ও আদম ব্যবসায়ীর সাজানো নাটকে আটক আহসান উল্লাহ নিজেই (ফলোআপ)

নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া ::

এক ডির্ভোসি নারী শেফায়েতুন্নেছাকে ফাঁসিয়ে নারী নির্যাতন মামলা থেকে রক্ষা পেতে ইয়াবা দিয়ে ধরিয়ে দেয়ার চেষ্টা বিফলে গেছে সাবেক স্বামী ও দেবরের। অন্যজনকে  ফাসাতে গিয়ে উল্টো মামলায় আসামী হয়ে স্বামী আহমদ উল্লাহ পলাতক থাকলেও গ্রেফতার হয়েছে দেবর ইয়াবা ও আদম পাচারকারী খ্যাত শেখ এইচএম এহেসান উল্লাহও তার দোকান কর্মচারী ইয়াবা নাটকের অন্যতম নায়ক সোর্স ওসমান গনি।
গতকাল রবিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে কক্সবাজারের চকরিয়া পৌরশহরের থানা রাস্তার মাথা থেকে এক হাজার পিচ ইয়াবা   ও নারীসহ তিনজনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে।

গ্রেফতার হওয়া আহসান উল্লাহ মহেশখালীর মাতারবাড়ির হাবিবুর রহমানের ছেলে। তিনি তার ভাই নারী নির্যাতন মামলার এজাহারনামীয় পলাতক আসামী আহমদ উল্লাহ দীর্ঘদিন পূর্বে চকরিয়া উপজেলার বানিয়ারছড়া সীমান্তবর্তী লামা উপজেলা ফাইতং এলাকায় বসতঘর নির্মাণ করে বসবাস করে আসছিল। নাটের গুরু ইয়াবা ও আদম ব্যবসায়ী এহেসান উল্লাহ ফাইতং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করছেন। গ্রেপ্তারকৃত অপর এজাহারনামীয় আসামী ওসমান গণি এহেসান উল্লাহ মালিকানাধীন চকরিয়া সিটি সেন্টারের ৩য় অবস্থিত এসকে ইন্টারন্যাশনাল ট্রাভেল এজেন্সীর কর্মচারী ।

পুলিশ জানায়, রবিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ওসমান গণি নামের এক ব্যক্তি ফোনে করে থানায় খবর দেয় এক নারী ইয়াবা পাচার করছে। এই খবর পেয়ে থানার এসআই সুকান্ত চৌধুরী ও এনামুল হক পুলিশ ফোর্স নিয়ে থানায় রাস্তার মাথায় পৌছে ওই নারী ও সোর্সকে থানায় নিয়ে যায়। এসময় তাদের সাথে যায় ওই আ:লীগ নেতা আহাসান উল্লাহ।

চকরিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মিজানুর রহমান বলেন, সোর্সের ভাষ্য অনুযায়ী থানায় নেয়া নারীর শরীর তল্লাশি করানো হয় মহিলা পুলিশ দিয়ে। শরীরের ইয়াবা না পেয়ে হাতে থাকা বাজারের ব্যাগ তল্লাশি করে পাওয়া যায় এক হাজার পিচ ইয়াবা। ওই ইয়াবা নিয়ে প্রশ্ন করলে শেফায়েতুন্নেছা কোন কিছু জানেনা এবং ইয়াবা কি তাও চিনেন না বললে ঘটনা নিয়ে পুলিশের সন্দেহ জাগে। তিনি আরও বলেন, পরে ঘন্টাব্যাপী সোর্স ওসমান গণিকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। ওই সোর্স জানায়, আদম ব্যাপারী আহাসান উল্লাহর ভাই আহামদ উল্লাহ তার স্ত্রী শেফায়েতুন্নেছাকে তালাক দিয়ে অন্য একটি নারীকে বিয়ে করে। ফলে, শেফায়েতুন্নেছা স্বামী ও দেবরসহ কয়েকজনকে আসামী করে নারী-শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করেছেন। আ.লীগ নেতা আহাসান উল্লাহ নানাভাবে চাপ ও হুমকি-ধমকি দেয়া সত্ত্বেও নারী নির্যাতন মামলা প্রত্যাহার না করায় এহেসান উল্লাহ তার ভাবীকে ইয়াবা দিয়ে ফাসানোর নাটক সাজায়। সেই পুর্ব পরিকল্পনার আলোকে আহসান উল্লাহ তার দোকান কর্মচারী ওসমান গণিকে দিয়ে শেফায়েতুন্নেছার বাজারের ব্যাগে ইয়াবা বড়ি ঢুকিয়ে দেয় এবং তাকে পুলিশকে ধরিয়ে দিয়ে ফাঁসাতে চেষ্টা করে।

এ ঘটনায় নাটের গুরু ইয়াবা ও আদম ব্যবসায়ী শেখ এইচএম এহেসান উল্লাহ,  ওসমান গণি ও আহামদ উল্লাহকে আসামী করে এসআই এনামুল হক বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেছেন।

চকরিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মিজানুর রহমান আরও বলেন, ইয়াবার ঘটনায় সন্দেহ জাগায় তাৎক্ষণিক জিজ্ঞাসাবাদ ছাড়াও এলাকায় ব্যাপক খোঁজ নিয়ে প্রকৃত তথ্য উদঘাটন হয়েছে। এতে ফাঁসতে যাওয়া নারী রক্ষা পেয়েছে। আসামী হয়েছে ওই নারীকে ফাঁসানোর চেষ্টাকারী শেখ এইচএম এহেসান উল্লাহ,  ওসমান গণি ও আহামদ উল্লাহ ।

আজ সোমবার দুপুরে গ্রেফতারকৃতদের আদালতে পাঠানো হয়েছে। পলাতক আহমদ উল্লাহকে গ্রেপ্তার করতে অভিযান চলছে।

পাঠকের মতামত: