ঢাকা,মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

নেশার অভ্যাস কেটে গেছে নিজের মা-বাবার খুনী ঐশী রহমানের

অনলাইন ডেস্ক ::  বাবা পুলিশ ইন্সপেক্টর মাহফুজুর রহমান ও মা স্বপ্না রহমানকে নিজ হাতে হত্যাকরা ঐশী রহমানের কথা মনে আছে? মাদক সেবন আর বন্ধুদের সঙ্গে যৌনতায় বাধা দেওয়ায় বাবা-মাকে হত্যা করেছিলো যে মেয়ে? সেই ঐশী এখন সুস্থ-স্বাভাবিক হয়ে উঠেছেন। দীর্ঘদিন ধরে অনুশোচনার মধ্য দিয়ে নিজেকে শুধরে নিয়েছেন তিনি।

২০১৩ সালের ১৬ আগস্ট রাজধানীর চামেলীবাগে নিজ বাসা থেকে পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের (রাজনৈতিক শাখা) পরিদর্শক মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমানের ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মা-বাবা খুন হওয়ার পর পালিয়ে যায় ঐশী।

হত্যার পর ঐশী বাবা-মায়ের লাশ সরাতে বাধ্য করেন বলে স্বীকারোক্তি দেয় হত্যার সময় উপস্থিত থাকা গৃহকর্মী সুমি। দীর্ঘ সাক্ষ্যগ্রহণপর্ব শেষে অবশেষে সুমিকে খালাস দেয় আদালত।

এদিকে খুনের আগে মাদকের ভয়াল গ্রাসে আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছিল পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক মাহফুজুর রহমান ও স্বপ্না রহমানের কন্যা ইংলিশ মিডিয়ামে পড়ুয়া ঐশী। ডিজে পার্টিসহ ইয়াবার মতো নেশা হয়ে উঠেছিল তার নিত্যসঙ্গী। ক্রমাগত নেশা তাকে মানসিক ভারসাম্যহীন করে তুলেছিল। নেশার ঘোরে নিজের মা-বাবাকে খুন করার পরদিন নিজ থেকে পুলিশে ধরা দেয় ঐশী।

২০১৫ সালে সেই মামলার রায়ে ফাঁসির আদেশ হয় তার। ২০১৭ সালে আপিল বিভাগ ঐশীর ফাঁসির দণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন দেয়। তবে জেলজীবন বদলে দিয়েছে সেই ঐশীকে। মামলার রায়ের পর থেকে কাশিমপুরের মহিলা কারাগারে রয়েছে ঐশী। কয়েদি ওয়ার্ডে খেয়ে, ঘুমিয়ে আর গল্পগুজব করে কিছু সময় কাটলেও অধিকাংশ সময় কাটে অনুশোচনায়।

কাশিমপুর মহিলা কারাগারের জেলার উম্মে সালমা বলেন, ‘ঐশী এখন সম্পূর্ণ স্বাভাবিক। তার নেশা কেটে গেছে শতভাগ। জেলে অন্য সাধারণ কয়েদিদের সঙ্গে স্বাভাবিক নিয়মে জীবন কাটছে তার।’

এদিকে কারাগারে থাকা ঐশীকে দেখতে যান কেবল তার চাচা। এ ছাড়া নিকট কিংবা দূরবর্তী স্বজন-পরিজনদের আর কেউ তার খোঁজ নেয় না। এক চাচা প্রতি মাসে নিয়ম করে কাশিমপুর মহিলা কারাগারে যান। তার জন্য জামা-কাপড়, খাবার ও পিসির (প্রিজনারস ক্যান্টিন) জন্য টাকা দিয়ে যান। দীর্ঘদিন চাচাকে না দেখলে অস্থির হয়ে পড়ে ঐশী। জেল কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেন চাচাকে আসতে বলার জন্য।

ওই ঘটনায় ২০১৩ সালের ১৭ আগস্ট নিহত মাহফুজুর রহমানের ছোট ভাই মো. মশিউর রহমান রুবেল পল্টন থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। একই বছরের ১৭ আগস্ট ঐশী রমনা থানায় আত্মসমর্পণ করে। এরপর ২৪ আগস্ট আদালতে খুনের দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেয় ঐশী।

পাঠকের মতামত: