ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪

টেকনাফ-কক্সবাজার মেরিন ড্রাইভ সড়ক আগামী মাসে উদ্বোধন হচ্ছে?

নিজস্ব প্রতিবেদক, কক্সবাজার ::Marin-Drive-01

কক্সবাজার-টেকনাফ ৮০ কিলোমিটার মেরিন ড্রাইভ সড়কের নির্মাণ কাজ প্রায় শেষের পথে। সেতুমন্ত্রীর ঘোষণা মতে ২০১৭ সালের মার্চ মাসে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শুভ উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা। মার্চ মাসে শুভ উদ্বোধন বাস্তবায়ন করতে গেলে হাতে সময় আছে মাত্র মাস দেড়েক। অল্প সময়ে সেনাবাহিনী অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করতে সক্ষম হবে কিনা এ নিয়ে সন্দেহ পোষণ করছেন অনেকে। বহল কাংখিত স্বপ্নের মেরিন ড্রাইভ সড়ক কি আগামী মাসে উদ্বোধন হচ্ছে এমন প্রশ্ন টেকনাফ বাসীর।

 গেল বৎসর ককবাজারের কলাতলীতে বিচ্ছিন্ন থাকা একটি সড়কের পরিদর্শনে এসে সেতুমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলে ছিলেন আগামী বৎসরের মার্চ মাসে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শুভ উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা । ১১ ফেব্রুয়ারী টেকনাফ –ককসবাজার মেরিন ডাইভ সড়ক পরিদর্শনে দেখা যায় কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে, সেনা বাহিনী দিন রাত কাজ চালিয়ে মার্চ মাসে শুভ উদ্বোধনের প্রচেষ্ঠা অব্যাহত রেখেছে। সেনা বাহিনীর পক্ষ থেকে দায়িত্বে থাকা মেজর নাহিদ সাংবাকিদের জানান, সরকারের নির্দেশনায় মেরিন ড্রাইভ সড়কের নির্মাণ কাজ দ্রুত চলছে, মেরিন ড্রাইভ সড়কের কাজ শেষ হলে দেশি-বিদেশি পর্যটকের আগমন বাড়বে। এছাড়া অর্ধেকেরও কম সময় নিয়ে যাত্রীরা টেকনাফ যেতে সক্ষম হবেন। বদলে যাবে টেকনাফের সব কিছু।

এদিকে কক্সবাজারে মেরিন ড্রাইভের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলেছে একদিকে উত্তাল সাগরে বিশাল ঢেউ আছড়ে পড়ছে বালিয়াড়ির বুকে, অপরদিকে সবুজে ঘেরা সৌন্দর্য্যম-িত বিশাল পাহাড়। এ দু’য়ের বুক চিরে সোজা বয়ে গেছে বিশাল একটি সড়ক। এর নাম ‘মেরিন ড্রাইভ’ রোড। কক্সবাজার থেকে টেকনাফের বদর মোকাম পর্যন্ত নির্মিতব্য সড়কের কাজ ২০১৭ সালের দিকে সম্পন্ন হতে পারে। সরেজিমন পরিদর্শনে দেখা গেছে, ইনানী থেকে শীলখালী পর্যন্ত সাগরের কুল ঘেঁষে বয়ে গেছে দৃষ্টিনন্দন মেরিন ড্রাইভ সড়ক। পাহাড়, সমুদ্র ও প্রকৃতির উত্তাল হাওয়ায় মেরিন ড্রাইভ ভ্রমণ অন্যরকম এক অনুভূতি সৃষ্টি করে। বিশেষ করে বিকেলের দিকে। সূর্যাস্তের পূর্বে মেরিন ড্রাইভের সৌন্দর্য্য আরও আকর্ষণীয় হয়ে উঠে। ফলে যে কোনো ভ্রমণপিপাসু মানুষ মেরিন ড্রাইভ আসলে মুগ্ধ না হয়ে পারবেন না। দৃষ্টিনন্দন এ সড়কটির কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। ৩য় পর্যায় কাজের প্রকল্প পরিচালক মেজর নাহিদ বলেন, কক্সবাজার টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের কাজ ১৯৯৩-১৯৯৪ অর্থবছরে ফিডার রোড টাইপ এ হিসেবে শুরু হয়। ১৯৯৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে সেনাবাহিনীর ১৬ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্যাটালিয়ন প্রকল্পটির নির্মাণ কাজ শুরু করে। পরবর্তীতে কাজের সুবিধার্থে প্রকল্পটি ৩ টি পর্যায়ে ভাগ করা হয়। ২০০৮ সালের জুন মাসে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়ক প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ হয়। ২০০৮-২০০৯ অর্থবছরের ২য় পর্যায়ের কাজ শুরু হয়। কিন্তু পরবর্তীতে অর্থ ছাড়ে বিলম্ব হওয়ায় ২য় পর্যায়ের কাজও ধীরগতিতে হয়। তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীর উদ্যোগে প্রকল্পের অর্থ ছাড়সহ সার্বিক সহযোগিতায় এবং ১৬ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্যাটালিয়ন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কঠোর ও নিরলস পরিশ্রমে মেরিন ড্রাইভ প্রকল্পটির ২য় পর্যায় ইনানী থেকে শীলখালী পর্যন্ত কাজ ৬ মাসের পূর্বেই শেষ হয়। এ কর্মকর্তা আরও বলেন, ১৬ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্যাটালিয়ন ইতিমধ্যেই মেরিন ড্রাইভের ৩য় পর্যায়ের শীলখালী থেকে টেকনাফ (৪০-৮০ কি.মি.) প্রায় ৩২ কি.মি. সড়কের মাটি ভরাটের কাজ ৮০ শতাংশ সম্পন্ন করেছে। ২০১৬ সালে এপ্রিলের মধ্যে শতভাগ মাটির কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ৩য় পর্যায়ে সড়কে ৪২ টি কালভার্ট এবং ৩টি পিসি গার্ডার ব্রিজের নির্মাণ কাজ একই গতিতে এগিয়ে চলছে।শুধু রাস্তা নির্মাণ নয়, ১৬ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্যাটালিয়ন রাস্তাটির শোভাবর্ধন এবং পরিবেশগত দিক বিবেচনায় রেখে মেরিন ড্রাইভের ২য় পর্যায়ে প্রায় আড়াই লক্ষ ঝাউগাছ এবং কৃষ্ণচুড়াসহ প্রায় ৫০ হাজার অন্যান্য ফুলের গাছ রোপণ করা হয়। এছাড়া ১৬ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্যাটালিয়ন মেরিন ড্রাইভের ৩য় পর্যায়ের শোভাবর্ধন ও উপকূলীয় পরিবেশগত ভারসাম্য বজায় রাখার উদ্দেশ্যে আরও প্রায় ৩ লক্ষ ঝাউগাছ এবং সোনালু, ফলানু, কৃষ্ণচূড়া, মিনঝিরি, বকুলসহ ৫০ হাজার ফুলের চারা লাগানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে।

পাঠকের মতামত: