অমিতাভ ভট্টশালী, বিবিসি, কলকাতা:
ভারতের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে হিংসাত্মক বিক্ষোভ হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ আর মেঘালয়ে।
শুক্রবার পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ আর হাওড়াতে ব্যাপক বিক্ষোভের সময়ে বেশ কয়েকটি ট্রেন আর দুটি রেল স্টেশনে ভাঙচুর করা হয়েছে, জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে বাস।
মুর্শিদাবাদের বেলডাঙ্গা আর হাওড়ার উলুবেড়িয়া স্টেশন দুটিতে বিক্ষোভকারীরা ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়েছে নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে।
উলুবেড়িয়া স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা কয়েকটি ট্রেনেও পাথর ছোঁড়া হয়। তারপরে দুটি স্টেশনের সামনেই আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। বন্ধ হয়ে যায় ট্রেন লাইন। হাওড়া থেকে খড়্গপুর ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। বেশ কিছু দূরপাল্লার ট্রেন আটকিয়ে পড়েছে।
বেলডাঙ্গা স্টেশনেও একই ভাবে ভাঙচুর চলে শুক্রবার। ওই এলাকার কয়েকটি বাস আর গাড়িতেও ভাঙচুর চালানোর পরে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। বিক্ষোভ হয় সেখানকার থানার সামনেও।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় বিজেপির এক রাজ্যস্তরের নেতা আক্রান্ত হয়েছেন।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী এই বিক্ষোভগুলির খবর পাওয়ার পরেই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেছেন। বৈঠকের শেষে তিনি আবেদন জানিয়েছেন যাতে মানুষ গণতান্ত্রিক পথে, শান্তিপূর্ণভাবে তাদের প্রতিবাদ জানান।
আলিগড়ে ছাত্র বিক্ষোভ
উত্তরপ্রদেশের আলিগড়েও শুক্রবার ছাত্র আর শিক্ষকরা বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। পৃথক মিছিলের শেষে তারা দাবি সনদ পেশ করেছেন নাগরিকত্ব আইনের সংশোধনীগুলি প্রত্যাহার করার জন্য।
মুসলমান ছাড়া প্রতিবেশি তিন দেশের সংখ্যালঘু মানুষকে নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্য আনা বিলের বিরুদ্ধে দিল্লির জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরাও শুক্রবার পথে নেমেছিলেন।
তারা দাবি সনদ পেশ করার জন্য সংসদ ভবনের দিকে যাচ্ছিলেন। কিন্তু ক্যাম্পাসেই ওই বিক্ষোভ মিছিল আটকিয়ে দেয় পুলিশ। ছাত্রদের ওপরে পুলিশ লাঠি চার্জ করে এবং কাঁদানে গ্যাস ছোঁড়ে।
তথাগত রায়ের টুইট
মেঘালয়ের রাজধানী শিলংয়ে শুক্রবার পরিস্থিতি অশান্ত হয়ে ওঠে সেখানকার রাজ্যপাল তথাগত রায়ের একটি টুইট বার্তার পরে।
বিজেপির প্রাক্তন নেতা মি. রায় টুইট করে লেখেন, ”সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে দুটি বিষয় কখনই ভুলে যাওয়া উচিত নয়। এক, এই দেশ ভাগ হয়েছিল ধর্মের ভিত্তিতেই। দুই, গণতন্ত্রে বিভাজন থাকবেই। কেউ যদি সেটা না চান, তাহলে উত্তর কোরিয়ায় চলে যেতে পারেন।”
হাজার হাজার মানুষ আজ মিছিল করছিলেন নতুন নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে। তার মধ্যেই এই টুইট বার্তার পরে মিছিল ঘুরে যায় রাজভবনের ফটকের দিকে।
মেঘালয় রাজ্যে আগেই মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট আর এস এম এস পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।