শাহীন মাহমুদ রাসেল :: বন উজাড় করার ফলে হাতি খাদ্যের জন্য নেমে আসছে লোকালয়ে। কথায় আছে ‘বনেরা বনে সুন্দর শিশুরা মাতৃক্রোড়ে’। যার যেখানে থাকার কথা সেখানেই সে নিরাপদ। বন উজাড় হলে হাতি থাকবে কোথায়, খাবেই বা কি? তাছাড়া বন উজাড় করেই তো রোহিঙ্গাদের আবাসন স্থল বানানো হয়েছে।
কক্সবাজারের টেকনাফের হ্নীলায় পাহাড় থেকে নেমে আসা বন্য হাতি বৈদ্যুতিক সংযোগ লাইনের স্পর্শে গিয়ে মারা গেছে। স্থানীয় লোকজন এই বন্য হাতিটি দেখার জন্য ভিড় জমিয়েছে।
স্থানীয়রা জানায়, ১২ জুন ভোররাত ৩টার দিকে উপজেলার হ্নীলা পশ্চিম পানখালীর খন্ডা কাটা এলাকায় একটি বন্য হাতি খাদ্যের সন্ধানে পাহাড় থেকে বসতির দিকে যাওয়ার পথেই খন্ডা কাটা গ্রামে মরিচ্যাঘোনা হতে টানা লাইনের তারে জড়িয়ে হাতির শুঁড় আটকে যায়।
তখন বৈদ্যুতিক শর্টে হাতি মারা যাওয়ার খবরে এলাকাবাসীর ঘুম ভেঙ্গে যায়। ভোর হতে শত শত নারী-পুরুষ এই পুরুষ প্রজাতির বিরাট হাতিটি দেখার জন্য ভিড় জমায়। এই ব্যাপারে টেকনাফ রেঞ্জ কর্মকর্তা সৈয়দ আশিক আহমদের নিকট জানতে চাইলে বলেন, বিষয়টির ব্যাপারে খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে।
পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, কক্সবাজারের উখিয়া টেকনাফ এলাকায় একসময় হাতির অবাধ বিচরণ ছিল। বাসস্থান ধ্বংস, বন উজাড়, রোহিঙ্গা জনসংখ্যার চাপ, সংরক্ষণের অভাব, খাদ্যের অভাব ও চলাচলের পথে বাধার কারণে এই এলাকার হাতির অবস্থা সঙ্গীন। এ ছাড়া দাঁত, চামড়া ও মাংসের জন্য প্রতিবছর গোপনে বন্য হাতি নিধন তো চলছেই।
বন্য প্রাণির জন্য দিন দিন অসহনীয় হয়ে উঠছে তাদের আবাসস্থল। প্রাকৃতিক দুর্যোগ তো আছেই মনুষ্যসৃষ্ট দুর্যোগের কারণেও বন্য প্রাণিরা এখন অসহায়। অব্যাহতভাবে বন ধ্বংসের কারণে খাদ্য ও বাসস্থান সঙ্কটে পড়ে বন্য প্রাণি লোকালয়ে এসে পড়ছে। এরফলে দেখা দিচ্ছে নানা বিপর্যয়। কিন্তু এই পৃথিবী কেবল মানুষের জন্য নয় অন্যান্য জীব-জন্তু-বৃক্ষ-নদী-সাগর সব মিলিয়েই মানুষের জীবন। মানুষের বেঁচে থাকার স্বার্থেই সবকিছু ঠিক রাখতে হবে। হাতি যদি বেঁচে থাকে, তাহলে বনও টিকে থাকবে। আর একটি বনের টিকে থাকা মানে হাজারো জীববৈচিত্র্যের জীবন বেঁচে যাওয়া, পরিবেশ-প্রকৃতির ভারসাম্য ঠিক থাকা। এ ব্যাপারে সবাইকে সচেতন ও দায়িত্বশীল হতে হবে। হাতির মৃত্যু রোধে নিতে হবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা এমনটাই মনে করছেন সচেতন মহল।
পাঠকের মতামত: