টাকা-পয়সার জের ধরে যশোরে চাং হিং সং (৪৫) নামে এক চীনা নাগরিককে খুন করা হয়েছে। তিনি চীন থেকে ইজিবাইকের ব্যাটারি আমদানি করে এ অঞ্চলে ব্যবসা করতেন।
ঘটনাটি ঘটেছে যশোর উপশহরের মহিলা কলেজের পাশে সেক্টর নম্বর ২, বাড়ি নম্বর ৩৪-তে।
ওই চীনা নাগরিকের সহকারী নাজমুল হাসান পারভেজ (২৬) ও তার ভাইপো মুক্তাদির রহমান (২০) তাকে রড দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে তাকে ব্লেড দিয়ে কেটে বস্তার মধ্যে পুরে মরদেহ টয়লেটে রেখে দেয়। এসব তথ্য জানিয়েছেন যশোরের পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান।
বৃহস্পতিবার সকালে যশোরের পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, বুধবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে তিনতলা বাড়িটির নীচতলায় চীনা নাগরিক চাং হিং সংকে টাকার জন্যে তার সহকারী নাজমুল ও নাজমুলের ভাইপো মুক্তাদির রড বা লোহার পাইপ জাতীয় কোনও বস্তু দিয়ে মাথায় আঘাত ও পিটিয়ে হত্যা করে। এরপর তার মোবাইলফোন সেট নিজেদের কাছে অফ করে রেখে দেয়।
তিনি জানান, নিহতের স্ত্রী ঢাকায় থাকেন। তিনি রাতে কয়েকদফা ফোন করেও তাকে না পেয়ে নাজমুলকে ফোন দেন। তখন নাজমুল জানায়, স্যারকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। সেইসময় তার স্ত্রী বিষয়টি থানায় অবহিত করতে বলেন।
পুলিশ জানায়, গভীররাতে নাজমুল কোতয়ালী থানায় এ বিষয়ে জানাতে গেলে পুলিশ তাকেই সন্দেহ করে আটক করে। পরে তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী মুক্তাদিরকে আটক করে। তারা পুলিশকে খুনের বিষয়টি জানায়। আটক দুজনের বাড়ি নেত্রকোণা সদরের চকপাড়া এলাকায়।
রাত থেকেই ওইবাড়িটি পুলিশের নজরদারিতে ছিল।
এদিকে, সকালে যশোরের পুলিশ সুপার, কোতয়ালী থানার ওসি, পিবিআই এবং সিআইডি কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল নিজেদের আয়ত্বে আনে।
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-পিবিআইয়ের এডিশনাল এসপি আব্দুল মতিন জানান, স্বামীর কোনও খোঁজ না পেয়ে সকালের ফ্লাইটে তার স্ত্রী টেমু লাই এন যশোরে চলে আসেন। তিনি পুলিশের সহায়তায় ঘটনাস্থলে পৌঁছান।
এদিকে, সাংবাদিকদের সামনে ব্রিফিংকালে আটক নাজমুল ও তার ভাইপো মুক্তাদিরকে সামনে আনা হলে নিহতের স্ত্রী উত্তেজিত হয়ে পড়েন। তিনি ওইসময় সবাইর সামনেই নাজমুলকে কিল ঘুসি ও লাথি মারতে থাকেন। এবং তাদের ভাষায় কান্নাজড়িত কণ্ঠে কী যেন বলতে থাকেন।
নিহতের ড্রাইভার মামুন জানান, মাত্র পাঁচশ’ টাকার অতিরিক্ত বিলের জন্যে তাকে খুন করেছে নাজমুলরা।
পুলিশ জানায়, নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্যে যশোর জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হবে।
বাড়ির মালিক মাসুদুর রহমান জানান, চাং হিং সং ৭ মাস তার বাড়িতে ভাড়া রয়েছেন। এরআগে তিনি অন্য জায়গায় ছিলেন।
কোতয়ালী তানার ওসি ইলিয়াস হোসেন জানান, তিনি ২০১৪ সাল থেকে বাংলাদেশে ব্যবসা করছেন।
তিনি সর্বশেষ বাংলাদেশে প্রবেশ করেন ২০১৬ সালের ২৭ নভেম্বর।তিনি আরো বলেন এ বিষয় আরো খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এছাড়া খুনের পিছনে অন্য কারো মদদ আদে কিনা সেটাও অনুসন্ধান করা হচ্ছে।
পাঠকের মতামত: