আলীকদম (বান্দরবান) প্রতিনিধি :::::
বান্দরবানের আলীকদম উপজেলা সদরের চম্পট পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নামে বরাদ্দকৃৃত স্কুল ইফেক্টিভনেস মডেল (এসইএম) ও উপবৃত্তির অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হুমায়রা বেগম ও সহকারি শিক্ষক মো. সেলিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে এ অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে প্রধান শিক্ষক বলেছেন, এ অভিযোগের সাথে আমি জড়িত নই। আমার বিরুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে এ ধরণের অভিযোগ আনা হয়েছে।
প্রাপ্ত অভিযোগে প্রকাশ, আলীকদম উপজেলায় চম্পট পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২০১৫ সালে এসইএম খাতে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ পাওয়া যায়। বরাদ্দখাতের অর্থ থেকে শিখন শেখানো খাতে ৯২ হাজার, খেলাধুলা ও সাংষ্কৃতিক কর্মকা- খাতে ১০ হাজার, স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও নিরাপদ পরিবেশ খাতে ৯ হাজার, জনসম্পৃক্ততা খাতে ৪৫ হাজার ও বিদ্যালয় সুশাসন খাতে ৩৫ হাজার টাকা খরচ দেখিয়ে ভাউচার তৈরী করেন প্রধান শিক্ষক।
এসব খরচের ভাউচারের সাথে বাস্তবে কোন কাজের মিল খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হুমায়রা ও সহকারি শিক্ষক মো. সেলিম উদ্দিনের যোগসাজশে এ খাতের বেশীরভাগ অর্থ লোপাট করা হয়েছে বলে অভিযোগে প্রকাশ।
অপরদিকে, এ বিদ্যালয়ে গত ১৮ জুন প্রাথমিক শিক্ষার জন্য উপবৃত্তি প্রকল্পের অর্থ বিতরণ কালে উদ্বৃত্ব থেকে যায় ৮৭ হাজার টাকা। অভিযোগে বলা হয়, অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক ও সহকারি শিক্ষক সুকৌশলে দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে উপবৃত্তির অবিতরণকৃত টাকা ভাগ ভাটোয়ারা করে নেন। এ অনিয়মের সাথে জনপ্রতি এক হাজার টাকা হারে সহকারি শিক্ষকদের মাঝেও বিতরণ করেন খোদ প্রধান শিক্ষক।
এ ঘটনা অস্বীকার করেন সহকারি শিক্ষক জাহানারা পারভীন লাকী বলেন, প্রধান শিক্ষকের সাথে আমাদের অনেক পারসোনাল লেনদেন থাকে। তবে এ রকম কোন লেনদেন আমাদের মাঝে হয়নি।
অভিযোগের বিষয়ে অভিযুক্ত সহকারি শিক্ষক মো. সেলিম বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক ছাড়া এ বিষয়ে আমি কি বলবো, একজন সহকারি শিক্ষক হিসেবে আমার যা করণীয় তা-ই আমি করি। প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব তো আমি পালন করি না!’
অভিযোগে আরো বলা হয়, অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক ইতোপূর্বে শিক্ষকদের মধ্যে অন্তর্দ্বন্ধ তৈরী করে নিজে নানা ধরণের ফায়দা হাসিল করে আসছেন। এরফলে বিদ্যালয়টিতে শিক্ষার পরিবেশ বিঘিœত হচ্ছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, শিক্ষকদের মাঝে অন্তর্দ্বন্দের জেরে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক ও অপর একজন সহকারি শিক্ষকের নামে থানায় জিডি করেন অপর একজন শিক্ষক। এর জেরে অভিযুক্ত সহকারি শিক্ষককে অন্য বিদ্যালয়ে বদলী করা হয়।
স্কুল ম্যানেজমেন্ট কমিটি (এসএমসি) সভাপতি নুরুল আলম বলেন, আমার জানামতে এ ধরণের কোন অভিযোগ নেই। সকলে উপবৃত্তির টাকা পেয়েছে। সহকারি শিক্ষক যারা কার্ড রেডি করে তারা সম্ভবত কিছু টাকা পায়। সে ধরণের কিছু টাকা হয়ত শিক্ষকরা পেয়েছেন।
সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসার বাসুদেব কুমার সানা বলেন, ‘এ ধরণের কোন অভিযোগ এখনো আমরা পাইনি। অভিযোগ থাকলে স্থানীয় শিক্ষা অফিসকে জানিয়ে অগ্রসর হওয়া ভাল। উপবৃত্তির টাকা ব্যাংক বিতরণ করে। অনিয়মের বিষয়ে এ পর্যন্ত কোন অভিভাবক আমাকে বলেনি। তারপরও অভিযোগ পাওয়া গেলে তদন্ত করে দেখা হবে’।
পাঠকের মতামত: