অনলাইন ডেস্ক ::
ব্যাপক সমালোচনার মুখে বহুল আলোচিত ভ্যাট আইনের কার্যকারিতা আরো দুই বছরের জন্য স্থগিত করতে যাচ্ছে সরকার। প্রধানমন্ত্রীশেখ হাসিনা বুধবার (২৮ জুন) সংসদে বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে বলেছেন, ‘এটা নিয়ে যেহেতু নানা ধরনের কথা হচ্ছে, এটা আগের মতোই থাকবে।’
আগামী ১ জুলাই থেকে নতুন ভ্যাট আইন কার্যকরের পক্ষে ছিলেন অর্থমন্ত্রী। সব পণ্য বিক্রির উপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট ধরেই ২০১৭-১৮ অর্থবছরের জন্য গত ১ জুন চার লাখ ২৬৬ কোটি টাকার বাজেট সংসদে প্রস্তাব করেছিলেন তিনি।
বাজেট প্রস্তাবের পর থেকে ভ্যাট আইন নিয়ে সমালোচনায় পড়েন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। ব্যবসায়ীদের আপত্তি এবং সাধারণ মানুষের উদ্বেগের পাশাপাশি সরকারের শেষ সময়ে এসে ভ্যাট আইন কার্যকরের বিরোধিতা আসে খোদ সরকারি দলের নেতা ও মন্ত্রীদের মধ্য থেকেও।
বুধবার বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী অর্থমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেছেন, ‘ব্যবসায়ীরা তাতে সাড়া দিচ্ছেন না। সেভাবেই করে দেবেন, আগামী দুই বছরের জন্য। বর্তমান পদ্ধতিতেই ভ্যাট আদায় বজায় রাখবেন।’
বিশাল বাজেটের খরচ মেটাতে দুই লাখ ৪৮ হাজার ১৯০ কোটি টাকা জনগণের কাছ থেকে কর ও শুল্ক হিসেবে আদায়ের পরিকল্পনা ছিল অর্থমন্ত্রীর। এর মধ্যে ৯১ হাজার ২৫৪ কোটি টাকা ভ্যাট বা মূল্য সংযোজন কর থেকে আদায়ের লক্ষ্য ধরেছিলেন তিনি। ফলে এখন তার পরিকল্পনা দৃশ্যত বাধাগ্রস্ত হলো।
ভ্যাট আইন প্রণয়নের ইতিহাস তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘মূসক আইনটি ১৯৯১ সালে করা, ২০০৮ সালে সংশোধনের জন্য খসড়া তৈরি হয়।সবার সঙ্গে মতবিনিময় করেই আইনটি আমরা করে দিই ২০১২ সালে। এখন সবাই ভুলেই গেছে যে আইনটি আমরা পাস করে দিয়েছিলাম।’
উল্লেখ্য, এই ভ্যাট আইনটি কার্যকর করে ২০১৬ সালের ১ জুলাই থেকে ১৫ শতাংশ ভ্যাট নেওয়ার পরিকল্পনা ছিল সরকারের। কিন্তু তখন ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে তা এক বছর পিছিয়ে দিয়েছিল সরকার। বর্তমানে আরও দুই বছরে জন্য তা পেছালো।
এখন ব্যবসায়ীরা বিক্রির অনুপাতে ভ্যাট দিচ্ছেন না, যা নতুন আইনে দিতে হবে। এখন তারা বাৎসরিক নির্দিষ্ট একটি অঙ্ক ভ্যাট হিসেবে দিচ্ছেন।
নতুন আইনে ভ্যাটের হিসাব বের করা ক্ষুদ্র বিক্রেতাদের জন্য দুষ্কর হবে বলে ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো দাবি করে আসছিল।
অন্যদিকে ভোক্তা সংগঠন ক্যাব বলছিল, ১৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে গেলে বাজারে পণ্যমূল্য বাড়বে এবং তাতে সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হবে ক্রেতারা।
পাঠকের মতামত: