ঢাকা,সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪

সিলেটে বোমা বিস্ফোরণে দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ নিহত ৬, আহত ৩০

নিজস্ব প্রতিনিধি :::

   সিলেটের শিববাড়ী পাঠানপাড়া এলাকার স্থানীয় জামে মসজিদের কাছে শনিsyl-720x540-720x540বার সন্ধ্যায় বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায়  দুই পুলিশসহ ছয় জন নিহত হয়েছেন।

নিহতরা হলেন- জালালাবাদ থানার ওসি (তদন্ত) মনিরুল ইসলাম, পুলিশ সদস্য চোধুরী মুহাম্মদ আবু কায়সার দীপু, দক্ষিণ সুরমা উপজেলা ছাত্রলীগের উপ পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক জান্নাতুল ফাহিম, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ওয়াহিদুল ইসলাম অপু , শহীদুল ইসলাম ও আব্দুল কাদের। বাংলা ট্রিবিউনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক দেবপদ রায়।  তিনি বলেন, ‘নিহতদের শরীরের বিভিন্নস্থানে স্প্লিন্টারের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ’

রাতে জালালাবাদ থানার অপারেটর আমজাদ হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, ওসি (তদন্ত) মনিরুল ইসলাম ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিসাধীন অবস্থায় রাত ১টা ৫০ মিনিটে মারা যান। ছাত্রলীগ নেতা জান্নাতুল ফাহিমও রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। বাংলা ট্রিবিউনকে তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন সিলেট মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুল বাকির রুম্মান।

এছাড়াও ওই ঘটনায় বোমার স্প্লিন্টারের আঘাতে আরও ৩০ ব্যক্তি আহত হয়েছেন বলেও জানান তিনি। আহতদের ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে কয়েকজনের নাম জানা গেছে। তারা হলেন-মোস্তাক আহমেদ, নাজিমউদ্দিন, রোমেল আহমেদ, অহিদুল ইসলাম, ইসলাম আহমেদ, নুরুল আলম, বিপ্লব হোসেন, আব্দুর রহিম, সত্তারউদ্দিন, রাহিম মিয়া, হোসেন আহমেদ, মামুন আহমেদ, ফারুক মিয়া, সালাউদ্দিন শিপার, গুলজার আহমেদ, রিমন আহমেদ ও আজমল আলী। উপপরিচালক দেবপদ রায় বলেন, আহতদের মধ্যে পাঁচ জনের অবস্থা গুরুতর। ২৪ ঘণ্টা অতিক্রম না করা পর্যন্ত তাদের আশঙ্কামুক্ত বলা যাচ্ছে না।সিলেটের পাঠানপাড়ায় বোমা বিস্ফোরণে আহতদের আনা হয়েছে ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। ছবি: তুহিনুল হক তুহিন

এদিকে পুলিশের পক্ষ থেকে সিলেটের স্পেশাল ব্রাঞ্চের সাব ইন্সপেক্টর মনিরুল ইসলাম (৩০) এ ঘটনায় মারা গেছেন বলে জানানো হলেও রাত ১০টা ৫০ মিনিটে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার জেদান আল মুসা নিশ্চিত করেছেন মনিরুলের জ্ঞান ফিরেছে। তিনি বেঁচে আছেন। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য আজ রাতেই ঢাকায় পাঠানো হচ্ছে।সিলেটে বোমা বিস্ফোরণে আহতদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। ছবি: তুহিনুল হক তুহিন

সিলেট মহানগরের শিববাড়ির ‘আতিয়া মহল’ থেকে আধা কিলোমিটার দূরে পাঠানপাড়া এলাকার জামে মসজিদের কাছে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় ওই ‘বোমা হামলা’র ঘটনা ঘটে।  এ সময় ঘটনাস্থলের ৬০ গজের মধ্যেই সেনাবাহিনীর একটি প্রেস ব্রিফিং চলছিল।
এ বিষয়ে সিলেট মহানগরের অতিরিক্ত পুলিশ  কমিশনার রোকনুদ্দিন ঘটনার পরপরই বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, ‘হামলার খবর পেয়েছি। ঘটনাস্থলে একটি মোটরসাইকেল পড়ে রয়েছে। আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’

উল্লেখ্য, জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে ‘আতিয়া মহল’ নামের ওই বাড়িতে অভিযান চালাচ্ছে সোয়াট ও সেনাবাহিনীর প্যারা-কমান্ডো বাহিনী। ওই বাড়ি থেকে উদ্ধার করা ৭৮ জন নারী-পুরুষ ও শিশুর ব্যাপারে তথ্য দিতে সেনাবাহিনীর আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ের সময় এর অদূরে এই বিস্ফোরণটির ঘটনা ঘটে।

প্রসঙ্গত, সিলেটের দক্ষিণ সুরমা থানাধীন শিববাড়ী এলাকায়  ‘আতিয়া মহল’ নামে পাঁচতলা একটি বাড়ির নিচতলায় জঙ্গিরা অবস্থান করছে বলে জানতে পারে পুলিশ। শুক্রবার সকাল ৮টার দিকে আতিয়া মহল বাড়ির ভেতর থেকে বাইরের দিকে গ্রেনেড ছোড়া হয় বলে জানায় স্থানীয়রা। এরপর ‘আতিয়া মহল’ঘিরে রাখে পুলিশ।  জঙ্গি আস্তানায় অভিযান পরিচালনার জন্য শুক্রবারা বিকেলে সোয়াট টিম ও রাত সাড়ে ৭টার দিকে সেনাবাহিনীর প্যারা-কমান্ডো বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। আর অভিযানে নেতৃত্ব দিতে রাত চারটার দিকে সিলেটে ঘটনাস্থলে পৌঁছান সিটিটিসি ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম। শনিবার ভোরে  আতিয়া মহলে অভিযান শুরু করে সোয়াট ও সেনাবাহিনীর প্যারা-কমান্ডো বাহিনী।

পাঠকের মতামত: