বিভিন্ন সূত্রে জানাযায়, দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে চকরিয়া পৌরসভায় কর্মরত রয়েছেন পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা মাস-উদ মোরশেদ। তিনি যোগদানের পর থেকে নানা অনিয়মে জড়িয়ে পড়েন।
অভিযোগ রয়েছে, পৌরসভার মেয়র যিনিই হন তিনিই জিম্মি হয়ে পড়েন তার কাছে । অনেক সাধারণ মানুষ, কাউন্সিলর পৌরসভার উন্নয়নে তার অনিয়ম ও স্বেচ্ছাসারিতার প্রতিবাদ করেছেন । তাদের উল্টো নানাভাবে হুমকি ধমকি দিতেন ।
বিএনপি-জামায়াতের কোনো পরিচিত কর্মী পৌরসভার সচিবের কাছে অভিযোগ বা বিচার নিয়ে গেলে “এখন বিএনপি-জামায়াতের বেইল(মূল্য) নাই” বলে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করার অভিযোগ রয়েছে। এমনকি পৌরসভাকে আওয়ামী দলীয়করণ করারও গুরুতর অভিযোগ করেছেন অনেক বিএনপি-জামায়াতের কর্মীরা।
জানা যায়, অবৈধভাবে টেন্ডার বাণিজ্য করার পাশাপাশি পৌরসভার কিচেন মার্কেটে বাণিজ্য, ফুটপাত বাণিজ্য, সড়ক বাণিজ্য, শালিস বাণিজ্য করে প্রায় শতকোটি টাকার সম্পদ রয়েছে মাসউদ মোর্শেদের । এছাড়া পৌরশহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে উন্নয়নের বরাদ্দকৃত অর্থ থেকে কমিশন হাতিয়ে নিচ্ছেন তিনি । পৌরসভার বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ডে নিজের লোক দিয়ে টেন্ডার বাগিয়ে নিয়ে নিজেই ঠিকাদারী কাজ করেছেন । প্রতিটি টেন্ডার থেকে তাকে ৫% কমিশন দিতে হয়। চকরিয়া সিটি হাসপাতাল,সিটি হোটেল,হামদান সুপার হোস্টেলসহ অনেক প্রতিষ্ঠানে তার মালিকানা রয়েছে । চকরিয়া পৌরসভার কিচেন মার্কেটে রয়েছে একাধিক দোকান। অনুসন্ধানে দেখা যায় চকরিয়া পৌরসভার মৌলবিরকুম বাজারে চকরিয়া পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা মাস উদ মোর্শেদের স্ত্রীর নামে ১০ শতক জমি ক্রয় করেছেন।
২০০৮ সালে চকরিয়া পৌরসভার এক মহিলা কাউন্সিলরকে জিম্মি করে রেজুলেশন খাতায় সাইন নিতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তাৎক্ষণিক অন্য কাউন্সিলরা প্রতিবাদ করে তাকে উদ্ধার করে ।
তার অনিয়মে অতিষ্ঠ হয়ে বিভিন্ন সময়ে চকরিয়া পৌরসভার কাউন্সিলররা স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগ করেছেন। তারা অতি দ্রুত সময়ে এ দূর্নীতিবাজ সচিব মাসউদ মোরশেদকে অন্যত্র বদলির দাবি জানিয়েছিলেন । বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে একাধিকবার তার কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছিলেন কাউন্সিলররা । গত ২০২৩সালে অন্তত দুইবার তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও আন্দোলন করেছিল , কিন্তু অদৃশ্য কারণে বহাল তবিয়তে।
তার নিজ বাড়ি চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলায় হলেও তিনি চকরিয়া সবুজবাগে আবাসিক এলাকায় অনেক মূল্যবান জায়গা ক্রয় করেছে । চট্টগ্রাম শহরে বিভিন্ন এলাকায় রয়েছে একাধিক বিলাসবহুল ফ্লাট ও বাড়ি। তাছাড়া মার্কেট ভবনসহ অসংখ্য জায়গা-জমি ক্রয় করেছেন বলে অভিযোগ আছে এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে । মাসউদ মোরশেদ চকরিয়া পৌরসভায় যোগদান করেন বিগত ২০০৫ সালের ২৭ এপ্রিল। মাঝখানে বদলী হয়ে প্রায় ৩বছর অন্য জায়গায় ছিল । অতি দ্রুত চকরিয়া পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা মাসউদ মোর্শেদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের মাধ্যমে তদন্তের দাবি জানিয়েছেন বিশিষ্টজনেরা।
এইব্যাপারে চকরিয়া পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা মাসউদ মোর্শেদের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করেও কল রিসিভ না করায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
চকরিয়া পৌর প্রশাসক (এডিসি সার্বিক) ইয়ামিন হোসেন বলেন, তার অনিয়ম-দুর্নীতির ব্যাপারে আমি অবগত নয়, যেকোনো বিষয়ে অভিযোগ পাইলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
পাঠকের মতামত: