ঢাকা,সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪

সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত আর নেই

suronjitনিজস্ব প্রতিবেদক ::
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য, প্রবীণ পার্লামেন্টারিয়ান সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত আর নেই।  রাজধানীর ল্যাব এইড হাসপাতালে রোববার ভোররাতে তার মৃত্যু হয়। এর আগে তিনি ওই হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) লাইফ সাপোর্টে ছিলেন।

সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের ব্যক্তিগত সহকারী কামরুল হক জানান, রাত পৌনে চারটার দিকে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের শারি​রীক অবস্থার অবনতি হয়। তখন চিকিৎ​সকেরা হাসপাতালে ছুটে আসেন। ৪টা ২৪ মিনিটে চিকিৎ​সকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বৃহস্পতিবার অসুস্থবোধ করছিলেন। শুক্রবার সকালে তাকে ল্যাব এইডে ভর্তি করা হয়। তার ফুসফুসে সংক্রমণ ধরা পড়ে। শনিবার সন্ধ্যায় তার অবস্থার অবনতি হয়। রাত নয়টার দিকে তাকে লাইফ সাপোর্ট দেওয়া হয়।

রাতে ল্যাবএইড হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে সুনামগঞ্জের এ সংসদ সদস্যের পরিবারের সদস্যরা রয়েছেন। পরে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ নেতাকর্মী ও শুভানুধ্যায়ীরা হাসপাতালের বাইরে ভিড় করেন।

সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের জন্ম ১৯৪৬ সালে সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই উপজেলার আনোয়ারপুর গ্রামে। ছাত্র জীবনেই তিনি বামপন্থী আন্দোলনের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। হাওরাঞ্চলের ‘জাল যার জলা তার’ আন্দোলনে দীর্ঘদিন তিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি সুনামগঞ্জ-২ আসন থেকে স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে মোট সাতবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এর আগে সত্তরের নির্বাচনেও তিনি প্রদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন।

প্রবীণ এ পার্লামেন্টারিয়ান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করেন। পরে এলএলবি ডিগ্রি সম্পন্ন করে আইন পেশায় নিযুক্ত হন।

নব্বই দশকে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত আওয়ামী লীগে যোগ দেন। এর আগে তিনি ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি ও একতা পার্টির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর রেলমন্ত্রী নিযুক্ত হন। যদিও সহকারীর অর্থ কেলেঙ্কারির ঘটনার পর তিনি পদত্যাগ করেন। তবে প্রধানমন্ত্রী সেই পদত্যাগপত্র গ্রহণ না করে তাঁকে দপ্তরবিহীন মন্ত্রী হিসেবে মন্ত্রিপরিষদে রাখেন। এর আগে ১৯৯৬ সালে তিনি প্রধানমন্ত্রীর সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সংসদে সব সময় সরব এ সংসদ সদস্য একজন অভিজ্ঞ সংবিধান বিশেষজ্ঞ হিসেবে সুপরিচিত ছিলেন। 

ওদিকে সকালে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেছেন সেনগুপ্ত’র প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন ও শেষকৃত্যের সময়সূচী চূড়ান্ত করা হয়েছে তার পরিবারের সাথে আলোচনা করে।
সে অনুযায়ী আজ বিকেল তিনটায় তার মরদেহ সংসদ ভবনে নেয়া হবে এবং কাল তার নির্বাচনী এলাকা দিরাইতে শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হবে।

পাঠকের মতামত: