অনলাইন ডেস্ক ::
সিগারেটসহ তামাকপণ্যের প্যাকেট ও কৌটার উপরের অর্ধেক জুড়ে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী ছাপাতে তামাক পণ্য উৎপাদকদের নির্দেশ দিয়েছে সরকার।
জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল বৃহস্পতিবার একটি গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে এ নির্দেশনা কার্যকর করতে বলেছে।
তামাকবিরোধী সংগঠনগুলো সরকারের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে বলেছে, তাদের পাশাপাশি গণমাধ্যম, বিশেষ করে এন্টি টোবাকো মিডিয়া অ্যালায়েন্সের (আত্মা) দৃঢ় অবস্থানের কারণেই এই সাফল্য এসেছে।
ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ আইনের ১০ ধারা অনুযায়ী সব তামাকজাত পণ্যের প্যাকেটের উপরের অংশে ৫০ শতাংশ জুড়ে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী ছাপানোর কথা। কিন্তু বাংলাদেশ সিগারেট ম্যানুফ্যাচারার্স অ্যাসোসিয?েশনের (বিসিএমএ) দাবি মেনে আইন মন্ত্রণালয় প্যাকেটের নিচের অর্ধেকজুড়ে সতর্কবাণী মুদ্রণের সাময়িক অনুমতি দেয়।
জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল গতবছর ১৬ মার্চ এ বিষয়ে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে এবং ১৯ মার্চ থেকে তামাকপণ্যের মোড়কে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী প্রকাশের নির্দেশনা কার্যকর হয়।
তামাকবিরোধী সংগঠনগুলো সে সময় আইন মন্ত্রণালয়ের ওই সিদ্ধান্তকে ‘অবৈধ’ আখ্যায়িত করে। এরপর বেসরকারি সংস্থা উবিনিগ ও তামাকবিরোধী সংগঠন প্রজ্ঞা ও প্রত্যাশা হাই কোর্টে রিট আবেদন করে।
এই প্রেক্ষিতে গতবছর ৮ সেপ্টেম্বর হাই কোর্ট একটি রুল জারি করে জানতে চায়, আইন ভঙ্গ করে সচিত্র সতর্কবাণী মুদ্রণের ওই গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না।
অ্যাকশন অন স্মোকিং অ্যান্ড হেলথ বাংলাদেশ (অ্যাশ) নামের আরেকটি সংগঠনের করা আরেকটি আবেদনে ওই রুল স্থগিত হয়ে গেলেও চলতি বছরের ১৯ মার্চ অ্যাশের আবেদন খারিজ হয়ে যায় এবং নতুন গণবিজ্ঞপ্তি জারির পথ তৈরি হয়।
তামাকবিরোধী সংগঠনগুলোর ভাষ্য, বাংলাদেশে ১৫ থেকে ৪৫ বছর বয়সীদের ৪৫ শতাংশই কোনো না কোনোভাবে তামাক সেবন করে।
তামাকজনিত স্বাস্থ্য জটিলতায় বাংলাদেশে প্রতিবছর ৫৭ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। আরও প্রায় তিন লাখ মানুষকে বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগতে হয়।
আইন অনুযায়ী, তামাকজাত পণ্যের প্যাকেট, কার্টন বা কৌটায় সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী মুদ্রণের নির্দেশনা না মানলে সর্বোচ্চ ছয় মাসের কারাদ- বা দুই লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা অথবা উভয় দ- হতে পারে। একই অপরাধ দ্বিতীয়বার কলে দ-ের পরিমাণ দ্বিগুণ হয়ে যাবে।
পাঠকের মতামত: