ঢাকা,রোববার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪

সড়কের বাঁক কমাতে কাটা হচ্ছে ১৬ পাহাড়

পার্বত্য জেলা সংবাদদাতা ::

পার্বত্য এলাকায় পাহাড় কাটা চলছে। অতীতে পাহাড় ধসে প্রাণহানি ঘটলেও থামছে না পাহাড় কাটা। খাগড়াছড়ি, রাঙামাটিসহ পার্বত্য এলাকায় গত বর্ষায় ভয়াবহ পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে। অতি বৃষ্টিতে পাহাড় ধসের ঘটনায় পার্বত্য চট্টগ্রামে স্মরণকালের বিপর্যয় নেমে আসে। এতে প্রাণ হারান ১৬৬ জন এবং আহত হয় ২২৭ জন। এতে প্রায় ৩৭৫০টি বাড়ি সম্পূর্ণ এবং ৩৬ হাজার ৬৩৭টি বাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পাহাড় ধসের ক্ষয়ক্ষতি আজও কাটিয়ে উঠতে পারেনি ক্ষতিগ্রস্তরা।

অপরিকল্পিতভাবে পাহাড় কর্তন, বন ধ্বংস, পাহাড়ি মাটির গঠন (বালু ও মাটিযুক্ত পাহাড়), উন্নত প্রযুক্তি ও প্রকৌশল ব্যবহার করে পাহাড় শাসন না করার কারণে এই বিপর্যয়। পাহাড় ধসের মতো ঘটনা ঘটলেও বন্ধ হচ্ছে না পাহাড় কাটা। সড়কের উন্নয়ন কিংবা সেতু নির্মাণসহ নানান কাজে কাটা হচ্ছে পাহাড়। এতে পরিবেশগত ছাড়পত্র নেওয়ার প্রয়োজন মনে করছে না।

সড়কের উন্নয়ন বা বাঁক কমানোর জন্য বড় আকারে পাহাড় কাটছে খাগড়াছড়ি সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ)। কিন্তু পাহাড় কাটার ক্ষেত্রে মানা হচ্ছে না উন্নত প্রযুক্তি ও প্রকৌশল।

খাগড়াছড়ি আলুটিলা সড়কে উঁচু পাহাড় কেটে সমান করে দিচ্ছে সওজ। পাহাড় কাটার স্থানেই বসনো হয়েছে সড়ক উন্নয়নের সাইনবোর্ড। অভিযোগ আছে, পরিবেশ মন্ত্রণালয় কিংবা প্রশাসনের ছাড়পত্র ছাড়াই পাহাড় কাটছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ)। খাগড়াছড়ি সড়ক ও জনপথের অধীনে পাহাড় কেটে সড়কে উন্নয়নের কাজ চলছে।

সরেজমিনে, খাগড়াছড়ি–চট্টগ্রাম সড়কের আলুটিলায় সংলগ্ন সড়কের লাগায়ো প্রায় ৮০–১০০ সড়কের লাগায়ো উঁচু পাহাড় কাটা হচ্ছে। দুইটি এক্সকেভেটর দিয়ে পাহাড় কেটে মাটি সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। চার কিলোমিটার সড়কের প্রায় ১৬টি পাহাড় কেটেছে সড়ক ও জনপদ বিভাগ। এর মধ্যে শিলাছড়ি থেকে শুরু করে আলুটিলা পর্যটন, টিএনটি পাহাড়সহ একাধিক স্থানে ১৬টি পাহাড়ে বিশাল অংশ কেটে সাবাড় করে দিয়েছে সংস্থাটি। বর্ষা মৌসুমে প্রবল বর্ষণ হলে পাহাড়টি সড়কের উপর ধসে পড়ার আশংকা রয়েছে।

সড়ক ও জনপদ (সওজ) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোসলেহ উদ্দিন চৌধুরী জানান, বর্তমানে এই সড়কে যানবাহন চলাচল বেড়েছে। আলুটিলা সড়কের বাঁক কমানোর জন্যই পাহাড়গুলো কাটা হয়েছে।

এদিকে সোমবার খাগড়াছড়িতে আয়োজিত পাহাড় ধস সর্ম্পকে আগাম সতর্কতামূলক কর্মশালায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের প্রকল্প পরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব আবু সৈয়দ মোহাম্মদ হাশিম বলেন, বাংলাদেশে পাহাড় কাটার ক্ষেত্রে উন্নত প্রযুক্তি ও প্রকৌশল ব্যবহার করা হয় না। পাহাড় কাটার ক্ষেত্রে পুকুর কাটার ন্যায় চার স্তরের মাটি কাটার নিয়ম থাকলেও আমাদের দেশে তা মানা হয় না।

আলুটিলায় সড়কের বাঁক কমানোর জন্য পাহাড় কাটা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মূলত চার স্তরের পাহাড় কাটলে এটি ভেঙে পড়ার সম্ভাবনা কম। কিন্তু ঠিকাদারদের খরচ বেশি হওয়ার কারণে তারা সেই পদ্ধতি অনুসরণ করে না।

পাঠকের মতামত: