ঢাকা,বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪

মংডু ছাড়তে দু’দিন সময়, গুলি করে হত্যার হুমকি দিয়ে সেনাদের মাইকিং

hohig১২ সেপ্টেম্বরের (মঙ্গলবার) মধ্যে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমার ছাড়ার আহ্বান জানিয়ে দেশটির সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এলাকায় মাইকিং করা হচ্ছে। এই সময়ের মধ্যে মিয়ানমার ছেড়ে না গেলে গুলি করে মেরে ফেলা হবে বলে প্রকাশ্যে হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
মিয়ানমার থেকে সর্বশেষ পর্যায়ে যেসব রোহিঙ্গা নারীপুরুষ বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করছেন তারা এসব কথা জানিয়েছেন।
শনিবার মিয়ানমার সীমান্তবর্তী কক্সবাজার জেলার উখিয়ার কুতপালং, বালুখালী, পালংখালী এলাকা ঘুরে শরণার্থীদের সঙ্গে কথা বলে পাওয়া গেছে এই তথ্য।বাংলানিউজ
তাদের ভাষ্যমতে, মাইকিং করে বলা হচ্ছে, মিয়ানমার তোমাদের দেশ নয়। তোমরা বাঙালি। তোমাদের দেশ বাংলাদেশ। ১২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে তোমরা মিয়ানমার ছেড়ে চলে যাও। না গেলে তোমাদের গুলি করে হত্যা করা হবে।
উখিয়ার কুতপালং এলাকায় টেলিভিশন উপকেন্দ্রের সামনে দেখা হয় মিয়ানমারের মংডু জেলার থামি থেকে আসা দিলারার সঙ্গে। দিলারা স্বামীসন্তানসহ পাঁচজন নিয়ে এসেছেন। তিনি বলেন, আমাদের পাড়ায় প্রায় ৫০০ পরিবার ছিল। গত এক সপ্তাহে ২১ জনকে কেটে হত্যা করা হয়েছে। এরপর গত (শুক্রবার) থেকে আবার মাইকিং করে আমাদের ১২ তারিখের মধ্যে চলে যেতে বলছে। তাই আর সেখানে থাকার সাহস পাইনি। দুইদিনেই আমাদের পুরো পাড়া সাফ হয়ে গেছে। সবাই বাংলাদেশে চলে এসেছে।
মিয়ানমারের রাচিদং থানার শিলখালী এলাকা থেকে আসা মোক্তার আহমদ (৩০) জানান, ১৫ দিন আগে হঠাৎ করে পাড়ায় ঢুকে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী এলোপাতাড়ি গুলি করতে শুরু করে। মোক্তার গুলিবিদ্ধ হয়ে পালিয়ে আসে বাংলাদেশে। তিনি বলেন, আমার পরিবারে আরও ১১ জন ছিল। গত (শুক্রবার) রাতে তারা সবাই চলে এসেছে। সেখানে নাকি মাইকিং করে চলে যেতে বলেছে। সেজন্য সবাই এসে গেছে।
উখিয়ার বালুখালী মাদ্রাসার সামনে দেখা হয় মিয়ানমারের রাচিদংয়ের ধইনচ্যাপাড়ার বাসিন্দা সাইফুল্লাহর সঙ্গে। তিনি বলেন, মাইকিং করে চলে যেতে বলছে। আবার অতর্কিত এসেও ঘরে আগুন দিচ্ছে। গুলি করছে। বার্মার মগরা যা ইচ্ছা তা করছে। বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীরা জানাচ্ছেন, ১২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে তাদের মিয়ানমার ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মংডু জেলার নাইছ্যাপুর গ্রামের বাসিন্দা মোহাম্মদ আলী বলেন, আমাদের গ্রামে ৬০০ ঘর ছিল। একদিন আগে মাইকিং করে চলে যেতে বলা হল। আমরা চলে এসেছি। এরপর তার সব ঘরে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে সেখানে বার্মার (মিয়ানমার) পতাকা উড়িয়ে দিয়েছে।
মংডু জেলার ভুচিদং থানার বাসিন্দা নূরুল ইসলাম বলেন, এলাকায় মাইকিং করে বলছে, ১২ তারিখের মধ্যে চলে যাও। তোমাদের দেশ বাংলাদেশ। বাংলাদেশে চলে যাও। না হলে কেটে ফেলব।
গত মাসে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে পুলিশ ক্যাম্পে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের হামলার পর সেখানে নতুন করে সহিংসতা শুরু হয়েছে। নির্বিচারে হত্যাযজ্ঞ এবং ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার পর দলে দলে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করতে শুরু করেছেন রোহিঙ্গারা এর মধ্যে শনিবার জাতিসংঘ তথ্য দিয়েছে, বাংলাদেশে ইতোমধ্যে তিন লাখ রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করেছে।
এছাড়া সহিংসতা শুরুর পর মিয়ানমার প্রায় রোহিঙ্গাশূন্য হতে চলেছে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে তথ্য এসেছে

পাঠকের মতামত: