ঢাকা,শনিবার, ৯ নভেম্বর ২০২৪

নির্বাচনী সহিংসতায় নিহত ১৭

যমুনাটিভি :: নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিচ্ছিন্ন সহিংসতায় শেষ পর্যন্ত ১৭ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। এসব সংঘর্ষের ঘটনা বেশিরভাগই ঘটেছে আওয়ামী লীগ আর বিএনপি কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে। তবে বিচ্ছিন্ন এসব ঘটনা সংশ্লিষ্ট এলাকার ভোটের মাঠে তেমন একটা প্রভাব ফেলেনি।

কুমিল্লার চান্দিনায় বেলাশ্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে সকালে ভোটের শুরুতে উত্তেজনা ছড়ায়। পুলিশের দাবি, বিএনপি নেতাকর্মীরা ব্যালট বাক্স ছিনতাইয়ের সময় গুলি চালায়। নিহত হয় মুজিবুর রহমান নামে একজন। আর নাঙ্গলকোটে বটতলা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ-বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে বাচ্চু মিয়া নামে একজন নিহতের কথা জানিয়েছে পুলিশ।

নরসিংদীর শিবপুরে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী এজেন্ট মিলন মিয়াকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার রাজগড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে আওয়ামী লীগ-বিএনপি সংঘর্ষে ইসরাইল নামের এক যুবক নিহত হন। পরিবারের অভিযোগ, সংঘর্ষের সময় পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয় তার।

রাজশাহী-৩ আসনে মোহনপুরের পাকুরিয়া উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ-বিএনপি সংঘর্ষে মিরাজ নামে একজনের মৃত্যু হয়। স্থানীয়রা জানায়, ভোট দেয়া নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে প্রথমে হাতাহাতি ও পরে সংঘর্ষে হয়। পুলিশ সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনাস্থল থেকে আহত মিরাজকে হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যান তিনি। তানোরেও সহিংসতায় একজনের মৃত্যু হয়েছে।

নাটোরের নলডাঙ্গার শমসকলসী গ্রামে বিএনপি সমর্থক ভাতিজার ছুরিকাঘাতে নিহত হয়েছেন আওয়ামী লীগ সমর্থক চাচা। স্থানীয়রা জানান, সকালে রতন ও তার স্ত্রী ভোট দিয়ে বাড়ি যান। চাচা হুসেন আলী ধানের শীষে ভোট দেয়ার খবর শুনে চড় মারেন ভাতিজাকে। উত্তেজিত হয়ে চাচাকে ছুরিকাঘাত করে রতন। হাসপাতালে নেয়ার পথে মৃত্যু হয় চাচার।

টাঙ্গাইলের গোপালপুরের সিমলা এলাকায় আবদুল আজিজ নামে একজন নিহত হয়েছে। তাকে নিজেদের কর্মী করে স্থানীয় বিএনপির দাবি, হত্যা করা হয়েছে আজিজকে। নিহতের শরীরে কোন আঘাতের চিহ্ন নেই বলে জানিয়েছে পুলিশ।

দিনাজপুর-২ এ বিরল উপজেলার শহরগ্রাম সরকারি বিদ্যালয় কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ-বিএনপির ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার মাঝে পড়ে মোহাম্মদ নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। তবে পুলিশের দাবি, সংঘর্ষের সময় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তার।

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে আওয়ামী লীগ-বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের মাঝে পড়ে নিহত হয়েছেন এক আনসার সদস্য। আর কক্সবাজারের পেকুয়ার রাজাখালী এবং বগুড়ার কাহালু উপজেলার বাঘইলে নির্বাচনী সহিংসতায় প্রাণ হারান দুই জন।

এদিকে ভোট শুরু হওয়ার আগে সকালে রাঙ্গামাটির কাউখালীতে, আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সমর্থকদের সংঘর্ষে নিহত হন ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক বাসের উদ্দিন।

চট্টগ্রামের বাঁশাখালীতেও সকালে বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীদের সাথে আওয়ামী লীগ কর্মী-সমর্থকদের সংঘর্ষে আহমেদ কবির নামে একজন নিহত হয়েছে। আর পটিয়ায় বিএনপি-আওয়ামী লীগ সংঘর্ষের মাঝে পড়ে বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের ছাত্র সংগঠন ইসলামিক ছাত্রসেনার ১৭ বছর বয়সী কর্মী আবু সাদেক নিহত হয়।

এর আগে পটিয়া ও লক্ষ্মীপুরেও নির্বাচনপূর্ব সহিসংতায় দুই জন নিহত হন। পুলিশ জানায়, শনিবার রাত ১০টার দিকে পটিয়ার কুসুমপুরায় বিএনপি-জামায়াতের কর্মীরা অতর্কিত হামলা চালায় দিন মোহাম্মদের ওপর। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তার। দিন মোহাম্মদ গোরানখাইন এলাকার যুবলীগ কর্মী। আর লক্ষ্মীপুরে বরালিয়ায় গতরাতে আওয়ামী লীগ-বিএনপি সংঘর্ষে একজন নিহত হয়।

পাঠকের মতামত: