নিউজ ডেস্ক :: দেশে পেঁয়াজের বাজার অস্থির করে তোলার পেছনে কাজ করেছে একটি সিন্ডিকেট ও কিছু অসাধু ব্যবসায়ী। তারা কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে রাতারাতি অস্বাভাবিকভাবে পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে সাধারণ মানুষকে ভোগান্তিতে ফেলেছে এবং সরকারকে বিব্রত করেছে। গত বছরও এই চক্রটি এমন কাজ করায় প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ৩০০ টাকায় উঠেছিল।
জানা গেছে, এসব সুযোগসন্ধানী সিন্ডিকেটের সদস্যকে খুঁজে বের করতে এবার যৌথভাবে মাঠে নামছে সরকারের চারটি গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা। চার গোয়েন্দা সংস্থা যৌথভাবে এ কাজ করবে। বাজার মনিটরিংয়ে এরা নিয়মিত কাজ করলেও এবার বাড়তি দায়িত্ব নিয়ে তারা মাঠে নামছে।
বাণিজ্য ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টিকারী সিন্ডিকেট সম্পর্কে ইতোমধ্যে তাদের হাতে বিভিন্ন তথ্য এসেছে। এ তথ্য যাচাই-বাছাই করতে তারা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এবং বাজারে আরও ব্যাপকভাবে খোঁজ নেবে। তাদের সংগ্রহ করা সেসব তথ্য সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলে পৌঁছাবে। সংশ্লিষ্ট মহল তথ্যের ভিত্তিতে পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে জানা যায়।
এদিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, শুধু পেঁয়াজ নয়, সব নিত্যপণ্যের মজুত পরিস্থিতি দেখতে বাজারে নামছে চার গোয়েন্দা সংস্থার সমন্বয়ে একাধিক টিম। এসব টিম পণ্যের মজুত, চাহিদা ও সরবরাহ পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজ নেবে। এ সময় তারা পণ্যের দাম ও মান যাচাই করবে। এজন্য ব্যবসায়ীদের কাছেও সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, যেকোনও প্রকার সিন্ডিকেট বা মনোপলির বিরুদ্ধে তাদের সুদৃঢ় অবস্থান। কোনোভাবেই দেশের ব্যবসায়ী সমাজ অসাধু এসব ব্যবসায়ীর মনোপলি কর্মকাণ্ডকে সমর্থন করে না, ভবিষ্যতেও করবে না বলে জানিয়েছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইসহ বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি।
জানা গেছে, পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টির পেছনে মজুতদারদের কারসাজিকে দায়ী করছেন সরকারের বিভিন্ন মহল। এ তথ্য যাচাই করতে অন্তত ২২৭ পেঁয়াজ আমদানিকারকের বিস্তারিত তথ্য-উপাত্ত নিয়ে মাঠে নেমেছে শুল্ক গোয়েন্দা।
শুল্ক গোয়েন্দাদের তথ্য অনুযায়ী দেশে উৎপাদিত ও আমদানি করা পেঁয়াজ মিলিয়ে কোনোভাবেই সংকট হওয়ার কথা নয়। তারপরও বাজার কেন লাগামহীন তা খতিয়ে দেখছে শুল্ক গোয়েন্দারা। বিষয়টি সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা নিতে কয়েকজন বড় আমদানিকারককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে বলে জানিয়েছে শুল্ক গোয়েন্দা সংস্থার একটি সূত্র। গত বছরও তারা ৪১ জন বড় আমদানিকারককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানায়, বাজার পরিস্থিতি মনিটরিং ও পণ্যের সরবরাহ ব্যবস্থা ঠিক রাখতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে নিয়মিত সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ, সংস্থা ও ব্যবসায়ীরাসহ সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধি নিয়ে সভা করা হয়।-তথ্যসূত্র : বাংলা ট্রিবিউন
পাঠকের মতামত: