ঢাকা,মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪

টিউবওয়েল ও ল্যাট্রিন স্থাপনে অনিয়ম দুর্নীতি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে

কায়সার হামিদ মানিক, উখিয়া ::nol

মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা ক্যাম্পে স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে বিশুদ্ধ পানি স্যানিটেশন কর্মসূচি বাস্তবায়নে টিউবওয়েল এবং ল্যাট্রিন স্থাপনে ব্যাপক দুর্নীতি লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থার অর্থায়নে কর্মসূচি বাস্তবায়নে ফটোসেশনের মাধ্যমে লোকদেখানো টিউবওয়েল এবং ল্যাট্রিন স্থাপনের নামে বেশ কয়েকটি এনজিও সংস্থা লক্ষ লক্ষ টাকা লুটপাট করেছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ত্রাণ বিতরণ পুনর্বাসন কাজের দায়িত্ব নিয়োজিত সেনাবাহিনী ইতিমধ্যে ব্র্যাক এনজিওকে সতর্ক করে দিয়েছে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়। এমনকি খোদ জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সোহরাব হোসেন ব্র্যাক কর্তৃক টিউবওয়েল ল্যাট্রিন স্থাপন নিয়ে আপত্তি তুলেছেন।
মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নির্যাতন, অত্যাচার, ধর্ষণ, হত্যা বাড়ি ঘরের অগ্নিসংযোগ এবং নানামুখী হুমকির শিকার হয়ে লক্ষ লক্ষ রোহিঙ্গা প্রাণের ভয়ে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। বর্তমানে উখিয়াটেকনাফের ১২টি অস্থায়ী ক্যাম্পে রোহিঙ্গারা আশ্রয় নিয়েছে। তাদেরকে মানবিক সহায়তা দিতে দেশিবিদেশি এনজিওরা আর্তমানবতার সেবায় এগিয়ে আসে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ব্র্যাক ইতিমধ্যে উখিয়া টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে হাজার ৩৬৬ টি ল্যাট্রিন হাজার ৪০টি টিউবওয়েল স্থাপন করেছে। সচেতন নাগরিক সমাজ অভিযোগ করে বলেন, ব্র্যাক কর্তৃক ২টি রিং দিয়ে ল্যাট্রিন স্থাপন নিরাপদ নয়। ছাড়াও ৩০/৪০ ফুট গভীরের টিউবওয়েল স্থাপন করলেও অধিকাংশ টিউবওয়েল থেকে পানি আসে না। প্রসংগে জানতে চাইলে ওয়াশের উখিয়া উপজেলা ম্যানেজার ফারহান জানান, প্রতিটি ল্যাট্রিনে ব্যয় হয়েছে থেকে সাড়ে হাজার টাকা পর্যন্ত আর টিউবওয়েলে ব্যয় ধরা হয়েছে ১০ থেকে সাড়ে ১৪ হাজার টাকা পর্যন্ত। জরুরি মুহূর্তে সংস্থার নিয়ম অনুসারে সঠিকভাবে তা বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এতে অনিয়মের কোন সুযোগ নেই। এ ছাড়া বিভিন্ন বেসরকারী প্রতিষ্টান কতৃক স্থাপিত অধিকাংশ টিউবওয়েল এবং ল্যাট্রিন স্থাপনে ব্যাপক দুর্নীতি লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। অনিয়ম-দূর্নীতির মাধ্যমে স্থাপিত সিংহভাগ টিউবওয়েল এবং ল্যাট্রিন ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে বলে রোহিং্গারা অভিযোগ করেছেন।
জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৗশলী মো. সোহরাব হোসেন বলেন, ব্র্যাক যেসব টিউবওয়েল ল্যাট্রিন স্থাপন করেছে তা নিরাপদ নয়। দুই রিংয়ের ল্যাট্রিন খুবই বিপদজনক। আর ল্যাট্রিনের /১০ ফুটের মধ্যে ৩০/৪০ ফুটের টিউবওয়েল স্থাপন স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। তিনি বলেন, পাশাপাশি ল্যাট্রিন টিউবওয়েল স্থাপন করলে ল্যাট্রিনের জমানো মল থেকে ফিকেল কলিফরম নামক এক প্রকার জীবাণু পানির সাথে সংমিশ্রণের আশংকা থাকে। ফলে ওই সব টিউবওয়েলের পানি পান করলে মারাতœ পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশংকা বেশি।
দায়িত্বশীল সূত্রে জানা যায়, আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) ইউনিসেফ, ডব্লিউএফপি, গ্লোবাল ফান্ডের আর্থিক সহযোগিতায় প্রায় কোটি ৮৪ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ব্র্যাক কর্মসূচি বাস্থবায়ন করলেও কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। উপজেলা ম্যানেজার ফারহান বর্তমানে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ল্যাট্রিন টিউবওয়েল স্থাপন কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে বলে স্বীকার করলেও ব্র্যাকের জেলা প্রতিনিধি অজিত কুমার নন্দী তা অস্বীকার করে কর্মসূছি চালু রয়েছে বলে জানান

পাঠকের মতামত: