ঢাকা,সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

সংরক্ষিত বনের কাঠ গিলে খাচ্ছে বাইশারীর অবৈধ চার করাত কল

নাইক্ষ্যংছড়ি প্রতিনিধি ::kat

পার্বত্য নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারী ইউনিয়ন সদরে স্থাপিত ৪টি অবৈধ করাত কল গিলে খাচ্ছে বাইশারীর গহীন বনাঞ্চলের কাঠ। পাশাপাশি অবস্থানের কারণে রামু উপজেলার গর্জনিয়াঈদগড় ও কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের কাঠও উজাড় হচ্ছে এসব করাত কলে। এতদিন বিভিন্ন প্রভাবশালীর ছত্রছায়ায় এ সব করলেও এবারই প্রথম সরকার দলীয় স্থানীয় এক নেতার ছবি টাঙিয়ে একটি করাত কলে প্রকাশ্যে চলছে বনের কাঠ চিরাই। যা নিয়ে এলাকায় ব্যাপক তোলপাড়ে সৃষ্টি হয়েছে। খোদ ঐ নেতার নিজ দলের নেতাকর্মীরাও সমালোচনা করছেন এসবের।

সরেজমিনে জানা যায়, বাইশারী ইউনিয়ন সদরে বর্তমানে ৪টি করাত কল রয়েছে। ধামন খারী পাড়ায় ২টি ও দক্ষিণ বাইশারী এলাকায় ২টি। ধামন খালী পাড়ার একটি করাত কলের মালিক হলেন সাবেক এক মেম্বার। আর দক্ষিণ বাইশারী এলাকার একটির মালিক হলেন ঈদগাও’র কথিত এক বিএনপি নেতা ও অপরটির মালিক বাইশারীর এক বিএনপি নেতা এবং সাবেক চেয়ারম্যান। তবে বাইশারী এলাকার দুটি’র মালিক বিএনপি নেতা হলেও বর্তমানে সরকার দলীয় রাজনৈতিক দলের কথিত সংগঠনের নেতাকর্মীদের নামেই চলছে এসব করাত কল।

এভাবে এখানকার সবক’টি করাত কল কারও না কারও নাম ব্যবহার করে প্রতিনিয়ত চলছে, যাতে পরিবেশের ওপর পড়ছে বিরূপ প্রভাব। এদিকে স্থানীয়রা জানান, বাইশারীর একটি করাত কল বিএনপি নেতার মালিকানাধীন হলেও এখন সেটি চলছে স্থানীয় প্রভাবশালী এক আ.লীগ নেতার নামে।

ধামনখালী পাড়ার একটি কলের মালিক ধুংচি মার্মা জানান, তিনি তার কলের লাইসেন্স পেতে আবেদন করেছেন, কিন্ত এখনো অনুমোদন দেয়নি প্রশাসন। আর একটি করাত কলে ছবি ব্যবহারকারী ঐ আ.লীগ নেতাকে মুঠোফোনে বার বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তার সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

বাইশারী বন রেঞ্জের দায়িত্ব পালনকারী কর্মকতা (অতিরিক্ত) এস এম হারুনুর রশিদ জানান, বাইশারীতে বৈধ কোন করাত কল নেই। সরকারের নির্দেশকে অমান্য করে ৪ প্রভাবশালীর ছত্রছায়ায় এসব অবৈধ কাজ হচ্ছে। এ সব বন্ধ করতে তাদের অনেকবার নোটিশও দেয়া হয়েছে। কিন্তু এর পরেও তারা তা বন্ধ করেনি।

নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার এসএম সরওয়ার কামাল জানান, তিনি অবৈধ যে কোন কিছুর বিষয়ে কঠোর। গত ২২ ফেব্রুয়ারি বাইশারীর অবৈধ করাত কলের বিষয়ে নিশ্চিত হয়ে তিনি দু’টি করাত কলের মালামাল জব্দ করে স্থানীয় চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আলমের জিম্মায় জমা দিয়েছেন এবং এসব কলের মালিককে সতর্ক করেছেন। এরপরও কেউ এসব কাজ করলে তিনি তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানান।

পাঠকের মতামত: