ঢাকা,শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪

টেকনাফ সাংবাদিক ইউনিটির অভিষেক অনুষ্ঠানে পর্যটন ক্ষেত্রে বিশ্বের কাছে ‘টেকনাফ’ এখন পরিচিতি…সাংসদ বদি

জসিম মাহমুদ,টেকনাফ ::
022
কক্সবাজার আসন-৪ উখিয়া-টেকনাফের সাংসদ আবদুর রহমান বদি বলেছেন, জননেন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের আমলে বাংলাদেশে জঙ্গিদের স্থান হবে না। বর্তমান  সরকার ইতিমধ্যে দেশে বেশ কয়েকটি জঙ্গি আস্তানা নির্মুল করতে সক্ষম হয়েছে। জঙ্গি নিমূল করা গেলে ইয়াবা ব্যবসাও নিমুল করা যাবে! পাশাপাশি জঙ্গিবাদ ও ইয়াবা ব্যবসায়ীদের আইনে আওতায় আনা হবে।

গতকাল বুধবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে টেকনাফ সাংবাদিক ইউনিটির নবগঠিত কার্যকরী কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সাংসদ বদি বলেন, সাংবাদিকরা জাতির বিবেক। তাদের লেখনির মাধ্যমে সমাজের সকল প্রকার অন্যায়-অত্যাচার, সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেন। যা একটি রাষ্ট্র এবং রাষ্ট্রের জনগণের জন্য কল্যান কর। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে স্বাধীন সার্বভৌম্ব বাংলাদেশ পেয়েছি। বঙ্গবন্ধু একটি উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন। যাহা বাস্তবে রূপান্তরিত করছেন তার কন্যা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে । দেশ যখন উন্নয়নের পথ ধরে এগিয়ে যাচ্ছে একটি গোষ্ট্রি নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। ইয়াবা ব্যবসায়ী ও জঙ্গিবাদ মাথাচারা দিয়ে উঠেছে। যা রাষ্ট্রের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করছে। সাংবাদিকদের প্রতি আমাদের প্রত্যাশা থাকবে আপনাদের লেখনির মাধ্যমে মানুষকে এ বিষয়ে সচেতন করে তুলবেন। কোনো অপশক্তি যাতে অগ্রযাত্রাকে থামিয়ে দিতে না পারে এজন্য সকল দেশপ্রেমিক নাগরিককে এগিয়ে আসতে হবে। আমি সাংসদ নিবার্চিত হওয়ার পর থেকে শেখ হাসিনার নির্দেশে  টেকনাফ-উখিয়া উপজেলায় যত উন্নয়ন হয়েছে বিগত সরকারের আমলে কিছু হয়নি। সে সময় তারা দুর্নীতি ও লুটপাট করেছে। পর্যটন ক্ষেত্রে বিশ্বের কাছে টেকনাফ এখন পরিচিতি লাভ করছেন।

সাংসদ আব্দুর রহমান বদি বলেন, সংবাদ মাধ্যম সৃষ্টি করা সহজ, কিন্তু এর বিশ্বাসযোগ্যতা ধরে রাখা অনেক কঠিন কাজ। বিশ্বায়নের এই যুগে সাংবাদিকদের ভূমিকা অনেক। তাই লেখনির মাধ্যমে ইয়াবা ব্যবসায়ীদের মুখোশ উন্মোচন করার দাবি জানিয়ে ইয়াবা মুক্ত টেকনাফ গড়ে তোলার আশা ব্যক্ত করেন।

তিনি স্থানীয় আইন প্রযোগকারী সংস্থার উদ্দ্যেশে বলেন, প্রকৃতপক্ষে আইনশৃঙ্কলা বাহিনীর সদস্যরা ইয়াবা ব্যবসা বন্ধ করতে চাই না। কেন না ইয়াবার হাত, পা রয়েছে! তা না হলে কিভাবে নাফ-নদী, প্রজেক্ট, বেড়িবাধ ও বিভিন্ন ধরনের বাগানে শুধু পরিত্যক্ত ইয়াবা পাওয়া যায়। এ ইয়াবার মালিক কারা ? এ ব্যবসার সঙ্গে জড়িতদের কি কখনো খোজেঁ বের করেছে? যে সকল উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা টেকনাফে দায়িত্ব পালন করতে এসেছেন তাঁরা কি আদো ইয়াবা ব্যবসায় বন্ধ করার তো দুরের কথা কমাতেও পারেনি। কারন তাঁরা এখানে দায়িত্ব পালন না করে ঘুষ নিতে ব্যস্ত। এর ফলে ইয়াবা পাচার ও ব্যবসা দিন দিন বাড়ছে।

অনুষ্টানে টেকনাফের প্রয়াত সাংবাদিক সাইফুল ইসলাম চৌধুরীর পরিবারকে সাংবাদিক ইউনিটির পক্ষ থেকে ৫ হাজার টাকা অনুদান এবং সাংসদ বদির নিজস্ব তহবিল থেকে ৫ হাজার টাকা তুলে দেওয়া হয়। এরপর তিনি নিজের তহবিল থেকে আরও এক লাখ টাকার অনুদান ও ঘর নিমার্ণ করার জন্য ঢেউটিন দেওয়ার ঘোষনা দিয়েছেন।

বিশেষ অতিথি জাফর আহমদ বলেন, এ অনুষ্টানটি টেকনাফের ইতিহাসের সাক্ষী। কারণ এর আগে কখনও এ ধরনের অনুষ্টান হয়নি। এলাকার উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরার জন্য তিনি সাংবাদিকদের অনুরোধ জানান।

সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা সাংবাদিক হাফেজ মুহাম্মদ কাশেমের সভাপত্বিতে সভা পরিচালনা করে সভাপতি সাইফুল ইসলাম সাইফী।

সভায় বক্তব্য রাখেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) তুষার আহমেদ, পৌরসভার মেয়র হাজী মোহাম্মদ ইসলাম, টেকনাফ মডেল থানার ওসি (অপারেশন) শফিউল আজম, উপজেলা আওয়ামীলীগের সহসভাপতি জহির হোসেন এমএ, কমিউনিটি পুলিশিং এর সভাপতি নুরুল হুদা, হোয়াইক্যং ইউপির চেয়ারম্যান নুর আহমদ আনোয়ারী, হ্নীলার ইউপির চেয়ারম্যান এইচ কে আনোয়ার, সেন্ট মার্টিন ইউপি চেয়ারম্যান নুর আহমদ, ওলামালীগের সভাপতি মাও: ফরিদুল আলম, টেকনাফ প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, সংগঠনের উপদেষ্টা গিয়াস উদ্দিন ও জেড করিম জিয়া প্রমূখ।

সভায় উপস্থিত ছিলেন-উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান তাহেরা আক্তার মিলি, টেকনাফ পৌরসভা প্যানেল মেয়র ও সাংবাদিক আবদুল্লাহ মনির, প্যানেল মেয়র-৩ কোহিনুর আক্তার, কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম, প্রকৌশলী আবসার উদ্দিন, নিবার্চন কর্মকর্তা মো. নুরুল ইসলাম, একাডেমিক সুপারভাইজার নুরুল আবসার, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. আহসান উল্লাহ, মৎস্য কর্মকর্তা সুজাত কুমার চৌধুরী, পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা শ্রুতিপূর্ণ চাকমা, জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তা ক্যাছাই মং চাকমা, টেকনাফ প্রেসক্লাবের সাবেক সহসভাপতি আশেক উল্লাহ ফারুকী, সাংবাদিক নুরুল হক, আব্দুস সালাম,  মো. শাহীন, সাবরাং ইউপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শামসুল আলমসহ জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক, রাজনৈতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা। আয়োজিত অনুষ্ঠানে সংগঠনের পক্ষ থেকে অতিথিদের সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেন সংগঠনের সদস্যরা। পরে বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্টান শুরু হয়ে গভীররাতে শেষ হয়।

পাঠকের মতামত: