ঢাকা,রোববার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪

চিকিৎসককে কুপিয়ে হত্যা, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক আহত

khun1কুষ্টিয়া সদরে একজন হোমিও চিকিৎসককে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। এসময় তার সঙ্গে থাকা কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষককে কুপিয়ে গুরুতর জখম করেছে দুর্বৃত্তরা।

সদর মডেল থানার ওসি শাহবুদ্দিন চৌধুরী জানান, শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে বটতৈল ইউনিয়নের শিশিরপাড়া মাঠ এলাকায় হামলার শিকার হন হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক মীর সানাউর রহমান ও তার বন্ধু ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাইফুজ্জামান।

কুষ্টিয়া সদরে বিআরবি ক্যাবলসের সামনে একদল দুর্বৃত্ত তাদের পথরোধ করে এলোপাতারি কুপিয়ে পালিয়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই সানাউরের মৃত্যু হয়।

স্থানীয়রা দ্রুত শিক্ষক সাইফুজ্জামানকে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়।

ইবির বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মঞ্জুর রহমান জানান, সানাউর ও সাইফুজ্জামানের মধ্যে বন্ধুত্ব দীর্ঘদিনের। সানাউর বাউল মতের অনুসারী ছিলেন। তার সঙ্গে সাইফুজ্জামানও প্রায়ই বাউল গানের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যেতেন।

গত দুই বছরে পীর, ফকির ও বাউলসহ সুফিবাদী ধারার বেশ কয়েকজন মানুষকে হত্যার মতো কুষ্টিয়ার এ ঘটনাতেও জঙ্গিদের হাত আছে কি না- সে বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কিছু জানাতে পারেনি পুলিশ।

ওসি জানান, সানাউরের বাসা কুষ্টিয়া শহরের মজমপুরে। শিশিরপাড়া মাঠ এলাকায় এক বাংলো বাড়িতে প্রতি শুক্রবার গরীব রোগীদের বিনা খরচে চিকিৎসা দিতেন তিনি।

সহকর্মীরা জানান, কুষ্টিয়া শহরের কালিশংকরপুরের এক বাসায় ভাড়া থাকতেন সাইফুজ্জামান। তিনি লেখাপড়া করেছেন বিশ্বভারতীতে।

ইবির সহকারী অধ্যাপক মঞ্জুর রহমান জানান, সাইফুজ্জামানের মাথা ও শরীরের উপরের অংশে ধারালো অস্ত্রের সাতটি আঘাত করা হয়েছে। তাকে ঢাকায় পাঠানো হচ্ছে।

কুষ্টিয়া থেকেই গত ১৫ মে শরিফুল ইসলাম ওরফে শিহাব নামে আনসারউল্লাহ বাংলা টিমের সন্দেহভাজন এক সদস্যকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে, যাকে ঢাকার জুলহাজ মান্নান ও মাহবুব রাব্বী তনয় হত্যা মামলায় রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে হরকাতুল জিহাদের (হুজি) কুষ্টিয়া অঞ্চলের প্রধানসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তারের কথা জানায় গোয়েন্দা পুলিশ।

কুষ্টিয়ার পাশের জেলা চুয়াডাঙ্গায় গতবছর ১০ ডিসেম্বর খুন হন স্থানীয় একটি বাউল উৎসবের আয়োজক জাকারিয়া সরদার। তাকেও একই কায়দায় কুপিয়ে হত্যা করা হয়।

তার আগে ২০১৪ সালের নভেম্বরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন চৌদ্দপাই এলাকায় কুপিয়ে হত্যা করা হয় সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এ কে এম শফিউল ইসলাম লিলনকে। তিনিও একজন লালন ভক্ত ছিলেন।

বাংলাদেশে সম্প্রতি সন্দেহভাজন ইসলামি জঙ্গিদের হাতে একের পর এক সেক্যুলার ব্লগার, ইসলামের সমালোচনাকারী ব্যক্তিবর্গ এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকজন খুন হচ্ছেন।

এর আগে এ ধরনের একাধিক খুনের দায় স্বীকার করে বিবৃতি দিয়েছে আল-কায়েদার বাংলাদেশ শাখা এবং ইসলামিক স্টেট।

তবে সরকারের পক্ষ থেকে এসব বিবৃতি নাকচ করে দেয়া হয়েছে।

পাঠকের মতামত: